নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল নগরীর ওপর দিয়ে যাওয়া মহাসড়কের অংশ দখল করে নির্মিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগম পার্ক’ অবশেষে উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি ভেঙে ফেলতে আজ বৃহস্পতিবার দরপত্র আহ্বান করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ তিন বছর আগে তাঁর মায়ের নামে পার্কটি নির্মাণ করেন। নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বাইলেনের জায়গায় এটি নির্মাণে ব্যয় হয় ১৪ কোটি টাকা। পার্কটির ফলে ওই এলাকায় যেমন যানজট দেখা দেয়, তেমনি ঘটে দুর্ঘটনাও। কিন্তু সাদিকের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। এ নিয়ে ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘সড়ক দখল করে পার্ক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
সাদিকের পর তাঁর চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র নির্বাচিত হয়ে পার্কটি উচ্ছেদের উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিসিসি ও সওজের মধ্যে মতপার্থক্যের জেরে কাজ আর বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট এলাকাবাসী পার্কটিতে ব্যাপক ভাঙচুর করে মালপত্র লুট করে। এরপর আর পার্কটি সচল হয়নি।
বরিশাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু জানান, জাতীয় মহাসড়ক দখল করে পার্কটি করার সময় তাঁরা আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু তখনকার মেয়র সাদিক তা শোনেননি। যে কারণে মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। রাস্তা দখল করা হলেও সওজের তৎকালীন কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং গুঞ্জন ওঠে মেয়র সাদিকের বদৌলতে সওজের কোনো কোনো কর্মকর্তা বরিশাল ক্লাবের সদস্য হন। জাতীয় সড়ক দখলের এমন একটা অন্যায়ের দায় সওজ এড়াতে পারে না।
যোগাযোগ করা হলে সওজ বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমূল ইসলাম বলেন, তাঁদের আওতাধীন ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের প্রায় ১১ কিলোমিটার অংশ বরিশাল নগরের মধ্য দিয়ে গেছে। ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত দুই লেনের এ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। এ প্রকল্পে নগরীর অংশও রয়েছে। সেই ব্যস্ততম মহাসড়কের অর্ধেক দখল করে পার্ক নির্মিত হয়েছিল। সেটি অপসারণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের পর দ্রুত পার্কটি অপসারণের মাধ্যমে রাস্তা সচল করা হবে।