রাজশাহীতে আমে ফ্রুট ব্যাগিং জনপ্রিয় করতে যে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের একজন হাফিজুর রহমান খান। তিনি রাজশাহী এগ্রো ফুড প্রোডিউসার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক। এই সংগঠনটি বিষমুক্ত আম উৎপাদনে ফ্রুট ব্যাগিং জনপ্রিয় করে তুলেছে। ব্যাগিং করা আম এখন রপ্তানি হয় বিদেশেও।

হাফিজুর রহমান খান এবার একটু অন্যদিকে মনোযোগ দিয়েছেন। কাগজ দিয়ে তিনি রাজশাহীতে তৈরি করছেন থালা। একবার ব্যবহারযোগ্য এসব থালা পরিবেশবান্ধব। তবে বাজারে এখনো এই থালার তেমন চাহিদা তৈরি হয়নি। হাফিজুর এই থালা জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছেন।

হাফিজুর বলছেন, বাজারে এখন যেসব ওয়ান টাইম থালা ব্যবহার হচ্ছে, তা থার্মোকলের তৈরি। এগুলো অন্য সব প্লাস্টিকের মতোই পচে না। অনন্তকাল থেকে যায় প্রকৃতিতে। এগুলো পুনর্ব্যবহারও খুব খরচসাপেক্ষ। তাই কুড়ানিরাও এসব কুড়ায় না। এগুলো প্রকৃতি—বিশেষ করে মাটি, নদী ও সমুদ্রের খুব ক্ষতি করে। এর বিপরীতে তাঁর উৎপাদন করা কাগজের থালা একেবারেই পরিবেশবান্ধব। স্বল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো মাটিতে মিশে যায়। তাই পরিবেশের ক্ষতি হয় না।

হাফিজুর জানিয়েছেন, ভারতে কাগজের থালা খুব জনপ্রিয়। ভ্রমণে গিয়ে তিনি এটি দেখেন। তারপর দেশে ফিরে এই থালার উৎপাদন নিয়ে ভাবেন। তাই চীন ও ভারত থেকে আনেন মেশিন। আর কাগজ সংগ্রহ করছেন ঢাকা থেকে। মাসে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ পিস কাগজের থালা উৎপাদন করতে সক্ষম। কিন্তু চাহিদা না থাকায় এত বেশি থালা উৎপাদন করছেন না।

হাফিজুর আরও বলেন, প্রথমে কাগজকে কাটিং মেশিনের সাহায্যে থালার আকারে কাটতে হয়। তারপর লেমিনেটিং মেশিনের সাহায্যে ওপরের অংশে পলি প্রোফাইল (পিপি) বা অ্যালুমিনিয়ামের খুবই হালকা একটা আস্তরণ দিতে হয়। তারপর ড্রাই কাটিং করে এগুলো প্রোডাকশন ইউনিটে নেওয়া হয়। সেখানে একটি যন্ত্রের সাহায্যে কাটা কাগজগুলোকে চাপ দিয়ে থালার আকার দেওয়া হয়। এভাবেই শেষ হয় উৎপাদন প্রক্রিয়া।

প্রতিটি থালার উৎপাদন খরচ পড়ে ১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ২ টাকা ৪০ পয়সা। বিক্রি করেন ১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে। নগরীর সমবায় মার্কেটের পেছনে তহমিনা সুপার মার্কেটে নিজ দোকান থেকে এসব বিক্রি করে থাকেন হাফিজুর।