ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রাজাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বলে দাবি করা হয়েছে। ওই গ্রামের রুহুল আমিন ফকির দাবি করেছেন, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে সাজ্জাদ দ্বিতীয়।
সাজ্জাদকে রুহুল আমিনের ছেলে দাবি করার বিষয়টি এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পেরে এই প্রতিবেদক সরাসরি কথা বলতে তাঁর বাড়িতে যান। সেখানে রুহুল আমিনের ছেলে সালমান ফকিরও সাজ্জাদকে তাঁর ভাই বলে দাবি করেন।
সাজ্জাদকে ভাই দাবি করা সালমান ফকির বলেন, ‘বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারের সঙ্গে খুলনায় থাকতেন সাজ্জাদ। সে সময় থেকেই অবৈধপথে তার ভারতে যাতায়াত ছিল। খুলনায় থাকাকালে সে মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়। এতে বিরক্ত হয়ে তার পরিবার গ্রামের বাড়ি চলে আসে। এলাকায় মাঝেমধ্যে আসা-যাওয়া থাকলেও স্থায়ী হতো না সাজ্জাদ। ২০১৭ সালের পর থেকে তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। পরিবারের সঙ্গেও সে যোগাযোগ করেনি।’
সালমান ফকির আরও বলেন, তাঁর মেজ ভাই সাজ্জাদ ২০১৭ সালে রফিকুল ইসলাম নামের এক মোটরসাইকেলচালক হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতে পালিয়ে যান। দেশে থাকা অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হন তিনি। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ নেই।
সাজ্জাদকে ছেলে দাবি করা রুহুল আমিন ফকির বলেন, ‘২০২৪ সালের মার্চ মাসে অবৈধভাবে সাজ্জাদ ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে হোটেলে চাকরি করে। শুনেছি, সে ভারতের কারাগারে আটক আছে। সে কীভাবে ভারতে গেছে সেটা আমাদের জানা নেই।’
মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, ২০১৭ সালে নলছিটির মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলচালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এলাকায় থাকাকালে তিনি ছিনতাই, চুরি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মহিতুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অফিশিয়ালি তাঁর বিষয়ে এখনো কোনো বার্তা পাইনি। কিন্তু পরিবারের তথ্য মতে তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রাজাবাড়িয়া গ্রামে। তিনি যদি রাজাবাড়িয়া গ্রামের রুহুল আমিন ফকিরের ছেলে মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর নামে নলছিটি এবং ঢাকায় হত্যা মামলাসহ ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ আছে।’