২০ মিনিটের পথ যেতে ১ ঘণ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৬: ৩৪
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১২: ১৯

অফিসের কাজে আন্দরকিল্লা যেতে সকাল ১০টায় বাসা থেকে বের হন নুর নবী মজুমদার। এরপর দেওয়ানহাট মোড়ে এসে সকাল সোয়া ১০টায় তিনি অটোটেম্পোতে ওঠেন। মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটারের দূরত্ব আন্দরকিল্লায় যেতে তাঁর সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। সকাল সোয়া ১০টায় গাড়িতে ওঠার পর তিনি বেলা সাড়ে ১১টায় গিয়ে সেখানে পৌঁছান।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে দেওয়ানহাট এলাকার বাসিন্দা নুর নবী মজুমদার বলেন, ‘অফিসের কাজে আমাকে প্রায় সময় আন্দরকিল্লা যেতে হয়। দেওয়ানহাট থেকে টেম্পোতে জামালখান যাই। সেখানে থেকে হেঁটে আন্দরকিল্লায় যায়। অন্য সময় আন্দরকিল্লায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগলেও আজকে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে।’

নুর নবী মজুমদার আরও বলেন, ‘দেওয়ানহাট থেকে টেম্পোতে ওঠার পর টাইগারপাস মোড়ের আগে প্রথম দফায় যানজটে পড়ি। টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার মোড় পর্যন্ত যানবাহনের জট ছিল। এটুকু সড়ক পার হতেই সময় লেগে যায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট। এরপর কাজির দেউড়ি গিয়ে দ্বিতীয় দফায় যানজটের কবলে পড়ি। কাজির দেউড়ি থেকে জামালখান যেতেই সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট।’

শুধু এই সড়ক নয়, রমজান শুরু হওয়ার পর বন্দর নগরীর চট্টগ্রামের সব সড়কে যানজট বেড়েছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া যানজট দুপুর আর ইফতারের সময় গড়িয়ে গভীর রাত পর্যন্ত ঠেকছে। চৈত্রের এই তীব্র গরমের মধ্যে গণপরিবহনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

গতকাল সোমবার নগরীর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, লালখান বাজার কাজির দেউড়ি, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ মোড় ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মোড়ে দীর্ঘ যানজট। একেকটি মোড় পার হতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট যানজটে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। এসব মোড়ের একাধিক দোকানদারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানিয়েছেন, সকালে স্কুল আর অফিস আওয়ারে যানজট বেশি থাকে। এরপর দুপুরের দিকে যানজট কিছুটা কম থাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আবার সড়কে ব্যাপক যানজট থাকে। এরপর ৭টা থেকে সড়কে আবার যানবাহন বাড়তে থাকে এ সময় শপিংমল গুলোর সামনে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালখান বাজার থেকে আগ্রাবাদ হয়ে বিমানবন্দর সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের কারণে সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় ওই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্য জিইসি, জাকির হোসেন রোড়সহ অন্য সড়কগুলোতে ফুটপাত দখল করে দোকান বসানো, সড়কে দুই পাশে গাড়ির যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

গণপরিবহনের যাত্রীদের অভিযোগ, সড়কের দুই পাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, মূল সড়কে রিকশা চলাচল, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে শহরজুড়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সরু রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে দোকানপাট নির্মাণ বিপণি বিতান ও হাসপাতালের পার্কিং সংকটের মতো কারণকেই চট্টগ্রামের যানজটের কারণ হিসেবে দেখছে নগর ট্রাফিক পুলিশ।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ বলেন, ‘রমজানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে লোকজন একত্রে বাসা থেকে বের হয়। আবার নির্দিষ্ট সময়ে বাসায় প্রবেশ করে। যখন নির্দিষ্ট সময়ে গাড়িগুলো সড়কে বের হয়, তখন সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এ কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আমরা যথা সাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি যানজট সহনশীল রাখার জন্য।

শ্যামল কুমার নাথ আরও বলেন, ‘অধিকাংশ স্কুল, মার্কেটের সামনে পার্কিংয়ের কোনো জায়গা নেই। যে কারণে এসব সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে অনেক জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে। আগে যে রাস্তা দিয়ে ৩-৪টা গাড়ি অনায়াসে চলাচল করতে পারত, সেখানে এখন দুইটা গাড়ি পার হতেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের (ট্রাফিক) মূল কাজ হলো যানবাহন ম্যানেজ করা। আমরা তো পার্কিং প্লেস করে দিতে পারব না। রাস্তা চওড়া করে দিতে পারব না।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত