Ajker Patrika
হোম > বিশ্লেষণ

ইন্দোনেশিয়ার সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট চীন নাকি আমেরিকাপন্থী

অনলাইন ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়ার সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট চীন নাকি আমেরিকাপন্থী

ইন্দোনেশিয়ার নির্বাচনের পূর্ণ ফল প্রকাশের জন্য অন্তত ৩৫ দিন সময় লাগবে। তবে প্রাথমিক ফলাফলের ভিত্তিতেই দেশটির সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাবেক জেনারেল ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রবোও সুবিয়ান্তোই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশের শীর্ষ পদে প্রবোওর আরোহণ জাকার্তার বৈদেশিক নীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রবোও তাঁর দেশের সশস্ত্র বাহিনী ও আন্তর্জাতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবেন। আর পরাশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমেরিকা কিংবা চীনের পক্ষ নেওয়ার মতো বিষয়গুলো তিনি এড়িয়ে যেতে থাকবেন। 

বিশেষজ্ঞরা এটাও মনে করেন, ইন্দোনেশিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যে-ই হোন না কেন, দেশটির পররাষ্ট্র নীতি হবে অনেকটা ‘একলা চলোর’ মতো। বিশ্বের চতুর্থ-জনবহুল দেশ হওয়ার ফলেই এই ধরনের আত্মবিশ্বাস আছে দেশটির। 

ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অফ পিস (ইউএসআইপি)-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান হার্ডিং বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া নিজেকে একটি আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসেবে দেখে। এই অবস্থান থেকে দেশটি তার নিজের পছন্দ মতো বড় পরাশক্তিগুলোকে জড়িত করতে পারে।’ 

হার্ডিং মনে করেন, প্রাবোও অর্থনৈতিক কূটনীতিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর নীতিই অব্যাহত রাখবেন। তবে বিশ্ব মঞ্চে ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকাকে আরেকটু উন্নীত করার চেষ্টা করবেন তিনি। 

আরেকটি বিষয় হলো—ইন্দোনেশিয়ার সাবেক একনায়ক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর জামাতা প্রাবোওকে একসময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং প্রায় দুই দশকজুড়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ ছিলেন। মানবাধিকার রেকর্ড খারাপ হলেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের তীব্র প্রতিযোগিতায় দেশটিকে চীনের প্রভাবমুক্ত রাখতে ওয়াশিংটন প্রবোওর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে হার্ডিং বলেন, ‘ওয়াশিংটন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আগ্রহের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখবে। বিশেষ করে, যদি তিনি বিশ্বে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী হন। 

তারপরও ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট উইডোডোর নীতি থেকে প্রবোওর বিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। অন্তত এখনো এমন আভাস পাওয়া যায়নি। এর কারণ হলো—আসিয়ানভুক্ত বেশির ভাগ দেশের মতোই, চীনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এই সম্পর্ক জাকার্তাকে চীন-মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওয়াশিংটনের পাশে দাঁড়ানো থেকে বিরত রেখেছে। 

বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, চীনের সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককেও অগ্রাধিকার দেবেন প্রবোও। আঞ্চলিক এবং সামুদ্রিক বিরোধ থাকলেও ‘চীন ইন্দোনেশিয়ার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রধান নিরাপত্তা অংশীদার’-এর নীতিতে প্রবোও অটল থাকবেন। 

হার্ডিং বলেন, ‘দুটি পরাশক্তির সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রাবোও আত্মবিশ্বাসী।’ 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছরের মেয়াদে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণ শুরু করেছিলেন প্রবোও। আগামী অক্টোবরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর তা আরও জোরালো হতে পারে। 

একই সময়ে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেন, সাবেক জেনারেলের পররাষ্ট্র নীতিগুলো সর্বদা পরিষ্কার নাও হতে পারে। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়ান চংয়ের ভাষায়—‘প্রাবোও বলেছেন, তিনি ধারাবাহিকতা চান। কিন্তু তাঁর মতিগতি আগে থেকে ধারণা করা খুব কঠিন।’

চং মনে করেন, প্রবোওর অধীনে ইন্দোনেশিয়া পরাশক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে সুবিধা অর্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এবং সম্ভবত দীর্ঘমেয়াদি সুবিধার বদলে তাৎক্ষণিক লাভের দিকে বেশি মনোযোগ দেবে।

ভারতের আকাশে রুশ-মার্কিন দ্বৈরথ

মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করায় ইউক্রেনের পরিণতি কী হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর শঙ্কা, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকে চীনের আধিপত্য বাড়ছে কি

আমেরিকা ছাড়া শুধু ইউরোপ কি পারবে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে

প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র-নির্ভরতা কমাতে কতটা সক্ষম ইউরোপ

ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্দ্বে যুদ্ধ জয়ের চেয়েও বড় বিজয় পুতিনের

সেকেন্ড রিপাবলিক: সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার নজির বেশি

একযোগে দুই পরাশক্তির চাপে ইউক্রেন

আইএমএফ ও শ্রীলঙ্কার স্বার্থের মধ্যে যেভাবে ভারসাম্য রেখে চলেছেন দিসানায়েকে

ভারতে ইলন মাস্কের টেসলা, উদ্বিগ্ন দেশীয় গাড়ি নির্মাতারা