খায়রুল বাসার নির্ঝর
কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম সিজন থেকেই আপনি এ আয়োজনের সঙ্গে আছেন। ‘ও কি একবার আসিয়া’র পর এবার গাইলেন ‘নদীর কূল নাই’। গানটি বেছে নেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছিল কি?
জসীমউদ্দীনের ভাটিয়ালি গান প্রথম সিজন থেকেই আমাদের করার ইচ্ছা ছিল। এ গানটা নিয়ে প্রথম সিজনে অর্ণব দাদার সাথে আমার এক দুইবার বসা হয়েছে। তবে তখন ব্যাটে-বলে হয়ে ওঠেনি। তারপর দ্বিতীয় সিজনে গানটি নিয়ে আবারও বসা হয়। একটা ডিজাইন দাঁড় করানোর পর দাদা বললেন, ইদ্রিস ভাইকে (ক্লারিনেট শিল্পী ইদ্রিস রহমান) ডাকা হোক। ইদ্রিস ভাই আসার পর গানটি তৈরি হয়। অর্ণবদা অনেকটা সময় ধরে কাজ করে এ গানের একটা দারুণ রূপ দিয়েছেন।
‘নদীর কূল নাই’ গানটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে শুনেছেন শ্রোতারা। আপনার কণ্ঠেও গানটি সবার ভালো লেগেছে। শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
অনলাইনে আমার খুব কম থাকা হয়। আসলে বেশিরভাগ সময় আমি যে জায়গাগুলোতে থাকি, সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক খুব কম। বন্ধু-বান্ধব, কাছের মানুষ, শিক্ষকদের সাথে গানটি নিয়ে আমার তুলনামূলক আলোচনা হয়েছে। অনলাইনে অনেকের কমেন্ট দেখেছি। ‘নদীর কূল নাই’ গানটা সবাই সুন্দরভাবেই গ্রহণ করেছে। যারা দর্শক শ্রোতা, তারাই আমার কাছে ঈশ্বর, তারাই আমার ভগবান। তারা যে মন্তব্যই করুক, সেটা আমার কাছে ভালোবাসা হয়েই ফেরে। সত্যিকার অর্থে ইদ্রিস ভাইয়ের বাজনা থেকে শুরু করে সবার এত স্মুথিং একটা সাউন্ড, এটা আমারও খুব প্রিয় একটা কম্পোজিশন।
শ্রোতা বা পাঠক হিসেবে জসীমউদ্দীনের গান বা তাঁর সাহিত্যের সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত যোগাযোগটা কেমন?
জসীমউদ্দীনকে নিয়ে একটা বড় জগৎ আমার মনের মধ্যে তৈরি হয়ে আছে। জসীমউদ্দীনের ‘চলে মুসাফির’ বইটা পড়তে গিয়ে তাঁকে অন্যভাবে খুঁজে পাই। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সংস্কৃতি উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে জসীমউদ্দীনের যে অবদান, সেটা চলে মুসাফির বইটা পড়লে বোঝা যায়। তাঁর ডালিমকুমার নাটকটি আমি নির্দেশনাও দিয়েছি। আমার ইচ্ছা আছে, জসীমউদ্দীনের অন্য যে নাটকগুলো আছে, সেগুলোর নির্দেশনা দেওয়ার। তাছাড়া জসীমউদদীনের গান নিয়ে আলাদাভাবে নাড়াচাড়া তো হয়ই।
ঢাকার দর্শক-শ্রোতারা আপনাকে ব্যাপকভাবে চিনেছিল ২০১৮ সালে ফোকফেস্টে গাওয়ার পর। গানের দল স্বরব্যাঞ্জো নিয়ে পারফর্ম করেছিলেন আপনারা। এখন দলটির কী অবস্থা?
আমরা এখন একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি। তবে স্বরব্যাঞ্জোর গানবাজনা চলছে। সামনে আমাদের নতুন গান আসছে। আমরা এখন যেটা করছি, প্রচুর প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা করছি। কারণ সবাই আলাদা আলাদা জায়গায় থাকার কারণে আমাদের এক হতে একটু সমস্যা হচ্ছে। স্বরব্যাঞ্জো একটা পরিবারের মতো। আমরা একজায়গায় বসে গান বাজনা করি। আমরা বই পড়ি। লাইব্রেরি আছে আমাদের একটা। গানবাজনা চলছে। স্বরব্যাঞ্জো স্বরব্যাঞ্জোর মতোই আছে। আমরা আবার একসাথে হতে পারলে খুব ভালো লাগবে। অনেক অনুষ্ঠান করতে পারব। লাস্ট প্রোগ্রাম করেছিলাম গোপালগঞ্জে।
গান লেখা, গাওয়া, গান নিয়ে পড়াশোনা ছাড়াও আপনার কাজের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে শিশুরা। তাদের জন্য আপনি কাজ করছেন। এটা কেমন লাগে?
আমার পুরো ব্যাপারটাই বাচ্চাদের নিয়ে। স্বপ্ন দেখলে বাচ্চাদের নিয়েই স্বপ্ন দেখি। বিরহ হলে বাচ্চাদের নিয়ে ছড়াগান লিখি। আশপাশে বাচ্চাদের দেখলে তাদের ধরে কিছু একটা শেয়ার করার চেষ্টা করি। দিনে দিনে এতকিছুর মধ্য বাচ্চাদের দুনিয়াটা হারিয়ে গেছে। যেটা আমরা লক্ষ করছি না, বা আমাদের দৃষ্টিই নাই সেদিকে। শুধু গান না, আমাদের গ্রামগঞ্জের খেলা থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ে আমি কাজ করছি। কাজ করছি বললে তো বৃহৎ পরিসরে মনে হয়। আমার বাচ্চাদের একটা স্কুল আছে। সেখানে ছড়াগান লিখি। সুর করি। সহজপাঠের ছড়া সুর করি। বন্দে আলী মিয়ার ছড়া পুঁথির মতো সুর করে গাই।
বাচ্চারা তাদের নিজেদের যতটুকু জানার, ম্যাচুরিটির সাথে সাথে তারা সব জানতে পারবে। কিন্তু বাচ্চাকালে যেটা জানানোর প্রয়োজন, সেটা যদি না জানে, তাহলে বড় হলে সেটা আর তার ভালো লাগবে না। এটা তো বাচ্চাদের দোষ না। আমার এখনও স্বপ্ন, বাচ্চাদের আলাদা একটা দুনিয়া আবার তৈরি হবে নতুনভাবে। বাচ্চাদের আলাদা একটা দুনিয়া সাজানোই আমার লক্ষ, বলতে পারেন।
আমরা বাচ্চাদের চেনাই না যে, বৃষ্টির হলে মাটির যে গন্ধ বেরোয়, তাকে সোঁদা গন্ধ বলে। বাংলায় আঙুলের নাম বাচ্চারা জানে না। তারা চেনে না এ দেশের অনেক বিখ্যাত মানুষকে। তখন আমরা বলি, বাচ্চারা উচ্ছন্নে গেছে বা তারা কিছুই জানে না। তাহলে তার জন্য দায়ী কে? আমরাই। এই জিনিসটার দায়িত্ব কেউ নেয় না। সবাই কথা বলে। আমি দায়িত্ব নিয়েছি বলছি না, যতটুকু পারি চর্চার মধ্যে থাকি। বাচ্চাদের আবার মাঠে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া, রূপকথার গল্প শোনানো, ছড়াগান শোনানো। বাচ্চাদের দুনিয়া তৈরি হোক, এটাই চাই।
আপনার সংগীতজীবনে পরিবার, আপনার জন্মস্থান এ সবের ভূমিকা অনেক। সেটা নিয়ে কিছু বলুন?
আমার বাবা নিজে গাইতেন গুনগুন করে। ‘মালিরও বাগানে ফুল ফুটেছে’ থেকে শুরু করে ‘গ্রামের নাম রসুলপুর, চানমিয়া তার নাম’ এই ধরনের পুঁথির সুরগুলো উনি গাইতেন। তখন শুধু আমার বাবা নয়। আমার গ্রামের আরও অনেককে পাওয়া যেত, যাঁরা সব সময় কিছু না কিছু গুনগুন করে গাইতে থাকতেন। এগুলোর সঙ্গেই আমার বড় হয়ে ওঠা।
সেই পরিবেশটা কি এখন আছে?
থাকে না। বিষয়টা হচ্ছে, পরিবেশ চেঞ্জ হচ্ছে। সবকিছুর এই বদলের মধ্যে ওই জায়গাটা অক্ষুণ্ন রাখা সম্ভব হয় না। তবে হ্যাঁ, আমাদের পরিবর্তনটা খুব কমই হয়েছে। আমরা আমাদের মতোই আছি এখনও।
রাজশাহীতে আপনার জন্ম, বেড়ে ওঠা। সেখানকার সংস্কৃতি, মানুষের যাপন, তাদের গান—এসব নিয়ে আপনি কাজ করছেন…
আরও অনেক কিছু করার ছিল। আমি তো ছোটবেলা থেকে এসব গান শুনেই বড় হয়েছি। সংগ্রহের কথা তখন মাথায় আসেনি। আমি তো ভেবেছি, এটা কালকেও পাবো, রোজ রাস্তায় বেরোলেই এর গান শুনতে পাব। চোখের সামনে অনেক শিল্পীকে চলে যেতে দেখেছি। অনেক গান হারিয়ে গেছে। আমাদের কাছে রেকর্ডিংয়ের ডিভাইস এসেছে অনেক পরে। করার আরও অনেক কিছুই ছিল।
লোকগানের প্রসার নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
এখন মনে হয়, কিছুদিন পরে তো অক্সিজেনের ব্যাগ পিঠে করে ঘোরা লাগবে। এ রকম একটা সময় চলে এসেছে। লোকসংস্কৃতির অবস্থাও মনে হয় ওদিকে চলে যাচ্ছে। এগুলোকে আমাদের পিঠে বহন করতে হবে। কারণ লোকগান বলেন আর যা-ই বলেন, এগুলো তো আমাদের সবার মুখে মুখে থাকার কথা ছিল। অথচ জানেই না মানুষ। এছাক সরকার, পাগলা বাচ্চু এই মানুষদের গান এখন মানুষ শুনছে না। চর্চাটা তো হতে হবে। চর্চাটা ঠিকমতো হলে সবকিছু ঠিক হবে। তো আমাদের প্রচেষ্টা ছিল ওই রকমই, মানুষ যেন শিকড়ে ফিরে যেতে পারে। কোক স্টুডিও বাংলা যতটা পারছে, করছে। এ গানগুলো নিয়ে, পরবর্তী সময়ে আরও অনেক গান নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব আমরা। যতটা চর্চায় থাকা যায় ততটাই ভালো।
শান্তিনিকেতনে তো আপনার মাস্টার্স শেষ, এখন কী করছেন?
মাস্টার্স শেষ। এখন কয়েকটা থিসিস পেপার লিখছি। পিএইচডি করব। কোত্থেকে কীভাবে করব সেটা এখনও ঠিক হয়নি। আমি এখানে আপাতত একটা কোর্স করছি সেতারের ওপর। পড়াশোনা করছি, বসে আছি, গানবাজনা শিখতেছি—এভাবেই চলে যাচ্ছে।
কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম সিজন থেকেই আপনি এ আয়োজনের সঙ্গে আছেন। ‘ও কি একবার আসিয়া’র পর এবার গাইলেন ‘নদীর কূল নাই’। গানটি বেছে নেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছিল কি?
জসীমউদ্দীনের ভাটিয়ালি গান প্রথম সিজন থেকেই আমাদের করার ইচ্ছা ছিল। এ গানটা নিয়ে প্রথম সিজনে অর্ণব দাদার সাথে আমার এক দুইবার বসা হয়েছে। তবে তখন ব্যাটে-বলে হয়ে ওঠেনি। তারপর দ্বিতীয় সিজনে গানটি নিয়ে আবারও বসা হয়। একটা ডিজাইন দাঁড় করানোর পর দাদা বললেন, ইদ্রিস ভাইকে (ক্লারিনেট শিল্পী ইদ্রিস রহমান) ডাকা হোক। ইদ্রিস ভাই আসার পর গানটি তৈরি হয়। অর্ণবদা অনেকটা সময় ধরে কাজ করে এ গানের একটা দারুণ রূপ দিয়েছেন।
‘নদীর কূল নাই’ গানটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে শুনেছেন শ্রোতারা। আপনার কণ্ঠেও গানটি সবার ভালো লেগেছে। শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
অনলাইনে আমার খুব কম থাকা হয়। আসলে বেশিরভাগ সময় আমি যে জায়গাগুলোতে থাকি, সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক খুব কম। বন্ধু-বান্ধব, কাছের মানুষ, শিক্ষকদের সাথে গানটি নিয়ে আমার তুলনামূলক আলোচনা হয়েছে। অনলাইনে অনেকের কমেন্ট দেখেছি। ‘নদীর কূল নাই’ গানটা সবাই সুন্দরভাবেই গ্রহণ করেছে। যারা দর্শক শ্রোতা, তারাই আমার কাছে ঈশ্বর, তারাই আমার ভগবান। তারা যে মন্তব্যই করুক, সেটা আমার কাছে ভালোবাসা হয়েই ফেরে। সত্যিকার অর্থে ইদ্রিস ভাইয়ের বাজনা থেকে শুরু করে সবার এত স্মুথিং একটা সাউন্ড, এটা আমারও খুব প্রিয় একটা কম্পোজিশন।
শ্রোতা বা পাঠক হিসেবে জসীমউদ্দীনের গান বা তাঁর সাহিত্যের সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত যোগাযোগটা কেমন?
জসীমউদ্দীনকে নিয়ে একটা বড় জগৎ আমার মনের মধ্যে তৈরি হয়ে আছে। জসীমউদ্দীনের ‘চলে মুসাফির’ বইটা পড়তে গিয়ে তাঁকে অন্যভাবে খুঁজে পাই। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সংস্কৃতি উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে জসীমউদ্দীনের যে অবদান, সেটা চলে মুসাফির বইটা পড়লে বোঝা যায়। তাঁর ডালিমকুমার নাটকটি আমি নির্দেশনাও দিয়েছি। আমার ইচ্ছা আছে, জসীমউদ্দীনের অন্য যে নাটকগুলো আছে, সেগুলোর নির্দেশনা দেওয়ার। তাছাড়া জসীমউদদীনের গান নিয়ে আলাদাভাবে নাড়াচাড়া তো হয়ই।
ঢাকার দর্শক-শ্রোতারা আপনাকে ব্যাপকভাবে চিনেছিল ২০১৮ সালে ফোকফেস্টে গাওয়ার পর। গানের দল স্বরব্যাঞ্জো নিয়ে পারফর্ম করেছিলেন আপনারা। এখন দলটির কী অবস্থা?
আমরা এখন একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি। তবে স্বরব্যাঞ্জোর গানবাজনা চলছে। সামনে আমাদের নতুন গান আসছে। আমরা এখন যেটা করছি, প্রচুর প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা করছি। কারণ সবাই আলাদা আলাদা জায়গায় থাকার কারণে আমাদের এক হতে একটু সমস্যা হচ্ছে। স্বরব্যাঞ্জো একটা পরিবারের মতো। আমরা একজায়গায় বসে গান বাজনা করি। আমরা বই পড়ি। লাইব্রেরি আছে আমাদের একটা। গানবাজনা চলছে। স্বরব্যাঞ্জো স্বরব্যাঞ্জোর মতোই আছে। আমরা আবার একসাথে হতে পারলে খুব ভালো লাগবে। অনেক অনুষ্ঠান করতে পারব। লাস্ট প্রোগ্রাম করেছিলাম গোপালগঞ্জে।
গান লেখা, গাওয়া, গান নিয়ে পড়াশোনা ছাড়াও আপনার কাজের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে শিশুরা। তাদের জন্য আপনি কাজ করছেন। এটা কেমন লাগে?
আমার পুরো ব্যাপারটাই বাচ্চাদের নিয়ে। স্বপ্ন দেখলে বাচ্চাদের নিয়েই স্বপ্ন দেখি। বিরহ হলে বাচ্চাদের নিয়ে ছড়াগান লিখি। আশপাশে বাচ্চাদের দেখলে তাদের ধরে কিছু একটা শেয়ার করার চেষ্টা করি। দিনে দিনে এতকিছুর মধ্য বাচ্চাদের দুনিয়াটা হারিয়ে গেছে। যেটা আমরা লক্ষ করছি না, বা আমাদের দৃষ্টিই নাই সেদিকে। শুধু গান না, আমাদের গ্রামগঞ্জের খেলা থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ে আমি কাজ করছি। কাজ করছি বললে তো বৃহৎ পরিসরে মনে হয়। আমার বাচ্চাদের একটা স্কুল আছে। সেখানে ছড়াগান লিখি। সুর করি। সহজপাঠের ছড়া সুর করি। বন্দে আলী মিয়ার ছড়া পুঁথির মতো সুর করে গাই।
বাচ্চারা তাদের নিজেদের যতটুকু জানার, ম্যাচুরিটির সাথে সাথে তারা সব জানতে পারবে। কিন্তু বাচ্চাকালে যেটা জানানোর প্রয়োজন, সেটা যদি না জানে, তাহলে বড় হলে সেটা আর তার ভালো লাগবে না। এটা তো বাচ্চাদের দোষ না। আমার এখনও স্বপ্ন, বাচ্চাদের আলাদা একটা দুনিয়া আবার তৈরি হবে নতুনভাবে। বাচ্চাদের আলাদা একটা দুনিয়া সাজানোই আমার লক্ষ, বলতে পারেন।
আমরা বাচ্চাদের চেনাই না যে, বৃষ্টির হলে মাটির যে গন্ধ বেরোয়, তাকে সোঁদা গন্ধ বলে। বাংলায় আঙুলের নাম বাচ্চারা জানে না। তারা চেনে না এ দেশের অনেক বিখ্যাত মানুষকে। তখন আমরা বলি, বাচ্চারা উচ্ছন্নে গেছে বা তারা কিছুই জানে না। তাহলে তার জন্য দায়ী কে? আমরাই। এই জিনিসটার দায়িত্ব কেউ নেয় না। সবাই কথা বলে। আমি দায়িত্ব নিয়েছি বলছি না, যতটুকু পারি চর্চার মধ্যে থাকি। বাচ্চাদের আবার মাঠে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া, রূপকথার গল্প শোনানো, ছড়াগান শোনানো। বাচ্চাদের দুনিয়া তৈরি হোক, এটাই চাই।
আপনার সংগীতজীবনে পরিবার, আপনার জন্মস্থান এ সবের ভূমিকা অনেক। সেটা নিয়ে কিছু বলুন?
আমার বাবা নিজে গাইতেন গুনগুন করে। ‘মালিরও বাগানে ফুল ফুটেছে’ থেকে শুরু করে ‘গ্রামের নাম রসুলপুর, চানমিয়া তার নাম’ এই ধরনের পুঁথির সুরগুলো উনি গাইতেন। তখন শুধু আমার বাবা নয়। আমার গ্রামের আরও অনেককে পাওয়া যেত, যাঁরা সব সময় কিছু না কিছু গুনগুন করে গাইতে থাকতেন। এগুলোর সঙ্গেই আমার বড় হয়ে ওঠা।
সেই পরিবেশটা কি এখন আছে?
থাকে না। বিষয়টা হচ্ছে, পরিবেশ চেঞ্জ হচ্ছে। সবকিছুর এই বদলের মধ্যে ওই জায়গাটা অক্ষুণ্ন রাখা সম্ভব হয় না। তবে হ্যাঁ, আমাদের পরিবর্তনটা খুব কমই হয়েছে। আমরা আমাদের মতোই আছি এখনও।
রাজশাহীতে আপনার জন্ম, বেড়ে ওঠা। সেখানকার সংস্কৃতি, মানুষের যাপন, তাদের গান—এসব নিয়ে আপনি কাজ করছেন…
আরও অনেক কিছু করার ছিল। আমি তো ছোটবেলা থেকে এসব গান শুনেই বড় হয়েছি। সংগ্রহের কথা তখন মাথায় আসেনি। আমি তো ভেবেছি, এটা কালকেও পাবো, রোজ রাস্তায় বেরোলেই এর গান শুনতে পাব। চোখের সামনে অনেক শিল্পীকে চলে যেতে দেখেছি। অনেক গান হারিয়ে গেছে। আমাদের কাছে রেকর্ডিংয়ের ডিভাইস এসেছে অনেক পরে। করার আরও অনেক কিছুই ছিল।
লোকগানের প্রসার নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
এখন মনে হয়, কিছুদিন পরে তো অক্সিজেনের ব্যাগ পিঠে করে ঘোরা লাগবে। এ রকম একটা সময় চলে এসেছে। লোকসংস্কৃতির অবস্থাও মনে হয় ওদিকে চলে যাচ্ছে। এগুলোকে আমাদের পিঠে বহন করতে হবে। কারণ লোকগান বলেন আর যা-ই বলেন, এগুলো তো আমাদের সবার মুখে মুখে থাকার কথা ছিল। অথচ জানেই না মানুষ। এছাক সরকার, পাগলা বাচ্চু এই মানুষদের গান এখন মানুষ শুনছে না। চর্চাটা তো হতে হবে। চর্চাটা ঠিকমতো হলে সবকিছু ঠিক হবে। তো আমাদের প্রচেষ্টা ছিল ওই রকমই, মানুষ যেন শিকড়ে ফিরে যেতে পারে। কোক স্টুডিও বাংলা যতটা পারছে, করছে। এ গানগুলো নিয়ে, পরবর্তী সময়ে আরও অনেক গান নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব আমরা। যতটা চর্চায় থাকা যায় ততটাই ভালো।
শান্তিনিকেতনে তো আপনার মাস্টার্স শেষ, এখন কী করছেন?
মাস্টার্স শেষ। এখন কয়েকটা থিসিস পেপার লিখছি। পিএইচডি করব। কোত্থেকে কীভাবে করব সেটা এখনও ঠিক হয়নি। আমি এখানে আপাতত একটা কোর্স করছি সেতারের ওপর। পড়াশোনা করছি, বসে আছি, গানবাজনা শিখতেছি—এভাবেই চলে যাচ্ছে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে