নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় সরিষাবাড়ী উপজেলার মহাদান ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) আব্দুল্লাহ আল মামুনের ঘরে আগুন দিয়েছেন কর্মী সমর্থকেরা। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের শিংগুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার ওই ইউপিতে ভোট।

জানা গেছে, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সংবাদে আব্দুল্লাহ আল মামুনের কর্মী সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হন। এ সময় তারা মিছিল বের করেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেক কর্মী-সমর্থক। আবার অনেকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঘোড়া প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে তাতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে বিক্ষুব্ধ সমর্থকেরা আব্দুল্লাহ আল মামুনের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ঘরে অগ্নি সংযোগ করেন।

আরও জানা গেছে, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ইউপি নির্বাচনের ভোট আজ। নির্বাচনে উপজেলার ৮টি ইউপির মধ্যে ৭টিতে আজ ভোট হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরে সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে সকল প্রকার নির্বাচনী সরঞ্জাম। সে সঙ্গে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও পৌঁছে গেছেন যার যার নির্বাচনী কেন্দ্রে।

এরইমধ্যে গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) আব্দুল্লাহ আল মামুন সরিষাবাড়ীর ডাকবাংলোয় এসে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী, সরিষাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান উদ্দিন পাঠান, ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান হেলাল, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ, পৌর মেয়র মনির উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলার অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও নৌকার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। এখন আর মহাদান ইউপিতে নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে কোনো প্রার্থী রইল না। এই ইউপিতে নৌকার প্রার্থী হলেন নৌকার আনিছুর রহমান জুয়েল।

একই সঙ্গে আব্দুল্লাহসহ যাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তাহাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। আব্দুল্লাহ আল মামুন তাঁর বক্তব্যে বলেন, জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে যেহেতু ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সেই হিসেবে সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। একই সঙ্গে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের প্রতি ক্ষমা চেয়ে সকলকে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে যমুনা সারকারখানার ভিআইপি হলে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান চারবারের বিজয়ী চেয়ারম্যান সামস্ উদ্দিন। এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক পান তিনি। উপজেলার ২ নম্বর পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে গত শুক্রবার তাকেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হল। তিনি গত শুক্রবার দুপুরে যমুনা সার কারখানার ভিআইপি হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

সামস উদ্দিন বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কা নৌকা। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দল আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার লক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর নির্দেশে নৌকা প্রতীক প্রাপ্ত প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দেন বলে জানান।