হোম > বিশ্লেষণ

রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের চুক্তি সারা, ট্রাম্পও কি জান্তার সঙ্গে হাত মেলাবেন

অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা ও মস্কোর সঙ্গে নেপিদোর ঘনিষ্ঠতার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্ন জোরেশোরেই উচ্চারিত হচ্ছে যে, ট্রাম্প মিয়ানমারে কার পক্ষে যাবেন। ছবি: ইরাবতীর সৌজন্যে

সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প–পুতিন দৃশ্যমান মৈত্রী এবং জান্তা সরকারের সঙ্গে রাশিয়ার সখ্যর প্রেক্ষাপটে অনেকে আশঙ্কা করছেন, মিয়ানমারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আসতে পারে। গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ছিল মিয়ানমারের জান্তা সরকার তথা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের (এসএসি) শক্তিশালী সমালোচক, বিপরীতে গণতন্ত্রপন্থীদের সমর্থক। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে মার্কিন সহায়তার ওপর নির্ভরশীল মিডিয়া আউটলেটগুলোর জন্য এক বড় সংকট হাজির হয়েছে। পাশাপাশি, মার্কিন সহায়তা বন্ধ হওয়ার বিষয়টি থাই সীমান্তে থাকা মিয়ানমারের শরণার্থীদের জন্যও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনছে।

এখন প্রশ্ন হলো—ট্রাম্প কি মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে যোগাযোগের পদক্ষেপ নেবেন এবং ‘এসএসি’–এর সঙ্গে মিত্রতার সূত্র খুঁজতে শুরু করবেন? এ ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি হতে পারে, এসএসি–কে আলাদা করা এবং এর নিন্দা করা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে কেবল চীনের দিকে আরও ঠেলে দেবে। মিয়ানমারের আগের জান্তা সরকারের সময়ও মার্কিন নীতি নির্ধারকদের মধ্যে এই ধারণা প্রবল ছিল। ট্রাম্প নিজেকে ‘ডিলমেকার’ হিসেবে প্রচার করতে চেষ্টা করেন এবং এর আগে তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে ‘যোগাযোগের’ চেষ্টা করেছিলেন। তিনি এখন রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ‘ডিল-মেকিং’–এর চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রচেষ্টা ফল প্রসব না করলেও, এটি পুতিনকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জোরদার করতে আরও উৎসাহিত করেছে।

ওয়াশিংটন–নেপিদো সন্ধি এখনো নিছক অনুমান। তবে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের সমর্থক, স্বাধীন সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের ট্রাম্পের এই আমলে যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তাঁদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করাই হয়তো মিয়ানমারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, হয়তো কৌশলগত আপসের বিনিময়ে এসএসি চীন থেকে নিজেকে দূরে রাখবে এবং সম্ভবত তেল ও গ্যাসের মতো অর্থনৈতিক সুবিধাও লাভ করবে।

গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রচার কখনোই ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিল না। পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের স্তুতি থেকে এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ট্রাম্প এবং তাঁর নিকটতম সহকর্মীদের তরফ থেকে বারবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি যে অসম্মান প্রদর্শিত হয়েছে তা থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

২০০০ সালের শুরুর দিকে মিয়ানমারের তৎকালীন জান্তা সরকার রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং দেশটির সামরিক সরঞ্জামের প্রধান ক্রেতা হয়ে ওঠে। তবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল মূলত চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য। এরপর, ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। নেপিদোর সামরিক শাসক গোষ্ঠী একাধিকবার ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। চলতি বছরের মার্চের শুরুর দিকে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং মস্কো সফরের সময় পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মিয়ানমারে একটি ছোট আকারের মডুলার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই করেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটম জানিয়েছে, প্ল্যান্টটির সক্ষমতা হবে ১০০ মেগাওয়াট এবং সেই সক্ষমতা তিন গুণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মিন অং–এর সফরের সময় পুতিন উল্লেখ করেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গত বছর ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নেপিদো ও মস্কো মিয়ানমারে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বন্দর এবং তেল পরিশোধনাগার নির্মাণসহ বিনিয়োগ সহযোগিতা নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। রাশিয়ার কূটনৈতিক এবং সামরিক প্রতিনিধিরা নেপিদোতে অনুষ্ঠিত সামরিক জান্তার বার্ষিক সশস্ত্রবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন এবং ২০২২ সালের আগস্টে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মিয়ানমার সফর করেন। সে সময় ‘নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক’ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

এটি স্পষ্ট যে, মিয়ানমারে রাশিয়ার পদচারণা কেবল আর্থিক লাভের জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করা যায় না। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং বরিস ইয়েলৎসিনের বিশৃঙ্খল শাসনের শুরুতে এশিয়ায় রাশিয়ার প্রভাব কমে গিয়েছিল। তবে এর প্রধান কারণ ছিল, ভারতের মতো পুরোনো মিত্র প্রতিরক্ষা সম্পর্কে বৈচিত্র্য আনতে শুরু করে। সে সময় রাশিয়া পূর্ব এশিয়ায় লাওস, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়াসহ অন্যান্য দেশে বন্ধু খুঁজতে শুরু করে। ইয়েলৎসিনের উত্তরসূরি পুতিন। তিনি সোভিয়েত পরাশক্তির জৌলুশ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন। তিনি চান ‘রাশিয়াকে আবার মহান করতে’। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন মস্কোর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বাসযোগ্য এশীয় মিত্র। এই প্রেক্ষাপটে, যারা মিয়ানমারে সেনাশাসনের অবসান দেখতে চান, ট্রাম্প সেসব শক্তিকে সমর্থন করবেন, এটি অত্যন্ত অসম্ভবই মনে হয়!

ট্রাম্পের রাশিয়া–প্রীতি বেশ পুরোনো এবং দেশটির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ দৃঢ়। এই সম্পর্কের সূত্রপাত ১৯৮৪ সালে। মার্কিন অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও বেস্ট সেলিং বইয়ের লেখক ক্রেইগ উঙ্গারের মতে, ‘ডেভিড বোগাতিন নামে এক ব্যক্তি সে সময় সদ্য নির্মিত ট্রাম্প টাওয়ারে গিয়ে ৬ মিলিয়ন ডলার নগদ জমা রাখেন। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন এবং পাঁচটি কন্ডোমিনিয়াম (আবাসিক ইউনিট) কিনে নেন। এফবিআই–এর নথির তথ্য অনুসারে, বোগাতিন রুশ মাফিয়ার সঙ্গে যুক্ত। এই কন্ডোমিনিয়ামগুলোর মালিক হিসেবে, বোগাতিন সেগুলো থেকে অর্জিত অর্থ পাচারের জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন।’

ট্রাম্প ১৯৮৭ সালে প্রথমবার মস্কো সফর করেন। এরপর থেকেই তৎকালীন সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মনোযোগের কেন্দ্রে পরিণত হন তিনি। ক্রেইগ উঙ্গার এবং দ্য গার্ডিয়ানের সাংবাদিক লুক হার্ডিংয়ের তথ্য অনুসারে, সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ট্রাম্পকে ‘সম্ভাব্য কার্যকর গোয়েন্দা সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করেছিল এবং তিনি ইচ্ছে করেই হোক বা না হোক, রাশিয়ার স্বার্থের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েন।

ফরেন পলিসির কলামিস্ট মাইকেল হার্শ ২০১৮ সালের ২১ ডিসেম্বরের সংখ্যায় লিখেছিলেন, ‘১৯৯০–এর দশকের শুরুতে, তিনি (ট্রাম্প) একাধিক বেপরোয়া ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পিতা ফ্রেড ট্রাম্পের ধনসম্পদের একটা বড় অংশ খরচ করে ফেলেছিলেন। তাঁর দুটি ব্যবসা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে ছিল আটলান্টিক সিটির ট্রাম্প তাজমহল ক্যাসিনো এবং নিউইয়র্কের প্লাজা হোটেল। এ ছাড়া, অর্থ সংকটের কারণে ট্রাম্প তাঁর প্রতিষ্ঠিত “ট্রাম্প শাটল” ১৯৯২ সালে বন্ধ করে দেন।’

মাইকেল হার্শ আরও লিখেন, যখন কোনো আমেরিকান ব্যাংক ট্রাম্পকে সহায়তা করে অনাগ্রহ দেখিয়েছিল, তখন বিদেশি অর্থ তাঁর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে, রাশিয়া ও সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর ধনী লোকেরা ট্রাম্পের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। এর মধ্যে—কাজাখস্তানে সোভিয়েত সরকারের কর্মকর্তা তেভফিক আরিফ এবং ধনাঢ্য রুশ ব্যবসায়ী ফেলিক্স সাতার অন্যতম। ফেলিক্স ১৯৯০–এর দশকে রুশ মাফিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আরিফ ও সাতার ‘বায়রক গ্রুপ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালাতেন। তাঁরা ট্রাম্প টাওয়ারে ট্রাম্পের কার্যালয়ের দুই তলা নিচেই অফিস ভাড়া নিয়েছিলেন। হার্শের মতে, ‘বায়রকের সাহায্যেই ট্রাম্প রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী থেকে ব্র্যান্ডার হিসেবে নিজেকে ব্যাপকভাবে বদলে নেন।’

রাশিয়ার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের বন্ধুত্বে কখনো ফাটল ধরেনি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হেলসিঙ্কিতে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় ট্রাম্পের কাছে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি কি নিজের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কথা বিশ্বাস করেন নাকি পুতিনের? তাঁর উত্তর ছিল বিস্ময়কর, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, এতে (নির্বাচন হস্তক্ষেপে) রাশিয়া নেই। আমি মনে করি না যে, এর কোনো কারণ আছে।’

এর মাধ্যমে ট্রাম্প আমেরিকার নিজস্ব ফেডারেল সংস্থাগুলোর চেয়ে পুতিনেই বেশি আস্থা রেখেছিলেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘শক্তিশালী ভাষায় বিবৃতি দিয়ে তৎকালীন হাউস স্পিকার পল রায়ান বলেছেন, ট্রাম্পকে বুঝতে হবে যে রাশিয়া আমাদের মিত্র নয়...যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে কোনো নৈতিক মিল নেই। দেশটি আমাদের মৌলিক মূল্যবোধ এবং আদর্শের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মস্কো ২০১৬ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে।’

আমেরিকার সংবাদমাধ্যম পলিটিকো ট্রাম্প প্রশাসনের বলা বক্তব্যের উদাহরণ তুলে ধরেছে, যেগুলো পুতিনের পক্ষাবলম্বনের মতো। ট্রাম্প প্রথমে পুতিনকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘এই ফোনকলের জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই...আমরা উভয়ই আমাদের জাতির মহান ইতিহাস নিয়ে চিন্তা করেছি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একসঙ্গে কত সফলভাবে লড়াই করেছি তা স্মরণ করেছি।’ এই ফোন কলের পর, ট্রাম্প পুতিনের চাওয়া মেনে নিয়ে ইউক্রেনে ন্যাটোর কোনো মিশন না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন, জেলেনস্কিকে অসম্মান করেন, কেবল ইউক্রেন নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও (ইইউ) শান্তি আলোচনায় বাইরে রাখেন এবং বরং রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌদি আরবে শর্তহীন বৈঠক করেন। ট্রাম্প আরও দাবি করেন, যুদ্ধ শুরু করেছে ইউক্রেন এবং সারা বিশ্বে গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন। পুতিন এই পরিস্থিতিতে এর চেয়ে বেশি খুশি আর হতে পারেন না। কারণ, এখন তাঁর একজন বিশ্বস্ত বন্ধু ও মিত্র হোয়াইট হাউসে আছেন!

এরপর আসে এক চমকপ্রদ খবর! ৭ মার্চ সবাইকে চমকে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি মেনে না নেন, তবে তিনি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপ করার কথা ভাবছেন। কিন্তু এক সময় ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা জন বোল্টন সিএনএনে ট্রাম্পের এই হুমকিগুলোকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ বলে উড়িয়ে দেন। ট্রাম্প ওই হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ইউক্রেনের সঙ্গে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ছি’ এবং আবারও বলেন, ‘আমি পুতিনকে বিশ্বাস করি।’

ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকের সময় জেলেনস্কি যে অপমানজনক ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণের শিকার হয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান এবং এস্তোনিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাইয়া কালাস প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, ‘আজ স্পষ্ট হয়ে গেল, মুক্ত বিশ্বের নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা আমাদের, ইউরোপীয়দের, দায়িত্ব।’

গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি যাদের ন্যূনতম আগ্রহ আছে, তাদের কাছে এটি পরিষ্কার হওয়া উচিত। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র যে নেতৃত্বের শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, ইউরোপ কি তা পূরণ করতে পারবে? সেই শূন্যতা বিশাল। কারণ, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হস্তক্ষেপের আগে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যে নিষ্ঠা ও উদারতার জন্য সম্মানিত ছিল, তার সমকক্ষ হওয়া সহজ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেই পরিমাণ সম্পদ নেই, যা যুক্তরাষ্ট্রের আছে। আর ইউরোপ যে সহায়তা দিচ্ছে, তার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ইউক্রেনের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইকে সমর্থন করা, যা গোটা ইউরোপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্ব এখন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত—মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তিগুলোর জন্য সামনে অত্যন্ত কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

লেখক: সুইডিশ সাংবাদিক বার্তিল লিন্তনে। তিনি একাধিক বই লিখেছেন। কৌশলগত এই পরামর্শদাতা প্রায় চার দশক ধরে এশিয়া নিয়ে লেখালেখি করছেন। তিনি কিছুদিন অধুনালুপ্ত ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ–এর বার্মা সংবাদদাতা এবং সুইডিশ দৈনিক সোভেনস্কা ডাগব্লাডেট এবং ডেনমার্কের পলিটিকেনের এশিয়া সংবাদদাতা ছিলেন।

থাইল্যান্ড–ভিত্তিক মিয়ানমারের নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতী থেকে নিবন্ধটি অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

টেসলা ও স্টারলিংক ভারতে কতটা সুবিধা করতে পারবে

ট্রাম্প, বিটকয়েন এবং মার্কিন ডলারের ভবিষ্যৎ

নরেন্দ্র মোদির ‘সবার আগে প্রতিবেশী’ নীতি কেন ব্যর্থ হলো

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কোন পক্ষকে কতটা ছাড় দিতে হবে

নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ—পরিণাম কী হবে

যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা কী আসন্ন

চ্যাটবট থেকে বুদ্ধিমান খেলনা: এআই বাজারে অভাবনীয় আধিপত্যের পথে চীন

ঐতিহ্য ভুলে মার্কিন স্বার্থের কাছে নতি স্বীকার করছে ভারত

সৌদি আরব কেন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছে

কী কারণে ইউক্রেনে আক্রমণ করেছিলেন পুতিন