বয়স মাত্র ১৯। অথচ স্যাম কনস্টাসকে দেখে কি সেটা বোঝার উপায় আছে! মাঠের ক্রিকেট ছাপিয়ে যেভাবে জসপ্রীত বুমরা, বিরাট কোহলির সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলেছেন, সেটা সদ্য শেষ হওয়া বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে অনেক বেশি আলোড়ন তুলেছে।
ভারতের বিপক্ষে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু কনস্টাসের। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে যতটা তিনি নজর কেড়েছেন, তাঁর চেয়েও বেশি তর্কযুদ্ধে। সিডনিতে প্রথম দিনের শেষ বিকেলে উসমান খাজার উইকেট নেওয়ার পর বুমরা তেড়ে যান নন স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে থাকা কনস্টাসের দিকে। কনস্টাস-বুমরার বাকবিতণ্ডা এমন পর্যায়ে চলে যায়, যেটা থামাতে মাঠের দুই আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত ও মাইকেল গফকে এগিয়ে আসতে হয়েছে।
সিডনিতে এ সপ্তাহের রোববার তিন দিনে শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিরিজের পঞ্চম টেস্ট। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পর ভারতীয় দুই তারকা ক্রিকেটার কোহলি ও বুমরার সঙ্গে ঝগড়ার ব্যাপারে মুখ খুললেন কনস্টাস। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় এক পডকাস্ট চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুমরার ব্যাপারে কনস্টাস বলেন,‘ওহ। আমি খুব একটা ভড়কে যায়নি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে উজি (উসমান খাজা) আউট হয়ে গেলেন। তিনি (বুমরা) আমার থেকে সময় কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন। খুব সম্ভবত আমার দোষ এখানে। তবে ক্রিকেটে এমনটা হয়েই থাকে। বুমরাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
কোহলির সঙ্গে কনস্টাসের লেগেছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) বক্সিং ডে টেস্টে। যেটা ছিল সিরিজের চতুর্থ টেস্ট এবং কনস্টাসের অভিষেক ম্যাচ। কনস্টাসকে ধাক্কা মেরে ভীষণ সমালোচিত হয়েছিলেন কোহলি। এমনকি কোহলির সঙ্গেও ১৯ বছর বয়সী অজি ক্রিকেটারের তর্কযুদ্ধ জমে ওঠে। এমসিজি টেস্টে কী ঘটেছিল, সে নিয়ে কনস্টাস বলেন, ‘কোহলির সঙ্গে ম্যাচ শেষে কথা হয়েছিল। খুবই অল্প বয়স থেকে তাঁকে (কোহলি) যে আদর্শ মনে করি, তাঁকে সেটা বলেছিলাম। যখন তিনি ব্যাটিং করছিলেন, আমি বলছিলাম, ওয়াও কোহলি ব্যাটিং করছেন। আমার পরিবারের সবাই কোহলিকে পছন্দ করেন। তিনি তার ব্যাটিং দিয়ে খেলাটা বদলে দিয়েছে।’
দর্শকঠাসা এমসিজিতে অভিষেক ইনিংসেই কনস্টাস তাণ্ডব চালান ভারতীয় বোলারদের ওপর। ৬৫ বলে ৬০ রান করেন অস্ট্রেলিয়ার এই তরুণ ক্রিকেটার। বুমরাকে রিভার্স স্কুপে ছক্কাও মেরেছেন কনস্টাস। ভারত সিরিজে অভিষেক নিয়ে ১৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার বলেন,‘আমি খুব শান্ত ছিলাম। মা-বাবা এবং সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তবে অবশ্যই এটা দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়াম ছিল এবং ব্যাটিংয়ের সময় খাজা যা বললেন, তাতে আরও বেশি রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম। তবে আমি সেভাবে অনুভব করিনি। অভিষেকটা দারুণ ছিল এবং ম্যাচ দুটি জিতে ভালো লেগেছে।’ মেলবোর্ন ও সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া ১৮৪ রান ও ৬ উইকেটে জিতে ১০ বছর পর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি নিজেদের করে নিয়েছে।