হোম > বিশ্লেষণ

আলোচনায় ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতে ব্রিটিশদের দায়

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পর এবার তেল আবিব সফর করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। শুধু তাই নয়, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের বিজয়ও কামনা করেছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার তেল আবিবে পৌঁছে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের প্রতি সমবেদনা জানান সুনাক। সাক্ষাৎ করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে। দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ইসরায়েলের পর মিসর ও কাতারেও যেতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। 

এ অবস্থায় ইসরায়েল সফর করা বাইডেনের পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে ঋষি সুনাকের সফর নিয়ে চলছে চুলচেরা নানা বিশ্লেষণ। এসব বিশ্লেষণে আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের বিষয়টি। 

এ বিষয়ে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ফিলিস্তিনিকে প্রশ্ন করা হয় যে, তাঁদের দুর্দশার শিকড় কোথায় লুকিয়ে আছে—তবে বেশির ভাগই এর জন্য দায়ী করবেন আর্থার বেলফোরকে। 

বিষয়টিকে আরও ভালো করে বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে ১৯১৭ সালে। সে সময় ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন জেমস আর্থার বেলফোর। ওই বছরের ২ নভেম্বর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য কথিত আবাসভূমি বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ব্রিটেনের অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছিলেন বেলফোর। সেই ঘোষণাই পরে ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিত হয়। তাই এই ঘোষণাকেই ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের সূচনা হিসেবে গণ্য করা হয়। 

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যকে পরাজিত করার পর থেকে ফিলিস্তিন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্রিটেনের হাতে। এই অঞ্চলটিতে তখন কিছু সংখ্যক ইহুদি বসবাস করলেও বেশির ভাগই ছিলেন আরব। 

বেলফোরের ঘোষণার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিপীড়নের শিকার ইহুদিরা দলে দলে ফিলিস্তিনে আসতে শুরু করে। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের বাহিনীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ইহুদিরা সেখানে বানের জলের মতো আসতে থাকে। 

 ১৯৪৮ সালে ইহুদি নেতারা ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয় ব্রিটেন। এ অবস্থায় ইহুদি মিলিশিয়ারা স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার তাণ্ডব শুরু করে। অসংখ্য ফিলিস্তিনি সে সময় পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। 

জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে সে সময় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনি বস্তু চ্যুত হয়। তাঁদের অনেকেই জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। বাকিরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের কিছু এলাকায় টিকে থাকার সংগ্রাম শুরু করে। 

ফিলিস্তিনিরা জোরপূর্বক এই উচ্ছেদকে ‘নাকবা’ বলে ডাকে। এই শব্দটির অর্থ হলো—বিপর্যয়। 

 ১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিনের বাকি সব অঞ্চলই দখল করে নেয় ইসরায়েল। তবে তাদের এই পদক্ষেপ এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। 

এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, জন্মের সূত্রেই ইসরায়েলের সঙ্গে ব্রিটেনের একটি গভীর সংযোগ এবং দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। তবে কিছু বৈদেশিক নীতির বিষয়ে এই দুটি মিত্র দেশ একমত হতে পারে না। 

গত মার্চে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যের লন্ডন সফর করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাতের আলোচনায় সবার ওপরে ছিল ইরান প্রসঙ্গ। ইসরায়েলের এক নম্বর শত্রু ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন আখ্যা দেওয়া থেকে বিরত ছিল ব্রিটেন। নেতানিয়াহুর ওকালতির পরও ইরানি ওই বাহিনীকে ব্রিটেন সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়নি। উপরন্তু নেতানিয়াহুর বিতর্কিত বিচারিক সংশোধনের বিষয়ে আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সুনাক। 

এ ছাড়া ইসরায়েল ও ব্রিটেনের মধ্যে অতীতে কিছু তিক্ত মুহূর্ত এসেছে। ১৯৮২ সালে লেবাননে আগ্রাসন চালালে ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ব্রিটেন। সম্পর্কের ওই টানাপোড়েনের মধ্যেই ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বিগিন আর্জেন্টিনার সঙ্গে একটি অস্ত্র চুক্তি করে বসেন। সেই বছরই ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়ে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ব্রিটেনের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।

হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ পাকিস্তান, সম্পর্কের রসদ ভারতবিরোধিতা

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ে মার্কিন ‘দুমুখো নীতি’ শোধরাবেন কি ট্রাম্প

দিনে শান্তির কথা রাতে গাজায় হামলা, ইসরায়েল কি আদৌ যুদ্ধবিরতি চায়

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েন: সংকটে রোগী আর শিক্ষার্থীরা

বুলডোজার যেভাবে মোদির ভারতের প্রতীক হয়ে উঠল

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কি তবে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে মোড় নেবে

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে হঠাৎ কেন এত খাতির করছে ভারত

ট্রুডোর প্রতি কানাডীয়দের ভালোবাসা কীভাবে ফুরিয়ে গেল

ট্রাম্প কি সত্যিই গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান, কিন্তু কেন

ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম থেকে ফ্যাক্ট-চেকিং সরিয়ে জাকারবার্গ কি ট্রাম্পের বশ্যতা স্বীকার করলেন

সেকশন