কুমিল্লার গৌরীপুরে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪৫) হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বোরকা পরিহিত একজনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে র্যাবের ও পুলিশের পৃথক অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি, মোবাইল ফোন ও বোরকার নেকাব জব্দ করা হয়। আজ বুধবার সকালে পুলিশ ও র্যাবের পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে করা সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, দাউদকান্দি গৌরীপুরে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যাকাণ্ডের পর আসামিদের ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো একটি ব্যাগে করে দেবিদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ এলাকার মাজহারুল ইসলাম সৈকত নামের এক ব্যক্তির কাছে রেখে আসেন। ডিবি পুলিশ সৈকতকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর কাছ থেকে দুটি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, ২৪টি গুলি, সাতটি মোবাইল ফোন, দুটি বোরকার নেকাব ও জিনস প্যান্ট জব্দ করে। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি রাজেস বড়ুয়া বাদী হয়ে সৈকতসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন।
অপর দিকে আজ সকালে র্যাবের কুমিল্লা ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে ঢাকা জেলার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে এ হত্যাকাণ্ডে বোরকা পরিহিত তিনজন হত্যাকারীর একজন মো. দেলোয়ার হোসেন দেলুকে (৩১) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলাসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। তাঁর বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলার চর চারুয়া এলাকায়। পরে তাঁর সহায়তায় তিতাস উপজেলার বড় গাজীপুর এলাকা থেকে মো. সহিদুল ইসলাম নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল রাতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজারসংলগ্ন মসজিদের পাশে একটি দোকানের সামনে তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে (৪৫) বোরকা পরিহিত তিনজন গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব ও পুলিশে তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল শিকদারসহ এই পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখ এবং সাত-আটজন অজ্ঞাতনামা আসামি করে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।