ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানা থেকে ৫০০ গজ দূরে কুয়েতপ্রবাসী নাইমুল ইসলামের গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার ফালগুনকরা মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আলম। এ ঘটনায় প্রবাসী নাইমুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে নাইমুল ইসলাম উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১৯ মাস পর গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে কুয়েত থেকে ঢাকার বিমানবন্দরে নামেন তিনি। এরপর রাত পৌনে ১টার দিকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে (চট্ট মেটো চ-১১-২৭৮৬) বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রাত ২টার পর তাঁরা মেঘনা সেতুর পাশে একটি হোটেলে যাত্রাবিরতি শেষে আবার রওনা হন এবং ভোররাত ৬টা ২০ মিনিটের দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ফালগুনকরা মাজার এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি অজ্ঞাতনামা পিকআপ তাঁদের মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়।
এ সময় চালক শাহাদাত হোসেন মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করলে ৮-১০ জনের মুখোশ পরা ডাকাত দল নেমে গাড়িটির দরজা-জানালা ভাঙচুর করে এবং অস্ত্রের মুখে প্রবাসী নাইমুল ইসলাম, তাঁর বাবা আবুল খায়েরসহ অন্যদের জিম্মি করে। পরে প্রবাস থেকে আনা মূল্যবান মালামাল, একটি হ্যান্ড লাগেজ, দুই ভরি স্বর্ণ, নগদ টাকা ও ২০০ কুয়েতি দিনার নিয়ে যায় ডাকাতেরা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৯ লাখ টাকা। পরে তাঁদের আত্মীয় নুরুল ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
প্রবাসীর বাবা আবুল খায়ের বলেন, ডাকাত দলে ৮-১০ জন ছিল। সবার মুখ ঢাকা ও হাতে ধারালো দেশীয় অস্ত্র ছিল। তারা পিকআপ ভ্যানে করে এসেছিল।
আত্মীয় নুরুল ইসলাম বলেন, ‘চৌদ্দগ্রাম থানা থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরে হবে ঘটনাস্থল। ডাকাতি হওয়ার পর আমি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে প্রায় ৩০ মিনিট পর পুলিশ পৌঁছায়।’
মাইক্রোবাসের চালক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ডাকাতদের পিকআপ ভ্যানটি আমার ডান দিকে অতর্কিত ঢুকে মাইক্রোবাসে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ার উপক্রম হয়। আমি অনেক কষ্টে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ করি। এরপর তারা পিকআপ ভ্যান থেকে নেমে মাইক্রোবাসটির দরজা-জানালা ভেঙে অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে এবং টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়।’
মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। তবে মহাসড়কের সিসি ক্যামেরা থেকে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’
পরিদর্শক গুলজার আলম বলেন, ডাকাতির শিকার প্রবাসী নাইমুল ইসলাম থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে মহাসড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী ডাকাতদের শনাক্তে চেষ্টা করছি।’