ঝালকাঠি সংবাদদাতা
রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ভবনে আগুনের ঘটনায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) শিক্ষার্থী তুষার হালদার (২৩) মারা গেছেন। তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায়। তুষার ডিআইইউ থেকে সাংবাদিকতা বিভাগে সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করেন। সমাবর্তনের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালগাছিয়া গ্রামের দীনেশ হাওলাদারের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন বলেন, ‘সকালে আমি তাদের বাড়িতে গেছিলাম। দীনেশ হাওলাদারের একমাত্র ছেলে তুষার। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। এখনো তুষারের মৃত্যুর খবর তার মা ও বোন জানে না। শুধু বাবা জানে। তুষারের লাশ নিয়ে বাড়ির পথে।’
জানা গেছে, গতকাল রাতে বাংলামোটরে অবস্থিত তাঁর কর্মস্থল থেকে বের হয়ে বেইলি রোডে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের সঙ্গে খাবার খেতে গিয়েছিলেন। ঠিক আগুন লাগার আগমুহূর্তে তাঁরা ওই রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেন। আগুন লাগায় তাঁরা আর বের হতে পারেননি। সেখানেই তুষার প্রাণ হারান। তুষার হালদার স্টার টেক নামে একটি আইটি কোম্পানিতে ভিডিও জার্নালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে দ্যা রিপোর্ট মাল্টিমিডিয়ায় কাজ করতেন।
তুষারের বাবা দীনেশ হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে দুজনে কাজ শেষ করে একসঙ্গে বাসায় যাই। আমি বারডেম হসপিটালে কাজ করি, আর তুষার স্টার টেক নামে একটা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। গতকাল রাত ৮টার দিকে আমি তুষারকে কল দিয়ে বাসায় যাওয়ার কথা বললে ও আমাকে জানায় রাতে অফিসে খাবারের আয়োজন থাকবে।
‘আগামীকাল ১ মার্চ (আজ) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আছে, তাই যেতে দেরি হবে। পরে আমি বাসায় গিয়ে আবার ওরে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কল দিলে নম্বর বন্ধ পাই। মনে করছি, অফিসে আছে কাজ করতাছে। এরপর সকালে আমি ডিউটিতে হসপিটালে চলে আসি। ওর নম্বরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কল দিছিলাম। তখন কল ডুকছে, কিন্তু রিসিভ করে নাই। তখন আমি মনে করছি অনেক রাতে ঘুমাইছে তাই হয় তো ঘুমে আছে।’
তুষারের বাবা আরও বলেন, ‘সকাল পৌনে ৭টার দিকে আমার নম্বরে একজনে কল দেন। তিনি সম্ভবত একজন এসআই হবেন। আমাকে বলে আপনি কি তুষারের বাবা? আপনি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে চলে আসেন। আপনার ছেলের লাশ এখানে এসে নিয়ে যান। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ গ্রহণ করি।’