হোম > বিশ্ব > লাতিন আমেরিকা

ইকুয়েডরে ৪ শিশু নিখোঁজের ঘটনায় বিমানবাহিনীর ১৬ সদস্যকে আটকের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ২২
শিশুদের শোকগ্রস্ত পরিবার ও স্বজনেরা। ছবি: সিএনএন

ইকুয়েডরের একটি আদালত দেশটির বিমানবাহিনীর ১৬ জন সদস্যকে আটক করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চার শিশুর নিখোঁজ ও পরে দগ্ধ অবস্থায় তাদের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সিএনএন জানিয়েছে, নিখোঁজের পর দগ্ধ অবস্থায় শিশুদের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাটি পুরো দেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এই ঘটনায় দেশটির সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সী ওই চার শিশুর মধ্যে ছিল সাউল আরবোলেদা, স্টিভেন মেদিনা এবং দুই ভাই জোসুয়ে ও ইসমাইল আরোয়ো। গত ৮ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয় তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই চার শিশু ফুটবল খেলার পর গুয়ায়াস প্রদেশে সৈন্যদের দ্বারা আটক হয়েছিল। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সৈন্যরা তাদের জোর করে একটি সামরিক টহল গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

এর মধ্যে গত সপ্তাহে দগ্ধ অবস্থায় চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে ওই মৃতদেহগুলো নিখোঁজ শিশুদের বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। মৃতদেহগুলো পড়ে ছিল সেখানেই, যেখানে তাদের শেষবার দেখা গিয়েছিল।

এই ঘটনায় ইকুয়েডরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শিশুদের আটক করা হয়েছিল, এটা ঠিক। কিন্তু পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, একটি ডাকাতির সঙ্গে ওই শিশুরা যুক্ত আছে, এমন সন্দেহ করা হয়েছিল। তবে প্রসিকিউটরের অফিস এই দাবির কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি।

শিশুদের নিখোঁজ ও মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোক ছড়িয়ে পড়েছে ইকুয়েডর জুড়ে। গুয়ায়াসের প্রিফেক্ট মার্সেলা আগুইনাগা বলেছেন, ‘এটি দেশের জন্য মর্মান্তিক। ভয় আমাদের স্তব্ধ করতে পারবে না। সংহতির মাধ্যমে আমাদের ন্যায়বিচার দাবি করতে হবে।’

গুয়ায়াকুইল মেয়র আকিলেস আলভারেজ মন্তব্য করেছেন, ‘এটি এমন এক ক্ষতি, যা কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। এই দেশ এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।’

এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনার জেরে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ ইকুয়েডরের আদালতে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত ভিডিও এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউটরের অফিস। এসব প্রমাণ বিমানবাহিনীর অভিযুক্ত সদস্যদের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দেয়।

শুনানি চলার সময় আদালতের বাইরে শিশুদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবসহ অসংখ্য মানুষ ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহনের পাশাপাশি স্লোগান দিয়েছেন—তারা জীবিত নিয়ে গেছে, আমরা জীবিত চাই!

আলোচিত এই ঘটনায় ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট দানিয়েল নোবোয়া বলেছেন, এই ঘটনার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার দায়মুক্তি থাকবে না। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ইকুয়েডরের নৈতিক অবস্থা এবং সামরিক বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। দেশের নাগরিকেরা ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করছে এবং এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছে।

ভাইরাল হতে গিয়ে পরপর মৃত্যু, টিকটককে শতকোটি টাকা জরিমানা

২০ বছর পর মার্কিন কারাগার থেকে কলম্বিয়ায় ফিরলেন মাদক সম্রাট

ব্রাজিলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত সব যাত্রী