মোটরসাইকেল মহড়া করে জনভোগান্তি সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে বরিশালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ শনিবার নগর বিএনপির শীর্ষ দুই নেতাকে বরণ করতে এ মহড়া করা হয়। ফলে মহড়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, প্রটোকল দিতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এই মহড়া দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী।
এর আগে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যানবাহনের শোভাযাত্রা পরিহারে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। ১১ জানুয়ারি এই অভিযোগে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে শোকজ করা হয়। এমনকি দলের চেয়ারপারসনের লন্ডন যাত্রায় রাজধানীতে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে আজ দুপুরে সড়কপথে বরিশালে আসেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। তাঁদের বরণ করতে নথুল্লাবাদের শিক্ষা বোর্ডসংলগ্ন এলাকায় শত শত নেতা-কর্মী একত্র হন। পরে মোটরসাইকেল মহড়ায় সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে যান তাঁরা। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এ মহড়ায় নগরী জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব ঢাকা গিয়েছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের প্রটোকল দরকার। তাই অতি উৎসাহী নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল মহড়া দিয়েছে।’
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে নগর আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব আসায় নথুল্লাবাদে আমরা দুই নেতাকে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বরণ করে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে এসেছি। তাঁদের আমরা রিসিভ করে দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশেও করেছি। এই মহড়া হঠাৎ করা হয়েছে। তাতে যানজট হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘নগর বিএনপিকে বিব্রত করতে একটা মহল ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের তাতে থামানো যাবে না।’
তবে নগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, ‘নগরীতে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব। এটা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী অপরাধ। জনগণ যে মহড়ার কারণে যানজটে কষ্ট পেয়েছে, তা তিনি দলের হাইকমান্ডকে অবহিত করেছেন।’ এ বিষয়ে কথা বলতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মালিককে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বলেন, ‘মোটর শোভাযাত্রা দলীয়ভাবে নিষেধ আছে। নিষেধ সত্ত্বেও তারা কেন এটা করল, তা জানতে হবে।’
কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি, তারা একটি শোভাযাত্রা করেছে। কিন্তু এতে যদি জনগণের ভোগান্তি হয়, তাহলে তা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী।’
তিনি জানতে চান, ‘রাজনৈতিক দল কি মিটিং-মিছিল করবে না? খোকন ভাই নোয়াখালীতে যেটা করেছে তাতে তীব্র যানজট হয়েছে। জিয়া-ফারুক যেটা করেছে তাতে এমন দুর্ভোগ হয়েছে কি না তা দেখতে হবে।’