বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) প্রতিনিধি প্যানেল (কমিটি) বিলুপ্ত করা হয়েছে। আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দুটি পেজে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘আজ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সমন্বয়ক বা ছাত্র প্রতিনিধি নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা জানান, আন্দোলনের পরে শহরজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা কমানোর জন্য ১০ জন প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়েছিল। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মহানগর এবং জেলাভিত্তিক কমিটি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি প্যানেল বিলুপ্ত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ‘টু জিরো’ পেজে বলা হয়েছে, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররাজনীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে যাচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি প্যানেল বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।’
অপর দিকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ‘টু ওয়ান’ পেজ থেকে বলা হয়েছে, ‘কোটা আন্দোলন শুরুর সময় থেকে বন্যা-পরবর্তী সময়ে দেশের প্রয়োজনে সমন্বয়ক বা ছাত্র প্রতিনিধিসহ অনেকে নিয়োজিত ছিল, যা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এবং বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অরাজনৈতিক ক্যাম্পাসে সমন্বয়ক বা ছাত্র প্রতিনিধির কোনো প্রয়োজনীয়তা না থাকায় আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক কোনো পরিচয় কখনো এই ক্যাম্পাসে ছিল না, থাকবেও না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ই আমাদের একমাত্র পরিচয়।’
প্রতিনিধি প্যানেলে থাকা পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জহুরুল তানভীর বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিনিধির তালিকা দেওয়ার পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। যার ফলে আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার জন্য। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।’
জহুরুল তানভীর আরও বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি থাকবে না। তবে শিক্ষার্থীরা খুলনা মহানগর এবং জেলায় কাজ করতে পারবেন। এ ক্যাম্পাসে অনেকেই বাইরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বাইরে বসে যে কেউ যেকোনো সংগঠনে কাজ করতে পারবে, এটা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার।’
প্রতিনিধি প্যানেলের আরেক শিক্ষার্থী মহিবুল্লাহ ইসলাম বলেন, ‘এ কমিটি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল। আমরা ক্যাম্পাসের সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছি।’