ভারতে বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নিয়ে এক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে দেখা গেছে, ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি নাইজেরিয়ার নাগরিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরই রয়েছে বাংলাদেশ ও উগান্ডার নাগরিকেরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০২৩-২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিল ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ভারতে থেকে সর্বাধিক সংখ্যক নাইজেরিয়ার নাগরিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে থেকে। প্রতিবেদনটি চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রকাশিত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়কালে মোট ২ হাজার ৩৩১ জন বিদেশি নাগরিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৭০ জন নাইজেরিয়ার, ৪১১ জন বাংলাদেশের এবং ৭৮ জন উগান্ডার নাগরিক।
যখন কোনো ব্যক্তি বৈধ ভিসা বা প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়া দেশে প্রবেশ করে বা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করেন, তখন তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিবাসন, ভিসা, বিদেশি অনুদান এবং নাগরিকত্ব সম্পর্কিত বিষয় পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। তবে, বিদেশিদের দেশে প্রবেশ, অবস্থান, অভ্যন্তরীণ চলাচল এবং প্রস্থান নিয়ন্ত্রণ করে ব্যুরো অব ইমিগ্রেশন (বিওআই) এবং রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
ভারতে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ, অবস্থান ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির ১৯৩৯ সালের ফরেনারস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৬ সালের ফরেনারস অ্যাক্ট এবং ১৯২০ সালের পাসপোর্ট (এন্ট্রি ইনটু ইন্ডিয়া) অ্যাক্ট।
ভারতীয় মিশন ও দূতাবাসগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শারীরিক বা স্টিকার আকারে ভারতীয় ভিসা দেয়। বর্তমানে বিওআই ১৬৭টি দেশের নাগরিকদের জন্য সাতটি ক্যাটাগরির ই-ভিসা দেয়।
ভারতের ছয়টি নির্দিষ্ট বিমানবন্দরে তিনটি দেশের নাগরিকদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা রয়েছে। দেশগুলো হলো জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
প্রতিবেদন অনুসারে, এপ্রিল ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ভারতে মোট ৯৮ লাখ ৪০ হাজার ৩২১ জন বিদেশি ভ্রমণ করেছেন।
এই সময়কালে সর্বাধিক বিদেশি পর্যটক এসেছেন বাংলাদেশ থেকে—মোট ২১ লাখ। এরপর তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (১৭ লাখ) ও যুক্তরাজ্য (৯ লাখ)। এ ছাড়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, জার্মানি, নেপাল ও সিঙ্গাপুর থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক এসেছেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এই ১০টি দেশ থেকে আসা পর্যটকরা মোট বিদেশি আগমনের ৭০.২৭ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ১ হাজার ১১২টি দীর্ঘমেয়াদি ভিসা (এলটিভি) অনুমোদন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।