যশোরে মহাসড়ক সংস্কারসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করতে এসে তোপের মুখে পড়েন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া।
পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সওজের অন্য কর্মকর্তাদের সহায়তায় তিনি স্থান ত্যাগ করেন। আজ বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকায় সওজ কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
যশোরের তিনটি মহাসড়ক—যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-খুলনা—বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এসব সড়কের কোথাও বড় গর্ত, কোথাও পিচ উঠে গেছে, আবার কোথাও পিচ জড়ো হয়ে উঁচু ঢিবি তৈরি হয়েছে। ফলে যাত্রী ও যানবাহনের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এর আগে, সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আন্দোলনকারীরা সওজ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। তারা চার দফা দাবির পোস্টার হাতে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে স্লোগানের মাধ্যমে কার্যালয় প্রাঙ্গণ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
এরপর সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং দ্রুত সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। উত্তেজনা বাড়তে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সওজের কর্মকর্তাদের সহায়তায় তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘যশোরের সড়কগুলোর বেহালের জন্য সড়ক নির্মাণে অনিয়ম, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার এবং সওজ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি দায়ী। দীর্ঘদিন ধরে এসব অভিযোগ জানানো হলেও সওজ বিভাগ উদাসীন।’
রাশেদ খান আরও বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের এক নেতা সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন, যা সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ঘটেছে। আমরা রাস্তা সংস্কারে অনিয়ম বন্ধ এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের জন্য একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে, যার আওতায় সংস্কারকাজ হবে। যশোর-বেনাপোল সড়কের আড়াই শ মিটার অংশ এবং যশোর-খুলনা সড়কের ১৬ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সব কাজই প্রক্রিয়াধীন।’
প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া আরও বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছু উত্তেজিত ব্যক্তি পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করেছে। আশা করি, তারা বিষয়টি এখন বুঝতে পেরেছে।’
বিক্ষোভে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব জেসিনা মোর্শেদ প্রাপ্তি এবং মুখ্য সংগঠক আল মামুন লিখনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।