অনলাইন ডেস্ক
দুর্গম পর্বতের গায়ে ঝুলন্ত মন্দিরটি দেখে প্রথম যে প্রশ্ন মনে উদয় হবে তা হলো, খাড়া পাথুরে ঢালে এটি আটকে আছে কীভাবে? যখন শুনবেন, এর বয়স দেড় হাজার বছরেরও বেশি তখন নিশ্চয় মাত্রা ছাড়াবে বিস্ময়।
চীনের সানজি প্রদেশের দাতোং শহরের কিলোমিটার ষাটেক দক্ষিণ-পূর্বে হ্যাংশান পর্বতে গায়ে তৈরি করা হয়েছে মন্দিরটি। প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে স্থাপত্যবিদ্যার দুর্লভ এক উদাহরণ বলতে পারেন একে। মাটির থেকে মোটামুটি ৭৫ মিটার বা ২৪৫ ফুটের বেশি উচ্চতায় মন্দিরটি। পর্বতের পাথুরে শরীরকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি কাঠের দৃষ্টিনন্দন সব কাজ চোখে পড়ে মন্দিরটিতে।
১৫০ বর্গমিটারের বেশি এলাকার মধ্যে ৪০ টরও বেশি হল ও প্যাভিলিয়নগুলি করিডর, সেতু এবং হাঁটার জন্য তৈরি পথ বা বোর্ডওয়াক দিয়ে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। মন্দিরের অভ্যন্তরে ৮০টিরও বেশি ব্রোঞ্জ, লোহার এবং মাটির মূর্তি রয়েছে। বিভিন্ন রাজবংশের সময়ের খোদাই কাজও চোখে পড়বে পাথরের গায়ে।
ধারণা করা হয় বন্যা, বৃষ্টি, তুষার এবং রোদ থেকে সুরক্ষা দিতে এমন জায়গায় বানানো হয় মন্দিরটি। প্রাকৃতিক একটি খাঁজের মধ্যে তৈরি করায় স্বাভাবিকভাবেই এটি বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কম। উপত্যকার ওপরে শুষ্ক পাহাড়ে অবস্থিত বলে স্যাঁতসেঁতে ভাবও দেখা দেয় না এর দেয়ালে।
হ্যাংগিং টেম্পল বা ঝুলন্ত মন্দির হ্যাংগিং মনাস্ট্রি বা হ্যাংশান হ্যাংগিং টেম্পল নামেও পরিচিত। কিংবদন্তি আছে লিয়াও রান নামের এক ভিক্ষু পঞ্চম শতাব্দীর শেষ দিকে মন্দিরটি তৈরি করেন। অবশ্য ১৯০০ সালের দিকে বড় ধরনের সংস্কার করা হয় এর।
পুরো মন্দিরটির কাঠামো কাঠের। পাহাড়ে গায়ে ছিদ্র করে ৭-১০ ফুট গভীর পর্যন্ত গর্তগুলিতে কড়িকাঠ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর সেখানে প্যাভিলিয়নগুলি তৈরি করা হয়। এখন মন্দিরটিকে ধরে রাখা অনেক স্তম্ভ চোখে পড়লেও মন্দিরটি কিন্তু এগুলোর সাহায্য ছাড়াই নির্মিত হয়েছিল। পরে মন্দিরটির সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য এই কাঠের স্তম্ভগুলো যুক্ত করা হয়েছিল।
সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো, এই ঐতিহাসিক স্থানটি শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয় বরং তিনটি ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র এক জায়গা। বৌদ্ধ ধর্ম, তাওবাদ এবং কনফুসীয়বাদ প্রাচীন এই মন্দির বা গুম্ফার মধ্যে চর্চা করা হতো। সানজিয়াও বা থ্রি রিলিজিয়নস হলে বুদ্ধের মূর্তির পাশাপাশি তাওবাদ এবং কনফুসীয় মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা লাওৎসে এবং কনফুসিয়াসের মূর্তি আছে।
ঝুলন্ত মন্দিরটির পেছনে পর্বতের কুইপিং চূড়া এবং উল্টো পাশে তিয়ানফেং চূড়া। এই দুটি চূড়া ঝোড়ো বাতাসের কবল থেকেও মন্দিরটিকে সুরক্ষা দেয়।
তুলনামূলকভাবে দুর্গম এলাকায় অবস্থানের কারণে মন্দিরটি পর্যটকদের বিশ্রামের জায়গা হিসেবেও কাজ করত। স্বাভাবিকভাবেই লোকেরা ভিন্ন ধর্মের মানুষ উপাসনা করে এমন স্থানে থামতে অনিচ্ছুক ছিল। ঝুলন্ত মন্দিরটি চীনের তিনটি ধর্মের কথা মাথায় রেখে গড়ে তোলার একটি বড় কারণ, বেশি পর্যটক বা দর্শনার্থী যেন সেখানে থাকতে পারেন।
ঝুলন্ত মন্দির দুটি প্যাভিলিয়ন নিয়ে তৈরি। দক্ষিণ প্যাভিলিয়নটি তিনতলা, ৮ মিটার বা ২৬ ফুট লম্বা এবং ৪ মিটার বা ১৩ ফুট চওড়া। এই প্যাভিলিয়নে মন্দিরের সবচেয়ে বড় হল এবং সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য রয়েছে।
উত্তর প্যাভিলিয়নটিও তিনতলা, প্রস্থে ৪ মিটার, কিন্তু দৈর্ঘ্য ৭ মিটার বা ২৩ ফুট। এই প্যাভিলিয়নের অভ্যন্তরে তৃতীয় তলায় একটি হলেই বুদ্ধের মূর্তির পাশাপাশি লাওৎসে এবং কনফুসিয়াসের মূর্তি আছে। লং ব্রিজ বা লম্বা সেতুটি দুটি প্যাভিলিয়নকে সংযুক্ত করে। এটি ১০ মিটার বা ৩২ ফুট লম্বা।
ধর্মীয় স্থান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি ঝুলন্ত মন্দিরটিকে অসাধারণ স্থাপত্যবিদ্যার এক অনন্য নজির বলা চলে। জায়গাটির সৌন্দর্যও নজর কাড়া। সব কিছু মিলিয়ে এটি পর্যটকদের কাছে বড় এক আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
ঝুলন্ত মন্দিরে বছরের যে কোনো সময়ই যেতে পারেন। তবে দাতোং এলাকার আবহাওয়া বিবেচনায় আনলে এপ্রিল থেকে অক্টোবর ভ্রমণের সেরা সময়। এখানে অবশ্য গ্রীষ্ম স্বল্পস্থায়ী। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত থাকে হাড় কাঁপানো শীত। আর পার্বত্য এলাকা হওয়ায় দিন ও রাতের তাপমাত্রার বড় পার্থক্য থাকে। তাই এমনকি গ্রীষ্মে ভ্রমণে এলেও সঙ্গে গরম পোশাক সঙ্গে রাখাটা জরুরি। তবে সেখানে একবার পৌঁছে গেলে যে পর্বতের গায়ে আটকে বা ঝুলে থাকা মন্দিরটি দেখে মুগ্ধ হবেন তাতে সন্দেহ নেই।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, সিজিটিএন, চায়না হাইলাইটস, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট
দুর্গম পর্বতের গায়ে ঝুলন্ত মন্দিরটি দেখে প্রথম যে প্রশ্ন মনে উদয় হবে তা হলো, খাড়া পাথুরে ঢালে এটি আটকে আছে কীভাবে? যখন শুনবেন, এর বয়স দেড় হাজার বছরেরও বেশি তখন নিশ্চয় মাত্রা ছাড়াবে বিস্ময়।
চীনের সানজি প্রদেশের দাতোং শহরের কিলোমিটার ষাটেক দক্ষিণ-পূর্বে হ্যাংশান পর্বতে গায়ে তৈরি করা হয়েছে মন্দিরটি। প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে স্থাপত্যবিদ্যার দুর্লভ এক উদাহরণ বলতে পারেন একে। মাটির থেকে মোটামুটি ৭৫ মিটার বা ২৪৫ ফুটের বেশি উচ্চতায় মন্দিরটি। পর্বতের পাথুরে শরীরকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি কাঠের দৃষ্টিনন্দন সব কাজ চোখে পড়ে মন্দিরটিতে।
১৫০ বর্গমিটারের বেশি এলাকার মধ্যে ৪০ টরও বেশি হল ও প্যাভিলিয়নগুলি করিডর, সেতু এবং হাঁটার জন্য তৈরি পথ বা বোর্ডওয়াক দিয়ে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। মন্দিরের অভ্যন্তরে ৮০টিরও বেশি ব্রোঞ্জ, লোহার এবং মাটির মূর্তি রয়েছে। বিভিন্ন রাজবংশের সময়ের খোদাই কাজও চোখে পড়বে পাথরের গায়ে।
ধারণা করা হয় বন্যা, বৃষ্টি, তুষার এবং রোদ থেকে সুরক্ষা দিতে এমন জায়গায় বানানো হয় মন্দিরটি। প্রাকৃতিক একটি খাঁজের মধ্যে তৈরি করায় স্বাভাবিকভাবেই এটি বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কম। উপত্যকার ওপরে শুষ্ক পাহাড়ে অবস্থিত বলে স্যাঁতসেঁতে ভাবও দেখা দেয় না এর দেয়ালে।
হ্যাংগিং টেম্পল বা ঝুলন্ত মন্দির হ্যাংগিং মনাস্ট্রি বা হ্যাংশান হ্যাংগিং টেম্পল নামেও পরিচিত। কিংবদন্তি আছে লিয়াও রান নামের এক ভিক্ষু পঞ্চম শতাব্দীর শেষ দিকে মন্দিরটি তৈরি করেন। অবশ্য ১৯০০ সালের দিকে বড় ধরনের সংস্কার করা হয় এর।
পুরো মন্দিরটির কাঠামো কাঠের। পাহাড়ে গায়ে ছিদ্র করে ৭-১০ ফুট গভীর পর্যন্ত গর্তগুলিতে কড়িকাঠ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর সেখানে প্যাভিলিয়নগুলি তৈরি করা হয়। এখন মন্দিরটিকে ধরে রাখা অনেক স্তম্ভ চোখে পড়লেও মন্দিরটি কিন্তু এগুলোর সাহায্য ছাড়াই নির্মিত হয়েছিল। পরে মন্দিরটির সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য এই কাঠের স্তম্ভগুলো যুক্ত করা হয়েছিল।
সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো, এই ঐতিহাসিক স্থানটি শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয় বরং তিনটি ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র এক জায়গা। বৌদ্ধ ধর্ম, তাওবাদ এবং কনফুসীয়বাদ প্রাচীন এই মন্দির বা গুম্ফার মধ্যে চর্চা করা হতো। সানজিয়াও বা থ্রি রিলিজিয়নস হলে বুদ্ধের মূর্তির পাশাপাশি তাওবাদ এবং কনফুসীয় মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা লাওৎসে এবং কনফুসিয়াসের মূর্তি আছে।
ঝুলন্ত মন্দিরটির পেছনে পর্বতের কুইপিং চূড়া এবং উল্টো পাশে তিয়ানফেং চূড়া। এই দুটি চূড়া ঝোড়ো বাতাসের কবল থেকেও মন্দিরটিকে সুরক্ষা দেয়।
তুলনামূলকভাবে দুর্গম এলাকায় অবস্থানের কারণে মন্দিরটি পর্যটকদের বিশ্রামের জায়গা হিসেবেও কাজ করত। স্বাভাবিকভাবেই লোকেরা ভিন্ন ধর্মের মানুষ উপাসনা করে এমন স্থানে থামতে অনিচ্ছুক ছিল। ঝুলন্ত মন্দিরটি চীনের তিনটি ধর্মের কথা মাথায় রেখে গড়ে তোলার একটি বড় কারণ, বেশি পর্যটক বা দর্শনার্থী যেন সেখানে থাকতে পারেন।
ঝুলন্ত মন্দির দুটি প্যাভিলিয়ন নিয়ে তৈরি। দক্ষিণ প্যাভিলিয়নটি তিনতলা, ৮ মিটার বা ২৬ ফুট লম্বা এবং ৪ মিটার বা ১৩ ফুট চওড়া। এই প্যাভিলিয়নে মন্দিরের সবচেয়ে বড় হল এবং সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য রয়েছে।
উত্তর প্যাভিলিয়নটিও তিনতলা, প্রস্থে ৪ মিটার, কিন্তু দৈর্ঘ্য ৭ মিটার বা ২৩ ফুট। এই প্যাভিলিয়নের অভ্যন্তরে তৃতীয় তলায় একটি হলেই বুদ্ধের মূর্তির পাশাপাশি লাওৎসে এবং কনফুসিয়াসের মূর্তি আছে। লং ব্রিজ বা লম্বা সেতুটি দুটি প্যাভিলিয়নকে সংযুক্ত করে। এটি ১০ মিটার বা ৩২ ফুট লম্বা।
ধর্মীয় স্থান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি ঝুলন্ত মন্দিরটিকে অসাধারণ স্থাপত্যবিদ্যার এক অনন্য নজির বলা চলে। জায়গাটির সৌন্দর্যও নজর কাড়া। সব কিছু মিলিয়ে এটি পর্যটকদের কাছে বড় এক আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
ঝুলন্ত মন্দিরে বছরের যে কোনো সময়ই যেতে পারেন। তবে দাতোং এলাকার আবহাওয়া বিবেচনায় আনলে এপ্রিল থেকে অক্টোবর ভ্রমণের সেরা সময়। এখানে অবশ্য গ্রীষ্ম স্বল্পস্থায়ী। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত থাকে হাড় কাঁপানো শীত। আর পার্বত্য এলাকা হওয়ায় দিন ও রাতের তাপমাত্রার বড় পার্থক্য থাকে। তাই এমনকি গ্রীষ্মে ভ্রমণে এলেও সঙ্গে গরম পোশাক সঙ্গে রাখাটা জরুরি। তবে সেখানে একবার পৌঁছে গেলে যে পর্বতের গায়ে আটকে বা ঝুলে থাকা মন্দিরটি দেখে মুগ্ধ হবেন তাতে সন্দেহ নেই।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, সিজিটিএন, চায়না হাইলাইটস, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
১২ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
১৩ ঘণ্টা আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
২ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৩ দিন আগে