হোম > জীবনধারা

জাদু আছে জাদুঘরে

রিক্তা রিচি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ৩০
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭: ৩২

জাদুঘর ইতিহাসের গভীর থেকে গভীরে ডুব দেওয়ার এক মোক্ষম জায়গা। কোনো এক সাপ্তাহিক ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকা শহরের জাদুঘরগুলোতে, একা কিংবা সপরিবারে অথবা বন্ধুবান্ধব মিলে। জানাচ্ছেন রিক্তা রিচি

  • জাতীয় জাদুঘর

অবিভক্ত বাংলার প্রাচীনতম জাদুঘরগুলোর মধ্যে আমাদের জাতীয় জাদুঘর অন্যতম। এটি স্থাপিত হয় ১৯১৩ সালে। প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন নিদর্শন এখানে সংগৃহীত আছে। চারুকলা, প্রকৃতি, আধুনিক সভ্যতা, নৃতত্ত্ব ইত্যাদি ভাগে ভাগ করে সেসব নিদর্শন মোট ৪৩টি গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে।

এ ছাড়া এখানে রয়েছে জয়নুল আবেদিন, এস এম সুলতান, কামরুল হাসান, শফিউদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন বরেণ্য চিত্রশিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম। রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত প্রাচীন টেরাকোটা শিল্পের নমুনা। বিভিন্ন অঞ্চলের নৌকা, মসলিন, পাথরে তৈরি প্রাচীন ভাস্কর্য, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির পুতুল, হাতির দাঁতের শিল্পকর্মসহ লোকশিল্পের এক বিশাল সংগ্রহশালা এটি।

সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার। শনি থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাতীয় জাদুঘর। প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের দাম ২০ টাকা, ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের টিকিটের দাম ১০ টাকা।

  • মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে বিশেষায়িত জাদুঘর এটি। মুক্তিযুদ্ধের দলিল-দস্তাবেজ, ইতিহাস, বিভিন্ন অস্ত্র ও ছবি দিয়ে এ জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে। এখানে ছয়টি গ্যালারি রয়েছে। 
মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের ব্যবহৃত সামগ্রী, অস্ত্র, দলিল, চিঠিপত্র, মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মারক, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত বিমান ও হেলিকপ্টার ইত্যাদি মিলিয়ে ১৭ হাজারের বেশি নিদর্শন রয়েছে 
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংগ্রহশালায়।

এর প্রথম তলায় রয়েছে শিখা অম্লান। তার পাশে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ব্রোঞ্জ নির্মিত ভাস্কর্য।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঢাকার এফ-১১/এ-বি, সিভিক সেক্টর, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জাদুঘরটি খোলা থাকে। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এটি। টিকিটের দাম ২০ টাকা।

  • লোকশিল্প জাদুঘর

সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘর পানামনগরে অবস্থিত অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এখানে দেখতে পাবেন বাংলার প্রাচীন সুলতানদের ব্যবহৃত অস্ত্র, তৈজসপত্র, পোশাক, অলংকার, প্রাচীন মুদ্রা ইত্যাদি। রয়েছে কারুপল্লি ও বিক্রয়কেন্দ্র। লোকশিল্পের বিভিন্ন নিদর্শন কেনা যায় এখান থেকে। প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা। শুক্র থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে।

  • বিমান জাদুঘর

বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে বিমান জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি উন্মুক্ত ধরনের জাদুঘর। খোলা আকাশের নিচে এখানে রাখা হয়েছে বিভিন্ন অব্যবহৃত বিমান ও হেলিকপ্টার। এগুলো বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়ে বিমানবাহিনীতে এবং সরকারি কাজে ব্যবহার করা হতো।

এখানে দেখা যাবে হান্টার বিমান, এন-২৪ বিমান, এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান, প্রথম বিমান বলাকা ইত্যাদি। রয়েছে স্যুভেনির শপ ‘নীলাদ্রি’। এখানে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড। নৌভ্রমণের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। এক বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিমান জাদুঘরে সময় কাটালে মন্দ লাগবে না। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার। এটি সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। টিকিটের দাম ২০ টাকা। তবে বিমান জাদুঘরের ভেতরের পার্কে যেতে হলে আলাদা টিকিট কাটতে হবে।

  • টাকা জাদুঘর

এটি একটি বিশেষায়িত জাদুঘর। বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ হাজার পুরোনো মুদ্রা আছে টাকা জাদুঘরে। দুটি গ্যালারিজুড়ে রয়েছে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন মুদ্রা। প্রাচীন আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত মুদ্রিত বিভিন্ন ধরনের ধাতব মুদ্রা, কাগজের নোট এবং মুদ্রা-সম্পর্কিত দ্রব্যসামগ্রী এখানে সংরক্ষিত আছে।

এখানে প্রাচীন মুদ্রায় নির্মিত অলংকার, মুদ্রা সংরক্ষণের কাঠের বাক্স, লোহার তৈরি ব্যাংক, সিন্দুক ইত্যাদি রয়েছে। টাকা জাদুঘরটি মিরপুর ২ নম্বর রোডে অবস্থিত। এখানে ঢুকতে কোনো টিকিট দরকার নেই। সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার। এ ছাড়া সরকারি ছুটির দিন এটি বন্ধ থাকে। শুক্রবার খোলা থাকে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। অন্যান্য দিনে জাদুঘরটি খোলা থাকে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

  • বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডির পুরোনো ৩২ নম্বর সড়কের যে বাড়িটিতে বসবাস করতেন, সেটিই এখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর বা সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষার জন্য ১৯৯৭ সালে এ বাড়িটিকে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

এখানে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার্য ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, খাট, ডাইনিং টেবিল, ড্রেসিং টেবিল ইত্যাদি রয়েছে। এ বাড়িটিতে রয়েছে গুলিবিদ্ধ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। সিঁড়ি, দেয়ালজুড়ে রয়েছে গুলি ও রক্তের চিহ্ন। এই জাদুঘর একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু এবং ১৯৭৫ সালের কালো সময়কে মনে করিয়ে দেবে। সাপ্তাহিক বন্ধ বুধবার।

সপ্তাহের বাকি দিনগুলোয় এটি সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

গোলাপি শহর তুলুজ

ঢাকার কাছে মুন্সিগঞ্জ: দেখার আছে অনেক কিছু

ইউরোপের ৭টি সুন্দর গ্রাম

মালদ্বীপে হানিমুনের সেরা পাঁচ রিসোর্ট