ঝালকাঠি প্রতিনিধি
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সাড়ে ১৫ বছর দেশটি খুন, ক্রসফায়ার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ভরে গেছে। দুজন সাবেক আমিরসহ জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে কেউ মানুষের ওপর জুলুম করতে পারবে না।
আজ সোমবার সকালে ঝালকাঠি জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে শহরের ইশারা কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘ইউনিয়ন দায়িত্বশীল সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান এ সব কথা বলেন।
আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে অফিস আদালত কোর্ট-কাচারি কোথাও গিয়ে আপনি লাঞ্ছিত হবেন না। কোনো মানুষ হয়রানির শিকার হবেন না। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য ন্যায্য মূল্য পাবেন। শ্রমিক তার ঘামের ন্যায্য মূল্য পাবেন। বিচারক তার আসনে বসে মানুষের ওপর জুলুম করবেন না। যে দেশের শাসকেরা অন্যায় ও জুলুমে দেশটাকে পূর্ণ করে দেয় এবং জনগণ চুপ করে সহ্য করে, সেই সমাজে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি নেমে আসে। তবে, যদি জনগণ শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, তখন আল্লাহর সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছে যায়।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, সাড়ে ১৫ বছর ধরে এই দেশের জনগণ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। তারা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, আর পেশাগত দায়িত্ব পালনেও অনেকে সুযোগ পায়নি। দেশটি খুন, ক্রসফায়ার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ভরে গেছে। বহু মায়ের বুক খালি করা হয়েছে, বাবার সামনে থেকে তার সন্তানকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের ১১ জন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে ঘটানো জুলুমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুজন সাবেক আমিরসহ ১১ জন নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ ফাঁসির দণ্ড পেয়েছেন, কাউকে আবার কারাগারে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তবে জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে কেউ মানুষের ওপর জুলুম করতে পারবে না
তিনি আরও বলেন, যাকে কোরআনের পাখি বলা হতো সেই দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকেও তারা জেলের ভেতরে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তিনি ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে পৃথিবী জুড়ে কল্যাণের বার্তা পৌঁছানোর জন্য কাজ করছিলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় তাহলে তারা এসব কাজ বাস্তবায়ন করবেন।
জেলা জামায়াত আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী। সম্মেলন শেষে জামায়াতের আমির ঝালকাঠি নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদ্রাসার মাঠে এক সুধী সমাবেশে অংশ নেন। মতবিনিময় শেষে তিনি ছারছিনা দরবার শরীফ, পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে ঝালকাঠি জেলা ত্যাগ করবেন বলে জানা যায়।