ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ বুধবার। মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ গাসসান মামুন ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হবে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে মালদ্বীপে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য সামরিক সরবরাহ পাঠানোর বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত হবে। এ ছাড়া, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, সামরিক মহড়া, প্রতিরক্ষা প্রকল্প, কর্মশালা এবং সেমিনার আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা হবে। এগুলোর মাধ্যমে মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ গাসসান মাউমুন বর্তমানে তিন দিনের ভারত সফরে আছেন। তিনি আজ বুধবার ভারতে পৌঁছান। তাঁর এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ খলিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ বলা হয়েছে, ‘ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে আধ্যাত্মিক, ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে। মালদ্বীপ ভারতে সবার আগে প্রতিবেশী নীতিতে বিশেষ স্থান অধিকার করেছে। বিষয়টি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আনতে সহায়ক।’
ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভারতের ‘সাগর’ বা সিকিউরিটি অ্যান্ড গ্রোথ ফর অল ইন দ্য রিজিয়ন দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে উভয় দেশেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, ‘গত অক্টোবরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর ভারত সফরের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। ওই সফরে উভয় দেশ অর্থনৈতিক ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি বিস্তৃত অংশীদারত্বে সম্মত হয়েছিল।’
এর আগে, মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর মালদ্বীপে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়। মুইজ্জুর নেতৃত্বে মালদ্বীপ ভারতীয় সামরিক কর্মীদের সরিয়ে নিতে বাধ্য করে। সেই সময় মালদ্বীপে একটি বিমান ও দুটি হেলিকপ্টার পরিচালনায় থাকা ৮৫ জনের বেশি ভারতীয় সামরিক কর্মী প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি, মুইজ্জুর পররাষ্ট্রনীতিতে চীনের প্রতি ঝোঁক দেখা যায়।
তবে সম্প্রতি সম্পর্কের উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। মুইজ্জু গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন। এই আমন্ত্রণ এবং তাঁর সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে।