নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ছেলে এটিএম খালেকুজ্জামান কুশলের (৪১) মরদেহ ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর দুই ভগ্নিপতি ইমতিয়াজ আহমেদ ও জিয়াউল হকের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে তাঁর দুই ভগ্নিপতি বরিশালে পৌঁছে খালেকুজ্জামানের পরিচয় নিশ্চিত করেন। তবে রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকার বাসিন্দার কীভাবে মৃত্যু হলো এবং বরিশালের দুর্গম এলাকা মুলাদীর একটি নদীতে মরদেহ ভেসে আসার কোনো রহস্য এখনো উদ্ঘাটন হয়নি।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালেক মোবাইল ফোনে কয়েক দিন কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, সেই কললিস্ট যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
এদিকে আজ মঙ্গলবার কুশলের মরদেহ ময়নাতদন্ত করেন বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কেফায়েতুল হায়দার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মরদেহের শরীরে কোনো জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পেয়ে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’
প্রসঙ্গত গতকাল সোমবার বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুরের জয়ন্তী নদীতে অর্ধগলিত অবস্থায় খালেকুজ্জামান কুশলের ভাসমান মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পরে বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর দুই ভগ্নিপতি হাসপাতাল মর্গে মরদেহ শনাক্ত করেন।
একজন ভগ্নিপতি ইমতিয়াজ আহমেদ এদিন শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে বসে গণমাধ্যমকে জানান, খালেকুজ্জামান মাদকাসক্ত এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ সূত্রাপুরে নিজেদের বাসায় বড় ভাই এটিএম কামরুজ্জামান কবিরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন খালেক। ওই ঘটনায় খালেককে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।
ইমতিয়াজ দাবি করেন, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর সাধারণ ক্ষমায় কয়েক বছর আগে তিনি মুক্তি পান। তবে আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরেননি তিনি। মাদকাসক্ত হওয়ায় তাঁর বিয়ে-সংসারও হয়নি। মা ছাড়া পরিবারের অন্য কারও সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। অনেক দিন নিরুদ্দেশ থেকে মাঝে মাঝে মায়ের কাছে গিয়ে টাকা নিয়ে আসতেন। প্রয়াত এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী সূত্রাপুরে দেবেন্দ্র দাস লেনের বাসায় মেজো ছেলের সঙ্গে থাকতেন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪ অক্টোবর ঢাকার বাসায় মায়ের কাছে গিয়েছিলেন খালেক। তিনি খুলনা যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। ২৬ অক্টোবর সর্বশেষ মায়ের সঙ্গে কথা হলেও অবস্থানের কথা জানাননি। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ ছিল।