হোম > ইসলাম

আপনার জিজ্ঞাসা

শিশুদের কতটুকু ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ 

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭: ৫৩
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন: শিশুসন্তানদের কতটুকু ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া অভিভাবকের দায়িত্ব? নাদিম হাসনাইন, ঢাকা

উত্তর: শিশুরা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। একটি জাতির ভবিষ্যৎ সুন্দর কি অসুন্দর হবে, তা নির্ভর করে শিশুদের বেড়ে ওঠার ওপর। তাদের যদি আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তারা জাতিকে পথ দেখাবে। অন্যথায় তারা একেকজন দেশ ও জাতির অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

এ কথা অনস্বীকার্য যে শিশুদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প নেই। কারণ, ধর্ম মানুষকে তার সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। তাঁর আদেশ-নিষেধ ও পছন্দ-অপছন্দ জানিয়ে দেয়। উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতা শেখায়। গর্হিত স্বভাব ও কাজ থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করে। এভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা একটি শিশুকে একজন নীতিমান মানুষে পরিণত করে। এ কারণেই ইসলামে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার প্রতি অত্যন্ত জোর দেওয়া হয়েছে।

রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা সন্তানদের (শিশুদের) স্নেহ করো, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো এবং তাদের সদাচরণ ও শিষ্টাচার শেখাও।’ (তিরমিজি) অন্য হাদিসে বলেন, ‘বাবার পক্ষ থেকে সন্তানের প্রতি সর্বোত্তম উপহার হলো উত্তম শিক্ষা।’ (তিরমিজি) আরেক হাদিসে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের শিশুদের তিনটি স্বভাবের ওপর প্রতিষ্ঠিত করে তোলো—তোমাদের নবীর প্রতি ভালোবাসা, নবীর পরিবারের প্রতি ভালোবাসা এবং কোরআন অধ্যয়ন। কেননা, কোরআনের ধারকেরাই সেদিন (কেয়ামতের দিন) নবী ও সজ্জনদের সঙ্গে আরশের ছায়ায় অবস্থান করবেন, যেদিন আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না।’ (তাবরানি) অন্য হাদিসে বলেন, ‘নৈতিক শিক্ষা মা-বাবার ওপর শিশুর অধিকার।’ (বায়হাকি) খলিফা ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর কিতাব (কোরআন) শেখানো মা-বাবার ওপর সন্তানের অধিকার।’ (তারবিয়াতুল আওলাদ)

শিশুর ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টিকে ইসলাম বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। তাই মুসলমান হিসেবে অবশ্যই আমাদের সন্তানদের ইসলামের মৌলিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা, অর্থাৎ ইমান-আকিদা, আদব-আখলাক, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দোয়া ও মাসায়েল শেখানো অভিভাবকদের জন্য ফরজ।

ধর্মের মৌলিক শিক্ষা দেওয়া হলে, আমাদের সন্তানেরা ভবিষ্যতে চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী যা-ই হোক না কেন, একজন প্রকৃত মুসলমান হিসেবে সব সময় তারা সত্য ও সততার ওপর অবিচল থাকবে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে।

উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক