বরিশালের গৌরনদীতে যুবদলের কেন্দ্রীয় এক নেতা বসে চা পান করায় দুই দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। গতকাল শনিবার তালা দেওয়া হলেও আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত দোকান দুটি খোলা হয়নি।
মাহিলাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মো. কামরুজ্জামান দুলাল ২৪ জুনের তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে গত শুক্রবার প্রস্তুতি সভায় যোগদান করতে বরিশালে আসেন। সভা শেষে ঢাকা ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গৌরনদীর মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান।
এ সময় বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন নিজ বাড়িতে না গিয়ে নিকটাত্মীয় মাহিলাড়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেনের কাঁচামালের আড়তে বসে চা পান করেন। ১০ মিনিট পর তিনি চলে যান। এ সময় পাশের দোকানের তাঁর এক বন্ধুর (প্রয়াত) ছোট ভাইকে ডেকে কুশল বিনিময় করেন।
মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের আত্মীয় কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মো. কামরুজ্জামান দুলাল বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে খোঁজখবর নিতে আমার আড়তে আসেন। এ কারণে গতকাল শনিবার সকালে গৌরনদীর মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর কবিরাজ (৬০) ও সহসভাপতি মো. জালাল সরদারের (৫৫) নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী আমার দোকানে এসে কর্মচারীদের বের করে তালা ঝুলিয়ে দেন।’
মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডের ধানবীজ ও কীটনাশক ব্যবসায়ী এবং মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রহিম সরদার বলেন, ‘কামরুজ্জামান দুলাল ভাই আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। ভাই মারা যাওয়ার পর পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। আমি কেন আমার দোকান রেখে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললাম, এ জন্য মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ কয়েকজন এসে আমাকে গালাগাল করে দোকানে তালা দিয়ে দেন।’
যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মো. কামরুজ্জামান দুলাল বলেন, ‘মাহিলাড়া আমার জন্মভূমি। ওখানে আমি লেখাপড়া করে মানুষ হয়েছি। তাই বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে আত্মীয়ের দোকানে বসে চা খেয়েছি। এই অপরাধে দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এই জুলুম থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচানো কিংবা দেখার কেউ নেই।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর কবিরাজ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘তাদের দোকানে অবৈধ মালামাল রাখে এবং লোকজন জড়ো করে সমাজবিরোধী কাজ করে। এই অভিযোগে দোকান দুটি বন্ধ করা হয়েছে। আমি একা নই, আরও নেতারা মিলেই দোকান বন্ধ করা হয়েছে।’
অবৈধ মালামাল রাখা ও সমাজবিরোধী কাজ করার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে আলমগীর কবিরাজ ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।