মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের মুলাদীতে চারগুণ বেশি সময়েও শেষ হয়নি ভুয়াই সেতুর নির্মাণকাজ। ২০২২ সালের মে মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে অর্থাৎ ওই বছরেরই নভেম্বরে সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিনেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পাহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সফিপুর ইউনিয়নে ভুয়াই সেতুর জন্য ৮৯ লাখ ৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের মে মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের জন্য ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তৎকালীন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মাইনুল আহসান সবুজ সেতুর কাজ পান।
স্থানীয়রা জানায়, কার্যাদেশ অনুযায়ী প্রায় ৮০ ফুট প্রশস্ত খালের ওপর ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার ৫০ ফুটের কিছুটা কম দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করেন। ফলে সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০ ফুট ফাঁকা রয়েছে। ২০২৩ সালে ঢাকা থেকে প্রকৌশলী এসে সেতু পরিদর্শন করে সংযোগ সড়কের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। কিন্তু সেতুর নির্মাণকাজ শেষ কিংবা সংযোগ সড়ক করেননি ঠিকাদার। গত তিন মাস ধরে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
ভুয়াই বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন বলেন, বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা না করেই ঠিকাদার ২০২২ সালের মে মাস কাজ শুরু করেন। ওই সময় থেকে স্থানীয় লোকজন একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে। ঠিকাদার সেতুর পিলার নির্মাণ করে দীর্ঘদিন কাজ ফেলে রাখেন। পরে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা দপ্তরে কাছে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে সেতুর পাটাতন ঢালাই দেন ঠিকাদার। কিন্তু সেতুর দুই পাশে ৩০-৪০ ফুট করে ফাঁকা রয়েছে। ওই জায়গা মাটি ভরাট না করায় সেতু দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না।
সফিপুর ইউনিয়নের চরপদ্মা গ্রামের বাসিন্দা মো. সুমন ঘরামি বলেন, এই সেতু দিয়ে সফিপুর ইউনিয়নের পূর্ব চরপদ্মা, উত্তর চরপদ্মা, পাতারচর, ছোট পাতারচর লক্ষ্মীপুর, চিতলীয়া, বালিয়াতলী ও উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের অন্তত ৪০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এ ছাড়া ভুয়াই বাজার, পূর্ব চরপদ্মা বাজারের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে এই সেতু ব্যবহার করতে হয়। সেতুর কাজের শুরুর পর দুই বছরের বেশি সময় ধরে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হানিফ শিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলনে বিধিনিষেধ থাকায় বালু না পাওয়ায় সেতুর সংযোগ সড়ক করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুম শেষে সেতুর দুই পাশে মাটি ও বালু ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।