তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যু ২৪ হাজার ছুঁই ছুঁই

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯: ১২
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৪২

তুরস্ক ও সিরিয়ায় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের চার দিন পরে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৩ হাজার ৭১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্য তুরস্কে নিহত হয়েছে ২০ হাজার ২১৩ জন। অন্যদিকে সিরিয়ার নিহত হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ জন। উভয় দেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পের পর অন্তত ১০০ পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হয়েছে। ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে পরাঘাতের মাত্রা ছিল ৪ বা তার চেয়ে একটু বেশি।

এর আগে ১৯৯৯ সালে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

গতকাল শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আদিয়ামান প্রদেশ সফর করেছেন। সেখানে গিয়ে তিনি সরকারের উদ্ধারকাজের ধীরগতি স্বীকার করেছেন। এরদোয়ান বলেছেন, আমাদের আরও দক্ষতার সঙ্গে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা উচিত ছিল। যদিও এই মুহূর্তে আমাদের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্ধারকারী দল রয়েছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা যতটা দ্রুত কাজ আশা করেছিলাম, ততটা দ্রুত করা যায়নি।

আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার কাহরামানমারস শহর থেকে বলেছেন, সময় যত পার হচ্ছে উদ্ধারকারীরা জীবিত উদ্ধারের আশা তত ছেড়ে দিচ্ছেন। কারণ ভূমিকম্প ঘটার পর ৯৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এখন ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে জীবিত মানুষ উদ্ধারের আশা খুবই কম। তার পরও অনেক মানুষ তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবিত ফিরে পাওয়ার আশায় ধ্বংসস্তূপের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।

তার পরও ভূমিকম্পের ১১০ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে একজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেসুল সেরদার।

তুরস্কের আরেক শহর গাজিয়ানটেপ থেকে আল জাজিরার অপর সাংবাদিক স্টেফানি ডেকার বলেছেন, এখানে এক নারীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি তাঁর মা, চার ভাই, চাচাতো ভাই, ভাইদের ছেলেমেয়ে—সবাইকে হারিয়েছেন। তাঁর পরিবারের সব সদস্য ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।

তুরস্কের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কিলিকদারোগ্লু সরকারের উদ্ধার তৎপরতার ধীরগতি নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভূমিকম্পটি ভয়াবহ ছিল সন্দেহ নেই, তবে তার চেয়েও ভয়াবহ হচ্ছে সমন্বয়ের অভাব, পরিকল্পনার অভাব ও সক্ষমতার অভাব।’

এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লাখ লাখ মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে হাজার হাজার মানুষ। উদ্ধারকারীরা আটকে থাকা জীবিতদের কাছে পৌঁছাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিরিয়ার অবস্থা আরও ভয়াবহ। দেশটির ভূমিকম্পকবলিত এলাকাগুলো সরকার ও বিদ্রোহী—দুই পক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সহায়তা নিয়ে জাতিসংঘের ছয়টি ট্রাক তুরস্ক সীমান্ত পার হয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। এটি দেশটির উপদ্রুত অঞ্চলে পৌঁছানো প্রথম আন্তর্জাতিক সহায়তা।

গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, তিনি সিরিয়া পরিদর্শনে যাচ্ছেন। সেখানে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। নিরাপদ আশ্রয় ও পানীয় জলের অভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত