কলারোয়ায় টালিশিল্পে ধস, ৪০ কারখানা বন্ধ

সাতক্ষীরা ও কলোরোয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২২, ০৭: ১৮
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১২: ৪৭

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ধস নেমেছে টালিশিল্পে। লোকসানের কারণে গত ছয় বছরে বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ৪০টি টালি কারখানা। বেকার হয়ে পড়েছেন এসব কারখানায় কাজ করা কয়েক হাজার শ্রমিক। কারখানা মালিকদের দাবি, টালি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।

সরেজমিন দেখা যায়, ইটালিপাড়া বলে খ্যাত সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ৫২টি টালি কারখানার মধ্যে ৪০টি বন্ধ হয়ে গেছে। যে ১২টি কারখানা রয়েছে, তাও চলছে ঢিমেতালে।

কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলারোয়ার পালপাড়া এলাকায় অর্ধশতাধিক কারখানায় তৈরি হতো উন্নতমানের টালি। আকর্ষণীয় এসব টালি কারখানায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল পাঁচ হাজারেরও বেশি শ্রমিকের। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা এখন বেকার। রপ্তানিযোগ্য এমন উন্নত দোআঁশ মাটির টালি দেশের আর কোথাও তৈরি হয় না।

এই মাটির টালিতে নোনা ধরে না বলে বিদেশের বাজারে এর চাহিদা ছিল প্রচুর। বছরে তাই ২৫ কোটি টাকারও বেশি টালি রপ্তানি হতো ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশে। তবে এখন সেসব অতীত। টালি এখন বিদেশে সীমিত আকারে রপ্তানি হচ্ছে। আর দেশের বাজারেও টালির চাহিদা কমে গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়লেও কমেছে রুপটালির দাম। এসব কারণে বিগত ৬ বছরে বন্ধ হয়েছে ৪০টি কারখানা।

এ বিষয়ে টালি কারখানার মালিক মোকসেদুল হক জানান, দেশি বাজারে টালির স্থান দখল করেছে অ্যাজবেস্টার টিন। এ ছাড়া স্কুল-কলেজ নির্মাণে দেশি রুপটালির বাজার দখল করেছে ভারতীয় টালি।

কলারোয়ার টালি কারখানা মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি গোষ্ঠবিহারী পাল জানান, রপ্তানিকারকেরা পাওনা শোধ টাকা করেন না। এসব মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে কারখানা মালিকদের কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বহু দেনদরবার করেও এসব টাকা পাওয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া স্বল্পসুদে ঋণের দাবি বহুদিন করা হলেও তা বাস্তবায়িত হয় না।

গোষ্ঠবিহারী আরও জানান, কাঠ-কয়লা-মাটিসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়লেও বাড়েনি রুপটালির দাম। এক যুগ আগে যে টালি বিক্রি হতো ৬ টাকায় এখনো তা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে পাঁচ টাকা থেকে ৬ টাকায়।

কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, ‘১৫-১৬ বছর আগে এখানকার টালি বিদেশে রপ্তানি করে সরকার রেমিট্যান্স পেত এবং এলাকার ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো। মালিকদের মধ্যে ঐক্য নেই। সরকারও এদিকে নজর দেন না। তা ছাড়া যাঁদের কাছে টালি বিক্রি করা হয়, তাদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এ নিয়ে বহুবার সালিস করেছি। তবে দেনাদাররা টাকা পরিশোধ করেন না।

সাতক্ষীরা বিসিকের (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প করপোরেশন) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইনব লেন, ‘আগে ৫২টি কারখানা ছিল, এখন মাত্র ১২ জন উদ্যোক্তা টাইলস বানাচ্ছেন। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বিসিক বদ্ধপরিকর। আমরা তাঁদের কথা শুনেছি, তাঁদের সংকট নিয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা প্রধান কার্যালয়ে পাঠাব। তাঁদের প্রশিক্ষণ, তাঁদের মার্কেটিং সুবিধা অথবা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত