মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সফরে তিনি তিনি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড ইমার্জিং টেকনোলজি তথা বিশ্লেষণাত্মক ও উদীয়মান প্রযুক্তি উদ্যোগের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সফরের অংশ হিসেবে, জেক সুলিভান আজ সোমবার দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের পর জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্ট করেন। সেখানে তিনি গত চার বছরে ভারত-মার্কিন অংশীদারত্বকে শক্তিশালী করার জন্য জেক সুলিভানের ‘ব্যক্তিগত অবদান’ স্বীকার করে তাঁর প্রশংসা করেন।
জয়শঙ্কর লিখেছেন, ‘আজ (সোমবার) সকালে দিল্লিতে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত। দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা গভীর করার জন্য চলমান আলোচনাগুলো আমরা অব্যাহত রেখেছি। গত চার বছরে আমাদের উন্মুক্ত ও ব্যাপক আলোচনা জন্য আমি তাঁর অবদানকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করি। ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে তাঁর ভূমিকা অসামান্য।’
উল্লেখ্য, জয়শঙ্কর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ছয় দিনের সফর শেষ করেছেন। এই সফর ছিল বিদায়ী বাইডেন প্রশাসনের সময়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
জেক সুলিভানের দিল্লি সফরে ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্কের সামগ্রিক পর্যালোচনা এবং বাইডেন প্রশাসনের অধীনে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে অর্জিত অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হবে। আজ সোমবার সুলিভান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
জেক সুলিভান এবং অজিত দোভালের আলোচনার প্রধান বিষয় হবে ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড ইমার্জিং টেকনোলজি উদ্যোগের বাস্তবায়ন। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মেয়াদে ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্ক প্রসারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত। ২০২২ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই উদ্যোগটি চালু করেছিলেন।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল—কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), সেমিকন্ডাক্টর, বায়োটেকনোলজি এবং প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি ক্ষেত্রগুলোতে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। গত বছর, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সেমিকন্ডাক্টর, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, উন্নত টেলিযোগাযোগ এবং প্রতিরক্ষা মহাকাশে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি রূপান্তরকারী উদ্যোগ ঘোষণা করেছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে অংশীদারত্ব গভীর করার পদক্ষেপ।
জেক সুলিভান সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে ভারত সফর করেছিলেন। তখনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এবারের সফরে তিনি বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের সামগ্রিক ফলাফল ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।