টাকা চেয়েছিলেন পাঁচ লাখ। পরে চুক্তি হয় চার লাখে। পরীক্ষার আগে দিয়েছিলাম সাড়ে তিন লাখ টাকা। বাকী ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল পরীক্ষার দিন, পরীক্ষা শেষে। ডিভাইস কাজ করেনি। সে কারণে পরীক্ষা ভালো হয়নি। আর এ কারণে বাকী ৫০ হাজার টাকা আর নেননি। বলেন বাসায় যান, টাকাটা পরে ডেকে দেব। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক লাখ টাকা পাইনি। খালি তারিখ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন। কথাগুলো বলছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি প্রত্যাশিত নারী মোছা. মাহমুদা আক্তার (৩৪)। তিনি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের মো. মাসুদুর রহমানের স্ত্রী। আর অবৈধভাবে এই চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নেন মো. আবুল কালাম আজাদ। আবুল কালাম বর্তমানে জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলায় সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
চাকরি না হওয়ায় ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রকাশ পায়। এখন ঘুষের টাকা ফেরত পেতে ধরনা দিচ্ছেন মাহমুদা আক্তার।
চাকরিতে ঢোকার বয়স শেষের পথে থাকায় ঘুষ দিয়ে শিক্ষক হতে চাওয়া মাহমুদা আক্তার নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সুদে টাকা নিয়ে স্যারকে দিয়েছিলাম চাকরিটার আশায়। চাকরিটা তো হলোই না, সুদের ঘানি এখনো টানছি।’ এ সময় এটিইওর ব্যাংক হিসাবে ঘুষের টাকা দেওয়ার রসিদ দেখান তিনি।
মাহমুদার দুলাভাই, উপজেলার বাজারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. ফিরোজ মিয়া (৩৬) বলেন, এটা অনেক দীর্ঘ কাহিনি; ২০১৮-১৯ সালের কথা। তখন তিনি (এটিইও) সুন্দরগঞ্জে চাকরি করতেন। ডিভাইসের মাধ্যমে চাকরি দেওয়ার তথ্যটা প্রথমে আমাকে দেয় আমার স্কুলের দপ্তরি।
সে বেকাটারী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আমজাদ হোসেন কথা বলে। তখন তাঁর সঙ্গে কথা বললে তিনি এটিইও আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর মাঝেমধ্যে আমজাদ এবং এটিইও সাহেব আমাকে ফোন দেন। এদিকে আমার শ্যালিকার বয়সও শেষের দিকে। পরে বাধ্য হয়ে এটিইওর সঙ্গে মাহমুদার পরিচয় করিয়ে দেই। পরে ডিভাইস দিয়ে কীভাবে কী করতে হবে, সবকিছু শিখিয়ে দেন এটিইও সাহেব।
তবে পরীক্ষার সময় ডিভাইস কাজ না করার অভিযোগ তুলে উপজেলার পশ্চিম বাছহাটি গ্রামের ফিরোজ মিয়া বলেন, পরীক্ষার দিন, ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বরের আগে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন এটিইও আজাদ। পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় বাকি ৫০ হাজার আর নেননি। তবে আগে নেওয়া সাড়ে তিন লাখের এখনো এক লাখ টাকা তিনি ফেরত দেননি।
এটিইও মো. আবুল কালাম আজাদের বন্ধু স্কুলশিক্ষক আমজাদ। তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘ওরা-ওরাই টাকাপয়সা লেনদেন করেছে, আমি জানিনি। তবে ইদানীং এটিইও আমাকে বলেছে ফিরোজ নাকি টাকা পাবে। দিতে একটু দেরি হবে, এ বিষয়ে ফিরোজকে বলতে বলেছে।’
টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে এটিইও মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখন আমার হাতের অবস্থা খুবই খারাপ। তা ছাড়া টাকা তো প্রায় সবই দিয়েছি। সামান্য কিছু পাবে। আর টাকাটা তো ভালো জায়গায় আছে। সমস্যা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ ১০,২০, ৫০ লাখ টাকা দেয়। আর এটা তো সামান্য টাকা। এত ব্যস্ত হলে কী চলে? এখন আমাকে ফাঁসি দিলেও টাকা দিতে পারছি না। আরও একটু সময় দিতে হবে।’
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘মোছা. মাহমুদা আক্তারের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। এ ধরনের কাজ অনৈতিক। আমি আবুল কালাম আজাদ সাহেবের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নবেজ উদ্দিন সরকার দুঃখ প্রকাশ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কাজ তাঁর করাটা ঠিক হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আরও খবর পড়ুন:
- লিটনের শরীরে ৫০০ গুলি, চিকিৎসার দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ
- ছাত্র–জনতার ওপর গুলি: গ্রেপ্তার হচ্ছেন পুলিশের আরও অনেক কর্তা
- হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু নিশ্চিত করল হিজবুল্লাহ
- বাংলাদেশি সমর্থককে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত
- বাদের খাতায় দেশের তিন ডজন সংগঠক
- উন্নত এআই ফিচারসহ এল শাওমির ১৪টি নতুন সিরিজ
- আলাদা মামলা না করে একসঙ্গে করার পরামর্শ শিশির মনিরের
- শেখ হাসিনার জন্মদিনে ধানমন্ডিতে খাবার বিতরণ
- আত্মসমর্পণের পর সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান কারাগারে
- শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান গ্রেপ্তার
- বাজারে মানবহির্ভূত ওষুধ মিলছে অবাধে
- বিএনপির উদ্যোগে ‘ক্রসফায়ারের’ মামলায় ফাঁসছেন ম্যাজিস্ট্রেটও
- বাংলাদেশের সংস্কারে অব্যাহত সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র, হোয়াইট হাউসের বিবৃতি
- আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাতেই ভূত, প্রধান কর্মকর্তা মাসুদের দুর্নীতির ফিরিস্তি
- ছাত্র আন্দোলনে নিহত ১৫৮১ জনের তালিকা দিল স্বাস্থ্য উপ-কমিটি
- বাংলাদেশকে কাঁপাতে গতির ঝড় তোলা এই ভারতীয় পেসার কে
- লোকসান ঠেকাতে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট কমাচ্ছে বিমান
- আগস্টে পাকিস্তানের পোশাক খাতে রপ্তানি ২৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ
- বিএনপিকে ছাড়াই নতুন জোট গঠনের চিন্তায় জামায়াত
- লেবাননে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের এবার ভিন্ন সুর
- বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব-সোসাইটি ছাড়া কোনো সংগঠনে যুক্ত হতে পারবেন না বুয়েট শিক্ষার্থীরা
- এখন আমাকে ফাঁসি দিলেও টাকা দিতে পারছি না, বললেন ঘুষ নেওয়া কর্মকর্তা
- সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যায় শুধু বিএসএফ নয়, ভারতীয় গ্রামবাসীরাও জড়িত
- অতিরিক্ত ডিআইজি হলেন ৪৭ পুলিশ সুপার
- প্রথম শ্রেণির সখ্যে কোটিপতি তৃতীয় শ্রেণির জামাল