Ajker Patrika
হোম > বিশ্লেষণ

ইরানকে চাপে রাখতে দুর্বল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা

হুমায়ুন কবির, ঢাকা 

ইরানকে চাপে রাখতে দুর্বল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা

ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা ইব্রাহিম রাইসি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তেহরানের সম্পর্কোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রতি চাঙা করার পর বেইজিংয়ে গত সপ্তাহে সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হওয়ার বিষয়টি রাইসির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অন্যতম প্রমাণ বলেই সবাই মনে করছেন।

প্রকৃত প্রস্তাবে নিজের পররাষ্ট্রনীতির কোনো পরিবর্তন না করেই ইরান যে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতা কিছুটা হলেও শিথিল করতে পেরেছে, সেটিই হলো বড় সফলতা বলে দেখছেন সবাই। এমনকি ইরানকে চাপে রাখা কিংবা বিচ্ছিন্ন রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান প্রচেষ্টাও যে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে তা স্পষ্ট হয়ে আসছে। ফলে বিষয়টিকে ইরান বাড়তি পাওনা হিসেবে দেখতে পারে।

নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির সিনিয়র বিশ্লেষক ক্যারোলিন রোজ আল জাজিরাকে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন করার জন্য ইরান এখনো ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত এবং ইউরোপের অনেকটা অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন। কাজেই আঞ্চলিক নিরাপত্তাকাঠামো সংহত করতে রিয়াদ ও তেহরানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃস্থাপন একটি সঠিক পদক্ষেপ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে ওই অঞ্চল থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলতে চায়। 

এদিকে সৌদি আরব দেশটির আন্তসীমান্ত হামলায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আর সমর্থন না জোগানোর মতো কিছু নিশ্চয়তা ইরানের কাছ থেকে পেয়েছে। তা সত্ত্বেও সৌদি আরবসহ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মতো আঞ্চলিক দেশগুলো ইরানকে এখনো হুমকি মনে করতে পারে।

তিউনিসিয়ায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত গর্ডন গ্রে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘লেবাননে হিজবুল্লাহ কিংবা সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদকে ইরান সমর্থন করা বন্ধ করবে—এটা কল্পনা করা কঠিন। শুধু তা-ই নয়, দেশটি সব সময় একটি নমনীয় ইরাক চাইবে।’

রোজ আরও বলেন, আরব রাষ্ট্রগুলোয় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতি তেহরানের সমর্থনের ইস্যুটি তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আবার রিয়াদও হঠাৎ করেই ইরানের সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে গোলাপি চশমার মধ্য দিয়ে দেখতে শুরু করেছে, তা নয়। বরং ইরানের আঞ্চলিক ভঙ্গি এবং পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যেমনটা উদ্বেগ রয়েছে, তেমনটা সৌদি আরবেরও আছে।

সৌদি আরব ও ইরানের সাম্প্রতিক সম্পর্কোন্নয়নের আলোকে কিছু বিশ্লেষক অবশ্য ইয়েমেনে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে আশা করছেন। তবে এটা ধরে নেওয়া উচিত নয় যে, রিয়াদ-তেহরান সম্পর্কের উষ্ণতা ইয়েমেনে সংঘাতের দ্রুত অবসান ঘটাবে। এখানে অন্য কারণগুলোও বিবেচনার দাবি রাখে। 

এসব কারণের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তেহরান নিশ্চয়ই এককভাবে হুতিদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, যা সৌদি আরবের নিরাপত্তা উদ্বেগকে প্রশমিত করবে।

এ প্রসঙ্গে গ্রে যথার্থই বলেছেন, ‘কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন ইয়েমেনের যুদ্ধ থেকে সৌদি আরবকে বের করে আনতে সাহায্য করতে পারে, তবে হুতিদেরও নিজস্ব কিছু অ্যাজেন্ডা রয়েছে। কাজেই সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।

সব মিলিয়ে রিয়াদ-তেহরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক সংহতি সুদৃঢ় হওয়া এবং ইরানের বিচ্ছিন্নতা ঘুচবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করছেন বিশ্লেষকেরা। 

(আল জাজিরা অনলাইন অবলন্বনে)

মাত্র ১৩ দেশে নারী নেতৃত্ব, বেশি হলে কি বিশ্বে শান্তি আসবে

ভেঙে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক এক মেরু বিশ্ব, বহু মেরু নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ–অনিশ্চয়তা

ট্রাম্পের অরাজক শাসনে অস্থির যুক্তরাষ্ট্র, টালমাটাল বিশ্ব

ভারতের আকাশে রুশ-মার্কিন দ্বৈরথ

মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করায় ইউক্রেনের পরিণতি কী হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর শঙ্কা, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকে চীনের আধিপত্য বাড়ছে কি

আমেরিকা ছাড়া শুধু ইউরোপ কি পারবে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে

প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র-নির্ভরতা কমাতে কতটা সক্ষম ইউরোপ

ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্দ্বে যুদ্ধ জয়ের চেয়েও বড় বিজয় পুতিনের

সেকেন্ড রিপাবলিক: সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার নজির বেশি