বরগুনার আমতলীতে বিয়েবাড়ি যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন নারী–শিশুসহ ৯ জন। তাঁদের মধ্যে ৭ জনের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায়। তাঁরা সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবুর রহমান সবুজের পরিবারের সদস্য। দুর্ঘটনার খবর শিবচরের ভদ্রাসন গ্রামে পৌঁছানোর পর থেকে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে এলাকা। স্বজন ও প্রতিবেশীরা ভিড় করছেন সবুজের বাড়িতে।
আজ শনিবার (২২ জুন) দুপুরে বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া-হলদিয়া খালের ওপর লোহার ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস পানিতে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় নারী, শিশুসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন মাদারীপুরের শিবচরের সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবুর রহমান সবুজও।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (১৯ জুন) সকালে শিবচর থেকে মাহাবুব এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বরগুনার উদ্দেশে রওনা দেয়। গতকাল শুক্রবার বরপক্ষ এসে বিয়ে করে নিয়ে যায়। আজ দুপুরে তাঁরা মাইক্রোবাসযোগে বউভাতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাহাবুব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি হলদিয়া ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ লোহার ব্রিজ পার হওয়ার সময় ব্রিজটি ভেঙে খালে পড়ে যায়।
এ ঘটনায় ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন মাহাবুবের ভাই সোহেলের স্ত্রী রাইতি (৩০), মাহাবুবের মা ফরিদা বেগম (৪০), মামি মুন্নি বেগম (৪০), তাঁর সন্তান তাহিয়া (৭), তাসদিয়া (১১), আরেক মামি ফাতেমা বেগম (৪০) ও রুমি বেগম (৪০)। এ ছাড়া আমতলীর দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া জহিরুল ইসলামের স্ত্রী জাকিয়া এবং কন্যা রিদি (৫)।
দুলাল মাতুব্বর নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘পুরো গ্রাম শোকে স্তব্ধ। দুই পরিবারের মোট ৯ জন সদস্য মারা গেছে। আমরা খবর পেয়ে মাহাবুবের বাড়িতে এসেছি। ওদের পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। সবাই ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। এখন বাড়িতে কেউ নেই।’
ভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম ব্যাপারী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েই বাড়িতে এসেছি। আসলে এত বড় দুর্ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। এখন তাদের মরদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে বলে খবর পেয়েছি।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা।’