হোম > প্রযুক্তি

পোকামাকড়ের বিলুপ্তি ঠেকাতে এআই ব্যবহার করবে কানাডা

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৫৭
বিভিন্ন গবেষণায় পোকামাকড়ের প্রজাতির বিলুপ্তির কারণগুলো ভালোভাবে বোঝা গেছে। ছবি: ইনসেক্ট ইন্টারন্যাশন্যাল

পোকামাকড়ের বিলুপ্তি ঠেকাতে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করবে কানাডার গবেষকেরা। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকেরা এমন তথ্য সংগ্রহ করবে যা প্রজাতির বিলুপ্তি রোধে ও পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সাহায্য করবে।

কানাডার মন্ট্রিল ইনসেকটেরিয়ামের পরিচালক মেক্সিম ল্যারিভি বলেন, ‘যতগুলো প্রজাতির বিলুপ্তি আমরা অতীতে অভিজ্ঞতা করেছি, তার মধ্যে পোকামাকড়ের বিলুপ্তি হাজার গুণ দ্রুত ঘটছে। এটি এত দ্রুত ঘটছে যে, সঠিকভাবে তা পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। এর ফলে এটি থামানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ জন্য তথ্য পাওয়ার জন্য কানাডা একটি প্রকল্প চালু করেছে যার নাম অ্যানটেনা। ইনসেকটেরিয়ামের ভেতরে একটি বড় স্বচ্ছ গম্বুজ থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই গম্বুজের ভেতরে থাকা হাজার হাজার প্রজাপতি, পিঁপড়া এবং প্রেয়িং মেনটিস (এক ধরনের পতঙ্গ) ওপর গবেষণা করা হচ্ছে।

কানাডার উত্তর থেকে পানামার বৃষ্টিপ্রধান বনাঞ্চল পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চলে সৌর শক্তি সমর্থিত ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এটি প্রতি ১০ সেকেন্ডে ইউভি আলোতে আকৃষ্ট পোকামাকড়ের ছবি তুলে পারে।

মেক্সিম ল্যারিভি বলেন, উচ্চ-রেজল্যুশনের ক্যামেরা, কম দামি সেন্সর এবং তথ্য প্রক্রিয়া করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেলগুলোর মতো উদ্ভাবনগুলো জীববৈচিত্র্য তথ্যের সংগ্রহ করবে। এগুলোর মাধ্যমে আগামী দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্য গত ১৫০ বছরে সংগৃহীত তথ্যের পরিমাণের চেয়ে দ্বিগুণ হবে।

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্যও যেন বিজ্ঞানের কল্পকাহিনী মনে হচ্ছে।’

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, পৃথিবী ডাইনোসরের যুগের পরবর্তী সবচেয়ে বড় বিলুপ্তি ঘটার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

বিভিন্ন গবেষণায় পোকামাকড়ের প্রজাতির বিলুপ্তির কারণগুলো ভালোভাবে বোঝা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, বাসস্থান হারানো এবং কীটনাশক। তবে এর মাধ্যমে পতঙ্গের বিলুপ্তির পরিমাণ এবং প্রকৃতি পরিমাপ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ল্যারিভি বলেন, সরকার এবং পরিবেশবিদদের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণ’ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে সহায়ক রক্ষণাবেক্ষণ নীতি তৈরি করতে সাহায্য করবে এসব উন্নত মানের তথ্য।

বিশ্বে প্রায় ১ কোটি পোকামাকড় প্রজাতি রয়েছে বলে অনুমান করা হয়, যা বিশ্বের জীববৈচিত্র্যের অর্ধেক প্রতিনিধিত্ব করে। তবে এর মধ্যে মাত্র ১০ লাখ প্রজাতি তালিকাভুক্ত করেছে বিজ্ঞানীরা।

অ্যানটেনা প্রকল্পে কাজ করছেন ক্যুবেক এআই ইনস্টিটিউটের জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ডেভিড রোলনিক। তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সেই ৯০ শতাংশ পোকামাকড় প্রজাতির তালিকাভুক্ত করতে সাহায্য করতে পারে, যা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।

রোলনিক বলেন, পানামায় বৃষ্টিপ্রধান বনে সেন্সর সিস্টেম পরীক্ষা করেছিলাম আমরা। সেসময় এক সপ্তাহের মধ্যে ৩০০টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছি এবং এটি কেবল ক্ষুদ্র একটি অংশ।

বর্তমানে অ্যানটেনা প্রকল্পের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুলগুলোর উন্নতির জন্য মথদের ওপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। মথ একটি বৈচিত্র্যময় পতঙ্গের গ্রুপ, যাদের ১৬ লাখের বেশি প্রজাতি রয়েছে। এগুলো ‘চোখে চিহ্নিত করা সহজ’ এবং খাদ্য শৃঙ্খলে নিচে অবস্থান করে।

মন্ট্রিল প্রকল্পটি একটি ওপেন সোর্স মডেল ব্যবহার করছে। যে কেউ যেন এই প্ল্যাটফর্মের উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে তাই এই মডেল ব্যবহার করা হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে নতুন প্রজাতি এবং কৃষির জন্য ক্ষতিকর প্রজাতি চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে বলে এই মডেলটি গবেষকেরা আশা করেন।

এদিকে মন্ট্রিল ইনসেকটেরিয়াম তার প্রযুক্তি শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে। দর্শনার্থীরা একটি জীবিত প্রদর্শনীতে প্রজাপতির ছবি তুলতে পারেন এবং একটি অ্যাপ ব্যবহার করে সঠিক প্রজাতি চিহ্নিত করতে পারেন।

তথ্যসূত্র: জাপান টুডে

স্মার্টফোনের যুগ শেষ হচ্ছে দ্রুতই, নতুন যে বিকল্প দেখালেন জাকারবার্গ

ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রামের পরিবর্তন ব্যাখ্যা করতে মেটাকে ৭২ ঘণ্টা সময় দিল ব্রাজিল

ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই যে প্রোগ্রাম বাতিল করছে মেটা ও অ্যামাজন

কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিয়ে আমিরাত সরকারের বিশাল আয়োজন