এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর মুক্তিপণ চেয়ে তাঁর ভাইয়ের মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠিয়েছেন অপহরণকারী। সেই লেখায় ভুল বানানের সূত্র ধরে অপহরণকারীর সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো অপহরণকারী আর কেউ নন, অপহৃত নিজেই।
চোখ কপালে ওঠার মতো ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের হার্দই এলাকায়। সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।
৫ জানুয়ারি হার্দই জেলার বান্দারহা গ্রামের ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার তাঁর ভাই সন্দীপের অপহরণের বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, তাঁর ভাইকে অপহরণ করে পাঁচ হাজার রুপি মুক্তিপণ দাবি করে অপরিচিত নম্বর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো হয়।
তাতে লেখা ছিল, টাকা না দিলে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হবে। ওই লেখায় মৃত্যু শব্দটির ইংরেজি বানানে ভুল ছিল। ‘death’-এর জায়গায় ‘deth’ লেখা ছিল।
এ ছাড়া সঞ্জয় কুমারের ফোনে ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ পাঠানো হয়, যেখানে সন্দীপকে দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
মুক্তিপণের বার্তায় ভুল বানান দেখে পুলিশ বুঝতে পারে, বার্তা প্রেরক তেমন শিক্ষিত নয়। পুলিশ সুপার নিরজ কুমার বলেন, সঞ্জয় কুমারের কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। মুক্তিপণের টাকার অঙ্কও খুব বেশি ছিল না।
পুলিশ সন্দীপের মোবাইল ফোনের অবস্থান শনাক্ত করে তাঁকে রূপপুরে খুঁজে পায়। তাঁকে মুক্তিপণের দাবি করে একটি চিঠি লিখতে বলে পুলিশ। ওই চিঠিতে সন্দীপ ‘death’-এর বদলে ‘deth’ লেখেন। তখন পুলিশ বুঝতে পারে, নিজের অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন সন্দীপ।
পুলিশ সুপার জানান, বিষয়টি পরে সন্দীপ স্বীকারও করেছে। ভারতে জনপ্রিয় ক্রাইম সিরিয়াল সিআইডি দেখে ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য এই পরিকল্পনা তাঁর মাথায় আসে।
২৭ বছর বয়সী সন্দীপ মির্জাপুরের একটি আখ ক্রয়কেন্দ্রে কাজ করেন। গত ৩০ ডিসেম্বর সাহাবাদ এলাকায় তাঁর মোটরসাইকেল এক বৃদ্ধকে ধাক্কা দিলে তাঁর পা ভেঙে যায়। তাঁর ক্ষতিপূরণের টাকা জোগাতে তিনি অপহরণের নাটক সাজান।