হোম > ছাপা সংস্করণ

নষ্ট হচ্ছে পাণ্ডুলিপি

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ৪৩
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৪১

রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে নষ্ট হচ্ছে কয়েক হাজার মূল্যবান পুঁথির পাণ্ডুলিপি। সংরক্ষণের অভাবে প্রাচীন এসব পাণ্ডুলিপি নষ্ট হতে বসেছে। এগুলো এখন প্রদর্শনও করা হয় না। স্টোর রুমের শেলফে পড়ে আছে পাণ্ডুলিপিগুলো। এসব পুঁথির ডিজিটাল কপিও নেই।

জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রথম এই জাদুঘরে প্রস্তর ও ধাতব প্রত্ন ভাস্কর্য; টেরাকোটা, মুদ্রা ও পাণ্ডুলিপি; ধাতবসামগ্রী এবং শিলালিপি মিলে ১৯ হাজারের মতো প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। স্থান সংকুলান না হওয়ায় সিংহভাগই রাখা হয়েছে স্টোর রুমে। প্রাচীন পুঁথির পাণ্ডুলিপিগুলো রাখা হয়েছে একটি ঘরে। সেগুলোও প্রদর্শনের জন্য নয়। যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে এগুলো নষ্টের পথে। কিছু কিছু পাণ্ডুলিপি এর মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।

জাদুঘরের তথ্যমতে, এখানে সাড়ে পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন পুঁথিসাহিত্যের পাণ্ডুলিপি আছে। এগুলোর অধিকাংশ সংস্কৃত, প্রাকৃত ও আদি বাংলা ভাষায় রচিত। এর মধ্যে সংস্কৃত আছে ৩ হাজার ৯০০টি, আর বাংলা ১ হাজার ৭০০টি। সবচেয়ে বেশি আলোচিত ১২৭৩ খ্রিষ্টাব্দ এবং ত্রয়োদশ শতাব্দীর কোনো এক সময়ের তালপাতায় লিখিত ও রঙিন চিত্রকর্মে শোভিত দুটি অষ্ট সাহস্রিকা প্রজ্ঞা পারমিতা পাণ্ডুলিপি। এগুলোর মধ্যে মাত্র ১২টি প্রদর্শিত হচ্ছে। বাকিগুলো আছে জাদুঘরের স্টোর রুমে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এ জাদুঘরের পাণ্ডুলিপির ঘরে গিয়ে দেখা যায়, ২৮টি শেলফে প্রাচীন সাহিত্যের নিদর্শন সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো কোনোটি এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ২৮ নম্বর শেলফে দেখা যায়, সেটিতে তালপাতার পুঁথি। তবে ঘুণে ধরেছে। প্রতিটি পাতায় রয়েছে ঘুণে খাওয়া ফুটো। হাজার বছরের এসব ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।

এগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘জাদুঘরে আমাদের অনেক নিদর্শন আছে। এগুলো কোনো কোনোটি আবার বিশ্বজোড়া পুঁথি। কিন্তু এগুলো তালপাতা ও অন্যান্য উপকরণের হওয়ার কারণে এখন নষ্টের পথে। তবে এগুলো আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেখাতে হবে। প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। তাই এগুলোর ডিজিটাল কপি করা প্রয়োজন।’

জাদুঘরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আলী রেজা মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘সব প্রত্ন নিদর্শন স্টোর রুম থেকে বের করে ডিসপ্লের জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান দেওয়া হয়েছে। এ জন্য মূল ভবনের বাইরে ফাঁকা জায়গায় হাইরাইজ বিল্ডিং নির্মাণ বা মূল ভবনের পেছনে পরিচালকের বাসভবনের ওপরে বহুতল ভবন নির্মাণ করার জন্য মাপজোখ করা হয়েছে। দ্রুতই এটি বাস্তবায়িত হবে। তখন সব পাণ্ডুলিপিই প্রদর্শন করা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি জিনিসেরই একটি মেয়াদকাল আছে। আমাদের এখানকার পুঁথিগুলো নষ্ট হচ্ছে। একটি ডিজিটাল স্ক্যানারও চেয়েছি। আশা করছি সেটা পাব।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি