পিরোজপুর প্রতিনিধি
আওয়ামী সমর্থক অপবাদ দিয়ে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় কামাল হোসেন চৌকিদার (৪৬) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার উপজেলার চড়কগাছিয়া গ্রামের সাপলেজা মাছ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল রাতে বাড়িতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আজ বুধবার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত কামাল হোসেন ওই গ্রামের মৃত মো. রুস্তুম হাওলাদারের ছেলে এবং সৌদিপ্রবাসী বলে জানা গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আরিফুজ্জামান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
জানা যায়, ২৩ নভেম্বর পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের চড়কগাছিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে কামাল হোসেনকে তুলে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় ২৫ নভেম্বর তিনি (কামাল হোসেন) নিজে বাদী হয়ে স্থানীয় সেনাক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
মঠবাড়িয়া সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর মেহেদী হাসান লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ঘটনায় হামলাকারীদের ডেকে এনে মীমাংসা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাকে।’
নিহতের বোন ফরিদা বেগম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ করার অপবাদ দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ২৩ নভেম্বর আমার ভাইকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে সাপলেজা মাছ বাজারে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে আমার ভাই নিজেই বাদী হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কর্মী–সমর্থক শাহিন শরীফ, আলামিন, কামরুল, মনির হোসেন, মো. রুবেলের বিরুদ্ধে সেনাক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।’ হামলার সময় ৯৯৯ ফোন দিয়েও কোনো প্রকার সাড়া পাননি বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাপলেজা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হয়রানি করার জন্য হাইব্রিড বিএনপি উঠে-পড়ে লেগেছে।’
জানতে চাইলে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’