অনলাইন ডেস্ক
২০১১ সালে টেক্সাসের অস্টিন থেকে আসা একজন ইগল স্কাউট রস উলব্রিচট ‘সিল্ক রোড’ প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি অনলাইন কালোবাজার, যেখানে মাদক, অর্থ পাচার এবং সাইবার অপরাধমূলক লেনদেন পরিচালিত হতো। ২০১৩ সালে তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত সাইটটি কয়েক মিলিয়ন ডলারের রাজস্ব সংগ্রহ করেছিল। মাদক, বিশেষ করে মেথামফেটামিন, কোকেন এবং হেরোইনের ব্যবসায় সিল্ক রোড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল।
উলব্রিচটের নাম আলোচনায় আসে তার ছদ্মনাম ‘ড্রেড পাইরেট রবার্টস’-এর কারণে। এই নামেই তিনি নিজেকে পরিচিত করাতেন। জনপ্রিয় সিনেমা দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড-এর একটি চরিত্র ছিল এই নামে।
২০১৫ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তবে তাঁর অনলাইন কালোবাজার সিল্ক রোড তত দিনে বিটকয়েনের প্রথম উল্লেখযোগ্য ব্যবহারিক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছিল। এটি তাঁকে ক্রিপটো সম্প্রদায়ের কাছে নায়কে পরিণত করে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে বিটকয়েনকে ‘প্রতারণা’ বলেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর হঠাৎ করেই ক্রিপটোকারেন্সির প্রতি সমর্থন দেখান তিনি। এমনকি রস উলব্রিচটকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেই তিনি উলব্রিচটকে ক্ষমা ঘোষণা করেন।
ট্রাম্প উলব্রিচটের মাকে বলেন, ‘তোমার ছেলে রসকে আমি পুরোপুরি ক্ষমা করেছি। এটি একটি ন্যায়বিচারের মুহূর্ত।’
ক্রিপটো সম্প্রদায়ের অনেকেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, উলব্রিচটের শাস্তি ছিল অস্বাভাবিকভাবে কঠোর। অনেকের মতে, স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সরকারের বিরোধিতার জন্য তাঁকে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
একজন সমর্থক মন্তব্য করেছেন, ‘উলব্রিচট কিছু শাস্তি পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, তবে তাঁর শাস্তির মাত্রা অমানবিক ছিল। এটি ছিল একটি নিষ্ঠুর উদাহরণ।’
ট্রাম্প শুধু উলব্রিচটকে মুক্তি দিয়েই থেমে থাকেননি। তিনি একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এর মাধ্যমে তিনি একটি ‘ফেডারেল ডিজিটাল কারেন্সি রিজার্ভ’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। এটি বিটকয়েন এবং অন্যান্য ক্রিপটোকারেন্সিকে আরও বিস্তৃত করতে সাহায্য করবে। এমনকি নিজস্ব ক্রিপটোকারেন্সিও চালু করেছেন ট্রাম্প। তাঁর এই মুদ্রাটি বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।
ক্রিপটো সম্প্রদায়ের অনেকেই ট্রাম্পের এই নতুন নীতিগুলোকে ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখছেন। তবে ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই দৃষ্টিভঙ্গি কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়ে গেছে।