আবদুর রাজ্জাক
ঢাকা শহরে আমার ২৭ বছরের নিরবচ্ছিন্ন বাস। আমি দেখেছি, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় কিছু কিছু মানুষ আছে, যারা জীবনের পথ চলতে গিয়ে কোনো সুস্থ ধারায় নিজেদের সমন্বিত করতে পারেনি। এরাই একত্র হয়ে ছোট্ট গোষ্ঠী তৈরি করে, সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে এদের রং বদলায়।
এদের মূল কাজ হয়, এলাকায় কোনো নতুন বাড়ি তৈরির সময় নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আদায় করা। কোনো জায়গা বেচাকেনা বা কোনো কারণে জায়গার মালিকানা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে সেটা দখল, জবরদখল, ফুটপাতে দোকান বসানো থেকে শুরু করে এলাকার দোকান থেকে চাঁদাবাজি করা। এদের প্রত্যেকের একটি করে মোটরসাইকেল থাকে। এরা এলাকার কোনো এক জায়গায় একটি ঘর দখল করে, সেই ঘরের ঠিকানা ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক দলের, কোনো দলের অঙ্গসংগঠনের বা কোনো ক্লাবের নাম ব্যবহার করে। ওই সব স্থাপনার নাম ব্যবহার করে চলে বছরের পর বছর চাঁদাবাজি। দীর্ঘদিন এটা চলার পরে সাধারণ মানুষ ধরেই নিয়েছে ওদের কিছু দিতে হবে কোনো উন্নয়নকাজ করতে গেলে। যাদের কোনো গতি নেই, তারা উন্নয়নকাজ করতে গেলেও ওদের কাছে শরণাপন্ন হয়ে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সব ঠিকঠাক করে নেয়।
এখন আসি কিশোরদের ব্যাপারে। আমাদের সমাজে শিশু ধরা হয় আঠারো বছর পর্যন্ত। নাইন-টেনে পড়া শিক্ষার্থীর বয়স থাকে চৌদ্দ বা পনেরো। এই উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা তাদেরবড় ভাইদের, চাচাদের, পাড়াপড়শিদের দেখে বুঝতে পারে, ভালোই চলছে তাদের জীবন।
এলাকার লোকজন সমীহ করে তাদের। তারা নিজেরা এলাকায় নায়কের মতো চলে। দামি সিগারেট আর নতুন মডেলের মোটরসাইকেল চালায়। এসব দেখে স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা তাদের অনুসরণ করে। প্রথম প্রথম নিজেদের মধ্যে এবং তাদের সহপাঠীদের মধ্যে, চার-পাঁচজন মিলে একটি গ্রুপ তৈরি করে।
প্রথম দিকে ঘর থেকে টাকা এনে নিজেরা একটু ঘোরাফেরা করে, এলাকার পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে, অনেক সময় তাদের সিনিয়র বড় ভাইদের, পাড়ার স্থাপনার কাজকর্ম দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করে। তারপর দেখে, এই ‘পেশায়’ মান আছে, সম্মান আছে, সবাই ভয় পায়, মহল্লার সবাই সমীহ করে, সমাদর করে। এসব দেখে কিশোরেরা অনুপ্রাণিত হয়, নিজেদের মধ্যে এ রকম ছোট করে একটি গ্রুপ তৈরি করে। আস্তে আস্তে এই গ্রুপ থেকে তৈরি হয় একটি কিশোর গ্যাং।
পাড়া-মহল্লার বড় ভাইয়েরা অঙ্গসংগঠনের নামধারী সুধীজনেরা এসব কিশোর গ্যাং ব্যবহার করে তাদের সুবিধামতো। কিছুদিন তারা পরের ইচ্ছায় ব্যবহার হওয়ার পরে, যখন নিজেদের হাতে কিছু টাকাপয়সা আসে, মোটামুটি একটি মোটরসাইকেলের মালিক হয়ে যায়, তখন অঙ্গসংগঠনের বড় ভাইদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, নিজেরা শুরু করে তাদের আসল কাজ। গড়ে তোলে নিজেদের মধ্যে এলাকা নিয়ন্ত্রণী গ্যাং। এলাকায় নিরীহ মা-বোনদের চলাফেরা করার সময় শিস দেওয়া, ইভ টিজিং করা এদের কাজ। নিজেদের বাহাদুরি বজায় রাখার জন্য এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে হেনস্তা করে, তারিখ দিয়ে মারপিট করার প্রতিযোগিতা চলে। এদের অত্যাচারে বর্তমানে ভদ্রলোকেরা তাঁদের সন্তানকে রাস্তায় বের হতে দিতে ভয় পান, নিরীহ ছেলেপেলেদের হাতে মোটরসাইকেল, ঘড়ি, দামি মোবাইল দিতে ভয় পান। দীর্ঘদিন এ রকম চলার ফলে সারা ঢাকা শহরে এই কিশোর গ্যাংয়ের ছড়াছড়ি এখন। এদের মোটরসাইকেলের আওয়াজে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কারও ব্যক্তি পরিচয় বা রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে আইন প্রয়োগ করতে হবে প্রচলিত নিয়মে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ এদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয় বলে শোনা যায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যে ব্রত নিয়ে প্রতিনিধি হয়েছেন, তাঁরা যেন নিজ স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে, সমাজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এ ধরনের গ্যাং সমূলে উৎপাটনে অবদান রাখেন, সেটাই আমরা
দেখতে চাই।
ঢাকা শহরে আমার ২৭ বছরের নিরবচ্ছিন্ন বাস। আমি দেখেছি, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় কিছু কিছু মানুষ আছে, যারা জীবনের পথ চলতে গিয়ে কোনো সুস্থ ধারায় নিজেদের সমন্বিত করতে পারেনি। এরাই একত্র হয়ে ছোট্ট গোষ্ঠী তৈরি করে, সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে এদের রং বদলায়।
এদের মূল কাজ হয়, এলাকায় কোনো নতুন বাড়ি তৈরির সময় নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আদায় করা। কোনো জায়গা বেচাকেনা বা কোনো কারণে জায়গার মালিকানা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে সেটা দখল, জবরদখল, ফুটপাতে দোকান বসানো থেকে শুরু করে এলাকার দোকান থেকে চাঁদাবাজি করা। এদের প্রত্যেকের একটি করে মোটরসাইকেল থাকে। এরা এলাকার কোনো এক জায়গায় একটি ঘর দখল করে, সেই ঘরের ঠিকানা ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক দলের, কোনো দলের অঙ্গসংগঠনের বা কোনো ক্লাবের নাম ব্যবহার করে। ওই সব স্থাপনার নাম ব্যবহার করে চলে বছরের পর বছর চাঁদাবাজি। দীর্ঘদিন এটা চলার পরে সাধারণ মানুষ ধরেই নিয়েছে ওদের কিছু দিতে হবে কোনো উন্নয়নকাজ করতে গেলে। যাদের কোনো গতি নেই, তারা উন্নয়নকাজ করতে গেলেও ওদের কাছে শরণাপন্ন হয়ে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সব ঠিকঠাক করে নেয়।
এখন আসি কিশোরদের ব্যাপারে। আমাদের সমাজে শিশু ধরা হয় আঠারো বছর পর্যন্ত। নাইন-টেনে পড়া শিক্ষার্থীর বয়স থাকে চৌদ্দ বা পনেরো। এই উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা তাদেরবড় ভাইদের, চাচাদের, পাড়াপড়শিদের দেখে বুঝতে পারে, ভালোই চলছে তাদের জীবন।
এলাকার লোকজন সমীহ করে তাদের। তারা নিজেরা এলাকায় নায়কের মতো চলে। দামি সিগারেট আর নতুন মডেলের মোটরসাইকেল চালায়। এসব দেখে স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা তাদের অনুসরণ করে। প্রথম প্রথম নিজেদের মধ্যে এবং তাদের সহপাঠীদের মধ্যে, চার-পাঁচজন মিলে একটি গ্রুপ তৈরি করে।
প্রথম দিকে ঘর থেকে টাকা এনে নিজেরা একটু ঘোরাফেরা করে, এলাকার পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে, অনেক সময় তাদের সিনিয়র বড় ভাইদের, পাড়ার স্থাপনার কাজকর্ম দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করে। তারপর দেখে, এই ‘পেশায়’ মান আছে, সম্মান আছে, সবাই ভয় পায়, মহল্লার সবাই সমীহ করে, সমাদর করে। এসব দেখে কিশোরেরা অনুপ্রাণিত হয়, নিজেদের মধ্যে এ রকম ছোট করে একটি গ্রুপ তৈরি করে। আস্তে আস্তে এই গ্রুপ থেকে তৈরি হয় একটি কিশোর গ্যাং।
পাড়া-মহল্লার বড় ভাইয়েরা অঙ্গসংগঠনের নামধারী সুধীজনেরা এসব কিশোর গ্যাং ব্যবহার করে তাদের সুবিধামতো। কিছুদিন তারা পরের ইচ্ছায় ব্যবহার হওয়ার পরে, যখন নিজেদের হাতে কিছু টাকাপয়সা আসে, মোটামুটি একটি মোটরসাইকেলের মালিক হয়ে যায়, তখন অঙ্গসংগঠনের বড় ভাইদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, নিজেরা শুরু করে তাদের আসল কাজ। গড়ে তোলে নিজেদের মধ্যে এলাকা নিয়ন্ত্রণী গ্যাং। এলাকায় নিরীহ মা-বোনদের চলাফেরা করার সময় শিস দেওয়া, ইভ টিজিং করা এদের কাজ। নিজেদের বাহাদুরি বজায় রাখার জন্য এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে হেনস্তা করে, তারিখ দিয়ে মারপিট করার প্রতিযোগিতা চলে। এদের অত্যাচারে বর্তমানে ভদ্রলোকেরা তাঁদের সন্তানকে রাস্তায় বের হতে দিতে ভয় পান, নিরীহ ছেলেপেলেদের হাতে মোটরসাইকেল, ঘড়ি, দামি মোবাইল দিতে ভয় পান। দীর্ঘদিন এ রকম চলার ফলে সারা ঢাকা শহরে এই কিশোর গ্যাংয়ের ছড়াছড়ি এখন। এদের মোটরসাইকেলের আওয়াজে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কারও ব্যক্তি পরিচয় বা রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে আইন প্রয়োগ করতে হবে প্রচলিত নিয়মে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ এদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয় বলে শোনা যায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যে ব্রত নিয়ে প্রতিনিধি হয়েছেন, তাঁরা যেন নিজ স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে, সমাজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এ ধরনের গ্যাং সমূলে উৎপাটনে অবদান রাখেন, সেটাই আমরা
দেখতে চাই।
শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁদের জনাকয়েক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের দুঃশাসনকালে বিএনপিসহ অন্য নেতাদের যেভাবে হেলমেট পরিয়ে জেলখানা থেকে আদালতে হাজির করা হতো, এখন আওয়ামী লীগের নেতাদের একই কায়দায়
১০ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দিন যত যাচ্ছে, ততই নতুন নতুন কিছু প্রশ্নের উদ্ভব হচ্ছে। প্রশ্নগুলো যে গভীরতর রাজনৈতিক বিষয়সংশ্লিষ্ট, তা বলাই বাহুল্য। অনেক সময়ই প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে সংবাদ সম্মেলন বা সংবাদ ব্রিফিং করে বিষয়গুলো খোলাসার চেষ্টা করা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক ও জনমনে আস্থার সংকটের প্রেক্ষাপটে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
১০ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে অটোরিকশা বন্ধের প্রস্তাবে চালকদের রাস্তায় নেমে আসা এবং শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ অবরোধে সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়।
১ দিন আগে