বিপিএল শুরুর আগে টিকিট ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা গেল গত দুই দিনে। আজ দুপুরে ম্যাচ শুরুর আগেই শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে টিকিট নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভে ফেটে পড়েন দর্শকেরা। অনেকেই টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে বিক্ষোভে রূপ নেয়, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়।
টিকিট নিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতিতে দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। বিসিবির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বিসিবি সভাপতি বলছেন, ‘প্রথমবারের মতো একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেটি অনলাইনে কেনা যায়, এখন বিশ্বের সব জায়গায় টিকিট অনলাইনে কাটা হয়। আমরা এখনো অনলাইনে অভ্যস্ত হইনি। একটা নতুন সিস্টেম। দর্শকের কাছে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমি। প্রথম দুই-তিন দিন যে ভোগান্তি হবে, সেটা শিগগির ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের সার্ভারে সমস্যা ছিল, আরও কিছু ইস্যু ছিল। এ কারণে অনলাইনে (টিকিট) কাটতে পারেনি, বুথে বেশি মানুষ দেখা গেছে।’ ফারুক আশ্বস্ত করছেন আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে অনলাইন টিকিটের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, ‘আমরা কিছু প্যানিক (আতঙ্কিত) করেছি। কিছু গুজব ছড়িয়েছে। এতে কান দেবেন না। আশা করি দুই-তিন দিনের মধ্যে ঢাকা পর্বে পুরোপুরি সিস্টেমে এনে ফেলতে পারবে।’
আগামীকাল ব্যাংকে ছুটির দিন। কালকের ম্যাচের টিকিট তাই আজই সংগ্রহের আহ্বান ফারুকের, ‘কালকের টিকিট আজই সংগ্রহ করে নিতে হবে। আমরা ৩৫ শতাংশ টিকিট অনলাইনে দিয়েছিলাম। তবে এখন প্রায় ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে। যারা কালকের খেলা দেখতে ইচ্ছুক, টিকিট আজই কিনে ফেলতে হবে।
বিপিএল আয়োজন নিয়ে বিসিবির নানা উদ্যোগ থাকলেও টিকিট ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা প্রকাশ্যে এসেছে। বিসিবি আগেই ঘোষণা দিয়েছিল যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকিট বিক্রিতে জোর দেওয়া হবে। পরে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হলেও সময়মতো তা জানানো হয়নি দর্শকদের। গত রোববার বিসিবি হঠাৎ জানায়, ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে এবং বাকি টিকিট মধুমতি ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখায় সরবরাহ করা হবে। তবে পর্যাপ্ত টিকিট সরবরাহ না থাকায় হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দর্শকদের মধ্যে।
আজ দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচের টিকিটের জন্য দর্শকদের ভিড় বাড়তে থাকে। ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহীর ম্যাচের আগে টিকিট না পাওয়া দর্শকদের হতাশা ধীরে ধীরে ক্ষোভে রূপ নেয়। স্টেডিয়ামের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ফটকের লোহার পাইপ ভেঙে ফেলে এবং বাইরে থাকা ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। কিছু কাঠের অস্থায়ী গেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন বিক্ষুব্ধ জনতা বিসিবি অফিস ভবনের জানালায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, এতে জানালাগুলো ভেঙে যায়। এই ঘটনায় বিসিবির কয়েকজন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্য আহত হন।