রাজশাহী অঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিল রক্ষায় সরকারের কাছে ১৩টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী জেলা ও মহানগর কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সুপারিশগুলো তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী নগরীর সীমান্ত অবকাশ সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা। নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি ১৩টি সুপারিশ তুলে ধরেন।

সুপারিশগুলো হলো—অনতিবিলম্বে সরকারি-বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পদ্মা ও এর শাখা নদীগুলো উদ্ধার করা, পদ্মা নদীর বালু উত্তোলনে নীতিমালা প্রণয়ন এবং নদীতীর থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ, রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধের ১৯টি স্লুইসগেট সচল রাখা, শহরের মধ্য দিয়ে একসময় প্রবাহিত নদীগুলো দখলমুক্ত করে পদ্মার সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন, শহরের পানি বারনই নদীতে পতিত হওয়ার সব বাধা দূর করা, ১৮৯৭ সালে খনন করা ‘নারদ’ নদ ও ‘বৈরাগী’ পুনরায় সংস্কার করে পদ্মার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা।

এ ছাড়া সুপারিশের মধ্যে আছে, পবার হরিপুর ও দামকুড়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চিনারকুপ নদীকে পুনরায় খনন করে আগের মতো পদ্মার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, শহরের তরল বর্জ্য পরিশোধন করে বারনই নদীতে প্রবেশের ব্যবস্থা করা ও ভুগরইলবিল ও মতিয়ার বিলে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করা, নদীর প্রতি বৈরী আচরণের জন্য যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, পদ্মার মূল প্রবাহে সারা বছর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা, ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রণীত আন্তর্জাতিক পানিবিষয়ক সনদে সই করা এবং পদ্মায় শুষ্ক ও ভরা মৌসুমে প্রতিদিন কী পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয়, তার হিসাব জনসমক্ষে তুলে ধরা।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমাদের পদ্মা নদীতে কোনো প্রকার বর্জ্য ফেলা যাবে না। শুধু পদ্মা নদী নয়, বাংলাদেশের কোনো নদীতে বর্জ্য ফেলা যাবে না। বর্জ্য অপসারণের যেসব আধুনিক পদ্ধতি আছে, সেগুলো অনুসরণ করতে হবে। আজকের শহরজুড়ে দেখি ডাস্টবিন তৈরির মহাপরিকল্পনা। ডাস্টবিন নিয়ে আমরা কী করব? বর্জ্যকে প্রকৃতির সঙ্গে বিলীন করে দেওয়ার যে পদ্ধতি, সেটি আমাদের অবলম্বন করতে হবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি লিয়াক আলী লিকু। মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু সভা পরিচালনা করেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—জেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নগর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী প্রমুখ।