ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বরগুনার পাথরঘাটায় টানা চার দিনের বৃষ্টিতে আলুচাষিদের সার ও বীজসহ প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকার বেশির ভাগ চাষি বিভিন্ন মহাজন ও এনজিওর কাছ থেকে লোন নিয়ে আলু চাষ করেন। টানা বৃষ্টিতে তাঁদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে হতাশায় পড়েছেন তাঁরা।
জানা যায়, পাথরঘাটা উপজেলার ১৪টি খেতে আলু সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। এ ছাড়া উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে আরও ২৫টির মতো আলুর খেত রয়েছে। চলতি মৌসুমে আলুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময় এলে এই এলাকার অধিকাংশ চাষি খেতে আলুর বীজ বপন করে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে আলুর অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে গেছে।
সরেজমিন কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আলুর বীজ বপন করা খেত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। ফলে সব বীজ নষ্ট হয়ে যাবে বলে হতাশায় রয়েছেন চাষিরা।
আলু চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় একাধিক ডিলার জানান, এই মৌসুমে স্থানীয় ২০০ চাষির চাহিদা অনুযায়ী ৩৯৬ টন আলুর বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল। এরই মধ্যে চাষিরা বীজ নিয়ে গেছেন।
কামায়হাট এলাকার স্থানীয় মনির ডিলার বলেন, `আমি ২৫৫ টন আলু বিক্রি করেছি। এরই মধ্যে ৫০ শতাংশ আলুর বীজ চাষিরা বপন করে ফেলেছেন। বৃষ্টির কারণে বপন করা সব বীজের অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে গ্রেডিং অনুযায়ী চাষিদের প্রায় ৮০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে।
চাষি নেকবার ফকির বলেন, `এক একর জমিতে ১ টন আলুর বীজ বপন করেছিলাম। যার বাজারমূল্য ৪০ হাজার টাকা। এ ছাড়া আলুর ফলন ভালো পেতে নিয়ম অনুযায়ী সমপরিমাণ টাকার সার কীটনাশক জমিতে দিতে দিয়েছি। যার পুরোটাই লোকসান হয়েছে।
একাধিক চাষি জানান, তাঁরা এনজিও থেকে লোন নিয়ে প্রতিবছর আলু চাষ করেন। উৎপাদিত আলু বিক্রি করে এনজিওর লোন পরিশোধ করা হয়। কিন্তু এবার অঙ্কুরেই আলুর বীজ নষ্ট হওয়ায় তাঁরা হতাশায় পড়েছেন।
পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় খেতে পানি জমে বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। চাষিরা যাতে তাঁদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেন, সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।