স্বপনা রেজা
ফেব্রুয়ারি মাস, বাংলা ভাষার মাস। সারা বছর তেমনভাবে গুরুত্ব না দেওয়া হলেও ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা ভাষাকে নিয়ে বেশ আয়োজন চলে, দেওয়া হয় গুরুত্ব। চলে নানান আনুষ্ঠানিকতা। বাংলাপ্রীতির নমুনা দেখা যায় অজস্র। বাংলা ভাষাকে নিয়ে তৎপরতা দেখা যায়, গুরুত্ব দেওয়া হয় সারা বছরের তুলনায় এই মাসে বেশি। বলা যায়, ফেব্রুয়ারিকে বাংলা ভাষার মাস হিসেবে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিবেচনা করে। এমন মনে করার পেছনে শুধু যে তাদের মনই দায়ী, তা কিন্তু নয়। এর পেছনে তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার কিছু প্রচেষ্টা থাকে, ঘটনা থাকে। এসব প্রচেষ্টার সঙ্গে রয়েছে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা এবং তাদের ভিন্ন কিছু উদ্দেশ্য বা স্বার্থ। তাই ফেব্রুয়ারি মাস এলে বাংলার প্রতি প্রীতিবোধ বেড়ে যাওয়াটা দেখতে হয় এবং সেটা প্রকৃত অনুধাবন ছাড়াই। এভাবে যেন একুশে ফেব্রুয়ারি একটি উৎসবে পরিণত হয়ে পড়ে।
বিষয়টি বহু দিন ধরে এমনই দাঁড়িয়ে গেছে। আর সে কারণে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য তৎকালীন ছাত্রদের যে জীবন উৎসর্গ, আত্মত্যাগ তা উপলব্ধি এবং নতুন প্রজন্মকে অবহিত করার বিষয়গুলো কিন্তু তেমনভাবে দৃশ্যমান হয় না বা দৃশ্যমান করার চেষ্টা থাকে না। এ কথা বলা অনস্বীকার্য যে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি যতই উৎসবে বন্দী হচ্ছে, ততই যেন দিনটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অন্তরালে চলে যাচ্ছে। আর পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ও ২১ ফেব্রুয়ারির দিনটি পোশাকবন্দী হয়ে পড়ছে। হয়ে পড়ছে অনুষ্ঠাননির্ভর উৎসব।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ার পেছনের প্রেক্ষাপটও তাই অনেকেরই থাকছে অজানা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে। এটা তো স্বাভাবিক যে কোনো কিছুর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট না জানা গেলে, না জানা থাকলে তার প্রতি ব্যক্তির দায় ও শ্রদ্ধাবোধ জাগে না। তার ভেতর তেমন বোধ জন্মে না। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার জন্য ’৫২ সালের যে ঐতিহাসিক আন্দোলন এবং তার ঐতিহাসিক যে প্রেক্ষাপট ও ঘটনা, তা বারংবার উপস্থাপিত না হলে বাংলা ভাষা কী করে একটি রাষ্ট্রের মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেল, প্রতিষ্ঠিত হলো, তা অনুধাবন করা সহজ এবং পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে না। ভাষাকে আত্মস্থ করার দায়বদ্ধতাও সৃষ্টি হয় না। আবার এই ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কই-বা কী, যোগসূত্র কোথায়, বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব না হলে ভাষার প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ, তা কেবল দিবস ও পোশাকের মধ্যেই বন্দী থাকে, থাকবে এবং থাকছেও।
বাংলাদেশে সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা সম্ভব হলেও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে বাংলা ভাষা ব্যবহারের প্রতি অনাগ্রহতা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। সেটা বোঝা যায় বাংলা ভাষার ব্যবহারে। তারা বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষাকে অফিশিয়াল ল্যাংগুয়েজ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী থাকে। এর পেছনে দুটি কারণ থাকে—এক, আন্তর্জাতিক যোগাযোগের সুবিধার জন্য ইংরেজি ভাষাতেই সব কাজকর্ম সম্পন্ন করাকে উত্তম মনে করা; দুই, প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাটাস উঁচুতে নিতে তাদের ভেতরে একধরনের উন্নাসিকতা কাজ করে। ইংরেজিতে কথা বলা, যোগাযোগ করার মাঝে নিজেদের একধরনের স্মার্টনেস জাহির করতে তারা পছন্দ করে। এই দ্বিতীয় শ্রেণি মূলত ভাসমান ও সুবিধাবাদী। ভাসমান এই অর্থে যে, নিজের দেশকে পছন্দের তালিকায় একেবারে নিচুতে রেখে দেয় এবং সুযোগ পেলে অন্য দেশে ঠিকানা গড়ে। বলা বাহুল্য, এই শ্রেণি অন্য দেশে পাড়ি জমানোর স্বপ্নেই বিভোর থাকে জীবনব্যাপী। এই শ্রেণির ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান না বাঙালি, না ইংরেজ। এমন দ্বৈত আচরণের প্রভাব পড়ে এদের উত্তরসূরিদের ওপর। ফলে তারা সঠিক পথ ধরে, শিক্ষা নিয়ে নিজ ভাষার প্রতি যত্নবান হয়ে ওঠে না। ইংরেজিতে ভালো কমিউনিকেশন করতে পারে এমন অহংকারবোধ বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ তৈরি করে না, উপরন্তু নিরুৎসাহিত করে।
সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইয়ে যেতে হয়েছিল। অধিকাংশ মানুষ কথা বলছে, যোগাযোগ রক্ষা করছে নিজেদের তামিলনাড়ুর ভাষায়। হিন্দি বা ইংরেজি ভাষার প্রায়োরিটি বা প্রাধান্য নেই বললেই চলে। বিশেষ করে সাধারণ জনগণের মধ্যে। কারণ হিসেবে যেটা জানা গেল, নিজেদের আঞ্চলিক ভাষাতেই যোগাযোগ করতে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এমনকি পুরো চেন্নাই ঘুরে দেখা গেল, যেসব এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদান কিংবা কাজ করার বিষয় থাকে, সেই সব প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে বড় করে তামিল ভাষায় প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা লেখা আছে এবং ঠিক তার নিচে ছোট করে ইংলিশে নাম ও ঠিকানা লেখা আছে। কেউ ভেবে বসতে পারে, বিদেশিরা তাদের কাছে মুখ্য নয়। এমন ভাবলেও দোষের কিছু নেই। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিই তাদের কাছে মুখ্য। পুরো চেন্নাইয়ে সেটাই মনে হলো।
বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় সব সাইনবোর্ড লেখার নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে করা হলেও তা আদতে কতটা করা হয়েছে, কতটা অনুসরণ করা হয়েছে বা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখলে বাংলা ভাষার প্রতি অনাগ্রহতা ও উদাসীনতাই দৃশ্যমান ও প্রতীয়মান হবে বলে মনে করি। আর বিগত সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশ পালন করার বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখা হলেও পরবর্তী সময়ে কেন দেখা হয় না, হচ্ছে না এবং সরকারের নির্দেশ পালন না করার সাহসই বা পায় কী করে ইত্যাদি প্রশ্নও যেন ঘুরেফিরে ফেব্রুয়ারি মাসেই মাথায় আসে।
বাংলাদেশ কিন্তু বাংলা ভাষার সূত্র ধরেই একটা স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অনেকের বিশ্বাস এমনই। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের চেতনার নেপথ্যে বাংলা ভাষার অধিকার একটা বড় কারণ ছিল বলেও মনে করা হয়। অনেকে মনে করেন, ভাষা আন্দোলনই মুক্তিযুদ্ধের সূচনা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সার্বিকভাবে জাগ্রত করার জন্য বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা, ব্যবহার, প্রচলন অত্যন্ত জরুরি এবং সেটা বছরজুড়ে। একটা মাসে বাংলা ভাষার প্রতি যে দায় ও দায়িত্ব, তা কতটা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে বা করছে, তা ভেবে দেখা দরকার। অনেকের মতে, এসব লোকদেখানো, একধরনের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এমন চিন্তা-চেতনা ও সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলা ভাষার ব্যবহারে, প্রচলনে যথাযথ দায় ও দায়িত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। প্রতিটি দিনই বাংলা ভাষার চর্চা হতে হবে সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, শিক্ষা কারিকুলামে, পাঠ্যপুস্তকে শুদ্ধতার সঙ্গে বাংলা ভাষা শেখানো ও চর্চার উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলা ভাষা এ দেশের সব মানুষের যোগাযোগের প্রধান ও একমাত্র ভাষা। এই ভাষাকে অবহেলা করে কখনোই দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ফেব্রুয়ারি মাস, বাংলা ভাষার মাস। সারা বছর তেমনভাবে গুরুত্ব না দেওয়া হলেও ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা ভাষাকে নিয়ে বেশ আয়োজন চলে, দেওয়া হয় গুরুত্ব। চলে নানান আনুষ্ঠানিকতা। বাংলাপ্রীতির নমুনা দেখা যায় অজস্র। বাংলা ভাষাকে নিয়ে তৎপরতা দেখা যায়, গুরুত্ব দেওয়া হয় সারা বছরের তুলনায় এই মাসে বেশি। বলা যায়, ফেব্রুয়ারিকে বাংলা ভাষার মাস হিসেবে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিবেচনা করে। এমন মনে করার পেছনে শুধু যে তাদের মনই দায়ী, তা কিন্তু নয়। এর পেছনে তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার কিছু প্রচেষ্টা থাকে, ঘটনা থাকে। এসব প্রচেষ্টার সঙ্গে রয়েছে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা এবং তাদের ভিন্ন কিছু উদ্দেশ্য বা স্বার্থ। তাই ফেব্রুয়ারি মাস এলে বাংলার প্রতি প্রীতিবোধ বেড়ে যাওয়াটা দেখতে হয় এবং সেটা প্রকৃত অনুধাবন ছাড়াই। এভাবে যেন একুশে ফেব্রুয়ারি একটি উৎসবে পরিণত হয়ে পড়ে।
বিষয়টি বহু দিন ধরে এমনই দাঁড়িয়ে গেছে। আর সে কারণে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য তৎকালীন ছাত্রদের যে জীবন উৎসর্গ, আত্মত্যাগ তা উপলব্ধি এবং নতুন প্রজন্মকে অবহিত করার বিষয়গুলো কিন্তু তেমনভাবে দৃশ্যমান হয় না বা দৃশ্যমান করার চেষ্টা থাকে না। এ কথা বলা অনস্বীকার্য যে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি যতই উৎসবে বন্দী হচ্ছে, ততই যেন দিনটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অন্তরালে চলে যাচ্ছে। আর পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ও ২১ ফেব্রুয়ারির দিনটি পোশাকবন্দী হয়ে পড়ছে। হয়ে পড়ছে অনুষ্ঠাননির্ভর উৎসব।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ার পেছনের প্রেক্ষাপটও তাই অনেকেরই থাকছে অজানা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে। এটা তো স্বাভাবিক যে কোনো কিছুর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট না জানা গেলে, না জানা থাকলে তার প্রতি ব্যক্তির দায় ও শ্রদ্ধাবোধ জাগে না। তার ভেতর তেমন বোধ জন্মে না। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার জন্য ’৫২ সালের যে ঐতিহাসিক আন্দোলন এবং তার ঐতিহাসিক যে প্রেক্ষাপট ও ঘটনা, তা বারংবার উপস্থাপিত না হলে বাংলা ভাষা কী করে একটি রাষ্ট্রের মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেল, প্রতিষ্ঠিত হলো, তা অনুধাবন করা সহজ এবং পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে না। ভাষাকে আত্মস্থ করার দায়বদ্ধতাও সৃষ্টি হয় না। আবার এই ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কই-বা কী, যোগসূত্র কোথায়, বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব না হলে ভাষার প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ, তা কেবল দিবস ও পোশাকের মধ্যেই বন্দী থাকে, থাকবে এবং থাকছেও।
বাংলাদেশে সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা সম্ভব হলেও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে বাংলা ভাষা ব্যবহারের প্রতি অনাগ্রহতা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। সেটা বোঝা যায় বাংলা ভাষার ব্যবহারে। তারা বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষাকে অফিশিয়াল ল্যাংগুয়েজ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী থাকে। এর পেছনে দুটি কারণ থাকে—এক, আন্তর্জাতিক যোগাযোগের সুবিধার জন্য ইংরেজি ভাষাতেই সব কাজকর্ম সম্পন্ন করাকে উত্তম মনে করা; দুই, প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাটাস উঁচুতে নিতে তাদের ভেতরে একধরনের উন্নাসিকতা কাজ করে। ইংরেজিতে কথা বলা, যোগাযোগ করার মাঝে নিজেদের একধরনের স্মার্টনেস জাহির করতে তারা পছন্দ করে। এই দ্বিতীয় শ্রেণি মূলত ভাসমান ও সুবিধাবাদী। ভাসমান এই অর্থে যে, নিজের দেশকে পছন্দের তালিকায় একেবারে নিচুতে রেখে দেয় এবং সুযোগ পেলে অন্য দেশে ঠিকানা গড়ে। বলা বাহুল্য, এই শ্রেণি অন্য দেশে পাড়ি জমানোর স্বপ্নেই বিভোর থাকে জীবনব্যাপী। এই শ্রেণির ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান না বাঙালি, না ইংরেজ। এমন দ্বৈত আচরণের প্রভাব পড়ে এদের উত্তরসূরিদের ওপর। ফলে তারা সঠিক পথ ধরে, শিক্ষা নিয়ে নিজ ভাষার প্রতি যত্নবান হয়ে ওঠে না। ইংরেজিতে ভালো কমিউনিকেশন করতে পারে এমন অহংকারবোধ বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ তৈরি করে না, উপরন্তু নিরুৎসাহিত করে।
সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইয়ে যেতে হয়েছিল। অধিকাংশ মানুষ কথা বলছে, যোগাযোগ রক্ষা করছে নিজেদের তামিলনাড়ুর ভাষায়। হিন্দি বা ইংরেজি ভাষার প্রায়োরিটি বা প্রাধান্য নেই বললেই চলে। বিশেষ করে সাধারণ জনগণের মধ্যে। কারণ হিসেবে যেটা জানা গেল, নিজেদের আঞ্চলিক ভাষাতেই যোগাযোগ করতে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এমনকি পুরো চেন্নাই ঘুরে দেখা গেল, যেসব এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদান কিংবা কাজ করার বিষয় থাকে, সেই সব প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে বড় করে তামিল ভাষায় প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা লেখা আছে এবং ঠিক তার নিচে ছোট করে ইংলিশে নাম ও ঠিকানা লেখা আছে। কেউ ভেবে বসতে পারে, বিদেশিরা তাদের কাছে মুখ্য নয়। এমন ভাবলেও দোষের কিছু নেই। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিই তাদের কাছে মুখ্য। পুরো চেন্নাইয়ে সেটাই মনে হলো।
বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় সব সাইনবোর্ড লেখার নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে করা হলেও তা আদতে কতটা করা হয়েছে, কতটা অনুসরণ করা হয়েছে বা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখলে বাংলা ভাষার প্রতি অনাগ্রহতা ও উদাসীনতাই দৃশ্যমান ও প্রতীয়মান হবে বলে মনে করি। আর বিগত সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশ পালন করার বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখা হলেও পরবর্তী সময়ে কেন দেখা হয় না, হচ্ছে না এবং সরকারের নির্দেশ পালন না করার সাহসই বা পায় কী করে ইত্যাদি প্রশ্নও যেন ঘুরেফিরে ফেব্রুয়ারি মাসেই মাথায় আসে।
বাংলাদেশ কিন্তু বাংলা ভাষার সূত্র ধরেই একটা স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অনেকের বিশ্বাস এমনই। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের চেতনার নেপথ্যে বাংলা ভাষার অধিকার একটা বড় কারণ ছিল বলেও মনে করা হয়। অনেকে মনে করেন, ভাষা আন্দোলনই মুক্তিযুদ্ধের সূচনা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সার্বিকভাবে জাগ্রত করার জন্য বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা, ব্যবহার, প্রচলন অত্যন্ত জরুরি এবং সেটা বছরজুড়ে। একটা মাসে বাংলা ভাষার প্রতি যে দায় ও দায়িত্ব, তা কতটা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে বা করছে, তা ভেবে দেখা দরকার। অনেকের মতে, এসব লোকদেখানো, একধরনের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এমন চিন্তা-চেতনা ও সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলা ভাষার ব্যবহারে, প্রচলনে যথাযথ দায় ও দায়িত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। প্রতিটি দিনই বাংলা ভাষার চর্চা হতে হবে সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, শিক্ষা কারিকুলামে, পাঠ্যপুস্তকে শুদ্ধতার সঙ্গে বাংলা ভাষা শেখানো ও চর্চার উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলা ভাষা এ দেশের সব মানুষের যোগাযোগের প্রধান ও একমাত্র ভাষা। এই ভাষাকে অবহেলা করে কখনোই দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে