Ajker Patrika
হোম > বিশ্লেষণ

নির্বাচনের পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ

অনলাইন ডেস্ক

নির্বাচনের পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বর্জনের পরও রোববার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পঞ্চম মেয়াদ নিশ্চিত করেছেন। ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির এই নির্বাচনে একদলীয় রাষ্ট্রের অভিযোগ নিয়ে শেখ হাসিনার বিজয় জাতির জন্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে দাবি করে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস। 

নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৩ অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিকে ১৭.১৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি, ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের চলতি হিসাব ঘাটতিসহ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে আসে।

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণের বিষয়ে বলা হয়েছে, কৌশলগতভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং ভারতের প্রতিবেশী হিসেবে অবস্থান করা বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তীর্ণ হওয়া। আর ২০২৬ সালের পরও শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্য সুবিধার অধীনে ৭৩ শতাংশ রপ্তানিসহ এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করতে সহায়তা করেছে। 

যেহেতু বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে মর্যাদা পেতে চায় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখে, সেহেতু আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জটিলতাগুলো মোকাবিলা করতে গিয়ে অর্থনৈতিক জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে এই সরকার।

এই অবস্থায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বলে মত দিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস। 

নিবন্ধে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করা এবং ভিন্নমত দমন করার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছে। বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে গৃহবন্দী খালেদা জিয়া নির্বাচনকে একটি ছলনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, ফলাফল মানতে অস্বীকার করেছেন। 

এই অবস্থায় বিরোধীদের উত্থাপিত উদ্বেগগুলো মোকাবিলা করা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করা নতুন সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। 

আর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৬.৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসা বাংলাদেশকে জরুরি কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত দেয়। 

কৌশলগতভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অবস্থান এবং বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যা নিয়ে গর্ব করা বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কর্মসংস্থানের একটি প্রাথমিক উৎস হিসেবে কৃষি রয়ে গেলেও দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক উৎপাদনকারী হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ পোশাকই প্রাথমিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয়। 

এই অবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তটি ২০২৬ সালের পরও শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশ বাড়াতে বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। বিভিন্ন কারণে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর শুল্ক সুবিধা হারানোরও আশঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে সেই সময়ের আগপর্যন্ত আর কোনো ঝামেলা না হলে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করতে থাকবে, যা দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে। 

মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পর বাংলাদেশ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মতো উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য আলোচনা করেছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শুল্ক সুবিধা পাওয়ার ফলে বাংলাদেশ ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা পায়। দেশের ৭৩ শতাংশের বেশি রপ্তানি এই সুবিধার আওতাধীন।

বর্তমানে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এলডিসিবিষয়ক বিশেষ বিধান ২০২৬ সালের পরও সম্প্রসারণের জন্য এলডিসি উপকমিটিতে আলোচনা চলছে।

কী কারণে ইউক্রেনে আক্রমণ করেছিলেন পুতিন

মাত্র ১৩ দেশে নারী নেতৃত্ব, বেশি হলে কি বিশ্বে শান্তি আসবে

ভেঙে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক এক মেরু বিশ্ব, বহু মেরু নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ–অনিশ্চয়তা

ট্রাম্পের অরাজক শাসনে অস্থির যুক্তরাষ্ট্র, টালমাটাল বিশ্ব

ভারতের আকাশে রুশ-মার্কিন দ্বৈরথ

মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করায় ইউক্রেনের পরিণতি কী হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর শঙ্কা, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকে চীনের আধিপত্য বাড়ছে কি

আমেরিকা ছাড়া শুধু ইউরোপ কি পারবে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে

প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র-নির্ভরতা কমাতে কতটা সক্ষম ইউরোপ

ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্দ্বে যুদ্ধ জয়ের চেয়েও বড় বিজয় পুতিনের