আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ঘড়ির কাঁটা দুই বছর পিছিয়ে নিয়ে করোনার শুরুর দিকে চলে যাওয়া যাক। ২০২০ সালের জানুয়ারি। চীনের উহানে ‘অচেনা’ এক ভাইরাসে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। সবার ভাগ্যটা তখন বিজ্ঞানী, গবেষক এবং স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের হাতে ছেড়ে দিলে কেমন হতো? রাজনৈতিক নেতাদের পরিচালিত বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে এর চেয়ে ঢের ভালো হতো। এমনটাই মনে করেন হংকং-এপেক ট্রেড পলিসি স্টাডি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড ডোডওয়েল। সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত তাঁর লেখায় উঠে এসেছে সেই চিত্র।
দুই বছরে শনাক্ত প্রায় ৩৪ কোটি। মোট মৃত্যু কবেই অর্ধকোটি ছাড়িয়েছে। পঞ্চম ঢেউয়ের শঙ্কা দেখাচ্ছে অতি সংক্রামক ওমিক্রন। তবে বিশ্ববাসী এর চেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে তাঁদের জীবনে করোনার প্রভাব নিয়ে। মানসিকতায় হানা দিয়েছে চাপ, হতাশা, অধৈর্য। দিনের পর দিন বেড়েছে আতঙ্ক। এর অন্যতম কারণ চাকরি হারানো, হুমকির মুখে থাকা ক্যারিয়ার, আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং দ্রুত এই অবস্থা থেকে ফিরে আসার কোনো আশার বাণী না থাকা।
তবে একে জ্ঞানের স্বল্পতা কিংবা বিজ্ঞানের হার বলা যাবে না। মোটা দাগে বললে বলতে হবে ‘রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা’। সংক্রমণের প্রথম থেকেই তথ্য গোপন করে আসছে চীন প্রশাসন। উৎসের ব্যাপারে তথ্য দিতেও গড়িমসি করছে দেশটির সরকার। করোনায় কোন নীতিতে দেশ চলবে এখনো তা ঠিক করতে পারেনি মার্কিন প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সিদ্ধান্ত আটকে যাচ্ছে আদালতে। অলিম্পিক নিয়ে জাপান সরকারের এবং নোভাক জোকোভিচকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিয়েছে সিদ্ধান্ত কতটা ‘অপরিপক্ব’ হতে পারে। লকডাউনের সময় ডাউনিং স্ট্রিটে ‘পার্টি’ করে নেতাদের আসল চরিত্রের একটি প্রতিচ্ছবিই যেন দেখিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
এর বাইরে করোনায় গণতন্ত্র হারিয়েছে তার মূল চিত্র। ব্যক্তিগত এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা বন্দী হয়েছে নেতাদের হাতে। কিন্তু কথা ছিল সব তথ্য পেয়ে, তা বিশ্লেষণ করে, কার্যকর সামাজিক দূরত্ব এবং টিকাদান কার্যক্রম নিশ্চিত করেই এক সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার। তবে আশার কথা হচ্ছে, করোনায় মৃত্যু কমানো গেছে। ধীরে ধীরে সাধারণ ফ্লু জাতীয় রোগে পরিণত হচ্ছে। এ ভাইরাস আমাদের সঙ্গে থেকেই যাবে, এমন ধরে নিয়ে এগিয়ে গেলেই বরং ভালো।
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন: