চাঁদাবাজির অভিযোগে পাবনায় দ্রুত বিচার আইনের মামলায় সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মুস্তাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে শামসুল হক টুকুকে কারাগার থেকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শামসুল হক টুকু বলেন, ‘আল্লাহ যেখানে রাখে ভালোই রাখে। আপনারা ভালো থাকেন। দেশ ভালো থাকুক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ুক। পাবনাবাসী ভালো থাকুক।’
উল্লেখ্য, বেড়া পৌরসভার বৃশালিখা মহল্লার ব্যবসায়ী মির্জা মেহেদি হাসান বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর পাবনার আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, তাঁর ভাই সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন, টুকুর ছেলে সাবেক পৌর মেয়র আসিফ শামস রঞ্জনসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আরও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ৬ মে সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুসহ অন্যরা ব্যবসায়ী মির্জা মেহেদি হাসানের মার্কেট, জমি দখল করে তাঁর কাছে চাঁদাবাজি করেন।
এ ছাড়া ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর গত ১০ ও ১২ সেপ্টেম্বর টুকুর দোসররা একইভাবে চাঁদাবাজিসহ বাদীকে জমিতে যেতে দেননি। এসব ঘটনায় তাঁর অন্তত ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে মামলায়। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বেড়া থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেড়া থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘তদন্ত শেষে ১১ জনকে অভিযুক্ত করে গত বছরের ২৪ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।’
জানতে চাইলে টুকুর আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, ‘বাদী যে তারিখ ও সময় উল্লেখ করে মামলা করেছেন, দেখা গেছে, সেই সময় শামসুল হক টুকু সেনাবাহিনীর কাস্টডিতে ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। অতএব এটি একটি ভিত্তিহীন মামলা। যার প্রাথমিক সত্যতা নেই। অসত্য ঘটনাকে অবলম্বন করে শুধু তাঁকে হয়রানি করতে মামলাটি করা হয়েছে।’