হোম > মতামত > উপসম্পাদকীয়

ডাকসু তথা ছাত্ররাজনীতি

সম্পাদকীয়

আমাদের দুর্ভাগ্য যে রাজনীতির মাঠে মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেখা যায় না। লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির ফলে বিদ্যায়তনগুলোয় ছাত্র সংসদগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি, নির্বাচনও হয়নি বহুবার। ডাকসুসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় না বহুদিন ধরে। এ কথা সবাই জানেন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের বড় অবদান রয়েছে। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান ক্ষমতায় এসেই যে লৌহ শাসন শুরু করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদের পটভূমি রচনা করেছিলেন শিক্ষার্থীরাই। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে ৬ দফার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দেওয়া ১১ দফাও ছিল ব্যাপক আলোচিত। এই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের জোরালো ভূমিকা ছিল। সরকার-সমর্থিত এনএসএফ এ সময় পেশিশক্তির কারিশমা দেখানো শুরু করেছিল বটে, কিন্তু আন্দোলনের প্রচণ্ডতায় তারা হালে পানি পায়নি।

স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি সরকারি ছত্রচ্ছায়ার বাইরে যেতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু সব সময় সফল হয়নি। মূলত এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্ররাজনীতিকে দেখা গেছে বলিষ্ঠ অবস্থানে। সে সময় শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনেও শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা গেছে। পরপর তিন বছর সে সময় ডাকসু নির্বাচন হয়। আশির দশকের শেষে ও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে দুটি ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। এরপর একেবারে ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন দেখা গেছে কিন্তু তা খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি।

ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যাবে, ডাকসু নির্বাচনে বামপন্থী ও মধ্যপন্থীদের প্রতিই শিক্ষার্থীরা আস্থা রেখেছিলেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এই হিসাবনিকাশে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না, সেটা দেখার বিষয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতিবিমুখ হয়ে উঠেছিলেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন কি না, সেটা দেখা দরকার।

ডাকসু নির্বাচনের কথা উঠেছে, কিন্তু কীভাবে তা কার্যকর করা হবে, কবে হতে পারে নির্বাচন—এসব নিয়ে কাজ খুব একটা এগোচ্ছে না। সবার জন্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসু নেতৃত্ব গঠন করে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো এখন সময়ের দাবি। একটি দেশের বিরাট জনগোষ্ঠী, তথা তরুণেরা রাজনীতিবিমুখ থাকবে—এটা কোনো কাজের কথা নয়। শিক্ষার্থীদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকাশের জন্যও ছাত্র নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

ডাকসু নির্বাচনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও ছাত্র সংসদ গঠন করার কাজটি এগিয়ে নিতে হবে। বৈষম্যবিরোধী যে অবস্থানে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা, সে অবস্থানে স্থির থাকতে পারলে নির্বাচনে কারচুপি হবে না। যাঁরা তাঁদের সাংগঠনিক শক্তিবলে এবং ব্যক্তিগত কারিশমায় শিক্ষার্থীদের মনে আস্থা আনতে পারবেন, তাঁরাই ছাত্র সংসদে আসবেন। যাঁরা পরাজিত হবেন, তাঁদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম করা হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধও বাড়বে।

এই তরুণদের একটি অংশ যখন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি করার পর জাতীয় রাজনীতিতে আসবে, তখন তাদের মাধ্যমে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলেই আশা করা যায়। খুলে যাক ছাত্ররাজনীতির দুয়ার।

এবার নির্বাচনের দিকে চোখ থাকবে সবার

আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাস ভোক্তার কাছে পৌঁছায় না কেন

ভারতজুড়েই কি ফুটবে পদ্মফুল

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

সমুদ্রস্তরের উত্থান ও দ্বীপরাষ্ট্রের নিরাপত্তা

সংকটেও ভালো থাকুক বাংলাদেশ

মন্ত্রীদের বেতন-ভাতা নিয়ে কথা

পাঠকের লেখা: বিজয় অর্জনের গৌরব

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের কি বিচ্ছেদ হলো

একাত্তরে সামষ্টিক মুক্তি আসেনি