রাজধানীর দক্ষিণখানে প্রকাশ্য দিবালোকে এক ফার্মেসিতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাধা দেওয়ায় সুমন কুমার পাল (৪০) নামের এক বিকাশ এজেন্টকে মাথায় আঘাত দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরে এলাকাবাসী এক ডাকাতকে ধরে গণধোলাই দিয়েছে।
আজ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণখানের কাওলা শিয়ালডাঙ্গা এলাকার ভাই ভাই মেডিকেল হল নামের ফার্মেসিতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বিকাশ এজেন্ট সুমনকে অচেতন অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে গণপিটুনির শিকার ডাকাতকে চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতদল পালিয়ে যাওয়ার সময় একজন দেখে ফেলেন। পরে তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে এক ডাকাতকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
নিহত ব্যবসায়ী সুমন কুমার পাল পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দক্ষিণ মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাজধানীর দক্ষিণখানের কাওলা শিয়ালডাঙ্গা এলাকায় বসবাস করতেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও শিয়ালডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সুমন ভাইয়ের দোকানে লুটপাট করে যাওয়ার সময় ওদের (ডাকাতদের) হাতে হাতুড়িসহ বিভিন্ন কিছু দেখেছি। পরে আমি সন্দেহ করেছিলাম, ওরা মনে হয় ড্রয়ার ভেঙে টাকা-পয়সা নিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে একজনকে আমি ডাক দিলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তারপর আরেকজনকে আমি ধরে ফেলি। ধরে ফেলার পর সে ছুটে যাওয়ার জন্য ধস্তাধস্তি করে। একপর্যায়ে আমাকে একটি গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে হাতুড়ি দিয়ে আমাকে আঘাত করে। আমি বাঁচার জন্য কয়েকটি ঘুষি দিলে সে নিচে পড়ে যায়। এরপর ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে এলাকার লোকজন এসে তাঁকে ধরে গণধোলাই দেয়। পরে তাঁকে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শী সাইফুল বলেন, ‘তারপর সুমন ভাইয়ের দোকানে গিয়ে দেখি, তাঁকে মেরে ডাকাতরা টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। ধরা পড়া ডাকাতের কাছ থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। পরে ওই টাকাগুলো পুলিশ নিয়ে যায়।’
সাইফুল বলেন, ‘সুমন ভাই আমাদের এলাকায় ২০ বছর ধরে থাকেন এবং ব্যবসা করেন। ফার্মেসিতে বিকাশের এজেন্ট করেছিলেন।’
এ বিষয়ে দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তারিকুল ইসলাম নাসিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।’
অপর দিকে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সুমন কুমার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন কাজ করছি, পরে জানাব।’
এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, ‘সুমনের মাথার পেছনে আঘাত করা হয়। তারপর তার দোকানে লুটপাট চালানো হয়। যদি ডাকাতির উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হতো, তাহলে ডাকাতি করলেও খুন করার জন্য এভাবে আঘাত করত না।’