বরগুনার তালতলীতে তেতুলবাড়িয়া এলাকায় জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৮টি গ্রাম। সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় রান্না বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক শ পরিবারের। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পায়রা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে তেতুলবাড়ী এলাকার পাউবোর বেড়িবাঁধের ১০০ মিটার এলাকা ভেঙে গেলে কমপক্ষে ৫০টি মাছের ঘের ও কয়েক শ বাড়ি প্লাবিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অস্থায়ী রিং বেড়িবাঁধ অমাবস্যার জোয়ারের প্রবল স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে যায়। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়ে বেড়িবাঁধের ওপর অবস্থান নিয়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে একাধিক স্থাপনা ও বসত ঘর ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিন-চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা।
সরেজমিনে বেলা দুইটার দিকে গিয়ে দেখা গেছে, ওই এলাকায় পাউবোর ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তেতুলবাড়িয়া, নলবুনিয়া, আগাপাড়া, জয়ালভাংগা, ও বড় আংকুজানপাড়াসহ প্রায় ৮টি গ্রামে পানি থইথই করছে। এইর মধ্যে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ণ কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছেন। তলিয়ে গেছে কয়েকটি চিংড়ি ঘের। ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত। প্লাবিত হওয়া এলাকার মানুষের রান্নাবান্না হয়নি আজ। এই ভাঙা বাঁধ এভাবে থাকলে দিনে-রাতে দুইবার পানিতে তলিয়ে থাকবে আট গ্রাম। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এসব গ্রামের লোকজন।
তেতুলবাড়িয়া গ্রামের রানি বেগম বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আমার বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। এখন বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছি। আর যাওয়ার জায়গা নেই। এই পায়রা নদীর পাড়েই থাকি সেই জন্মের শুরু থেকে। তবে এখনো স্থায়ী বেড়িবাঁধ দেখিনি।’
বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত আলমগীর আক্ষেপ নিয়ে জানান, তাঁর ঘের ভেসে যাওয়ায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তা ছাড়া প্রতিবছরই বাঁধ ভেঙে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। দ্রুত সংস্কারের দাবিও জানান তিনি। স্থানীয় রফিক মিয়া বলেন, ‘রিং বেড়িবাঁধ হওয়ার জোয়ারের তোড়ে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সে জন্যই আজ হঠাৎ অমাবস্যার জোয়ারের তোড়ে বাঁধটি ধসে গিয়েছে।’
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সাদিক তানভীর বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত সংস্কারের জন্য বালির জিও ব্যাগ পাঠানো হচ্ছে পানির তোড় সামলাতে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।’