পটুয়াখালীর বাউফলে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। বিশেষ করে বগা, কনকদিয়া, বাউফল এলাকায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ শতাধিক পরিবারের সদস্যরা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না।
এসব এলাকায় কারিগরদের হাতের ছোঁয়ায় গড়ে উঠছে হাঁড়ি-পাতিল, প্রদীপ, কলস, মুখোশ, শোপিস, ফুলদানি, খেলনা, পানির মগসহ মাটির বিভিন্ন তৈজসপত্র। এসব পণ্যের বাহারি নকশা আর মাটির নিজস্ব গন্ধ নববর্ষের আমেজ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
মৃৎশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা জানান, স্থানীয় বাজার ছাড়াও তাঁদের পণ্য জেলা শহর, এমনকি ঢাকার বৈশাখী মেলাগুলোতে যাবে। অনেক ব্যবসায়ী পণ্য কিনে নিচ্ছেন যেন নববর্ষের প্রথম দিন দোকানে শোভা বাড়াতে পারেন।
মাটির জিনিস তৈরি করা বরুণ পাল বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ আমাদের অন্যতম বড় মৌসুম। বছরের প্রায় অর্ধেক আয়ের উৎস এই সময়। অর্ডারের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। শ্রমিকেরাও বাড়তি সময় কাজ করছেন।’
মৃৎশিল্পের আরেক কারখানার মালিক শংকর পাল বলেন, ‘শুধু স্থানীয় বাজার নয়, আশপাশের উপজেলা, এমনকি জেলা শহর থেকেও অর্ডার পাচ্ছি। তবে জ্বালানি ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা চিন্তায় আছি।’
মৃৎশিল্পী শ্যামল পাল জানান, প্লাস্টিক আর স্টিলের ভিড়ে তাঁদের এই মাটির পণ্য এখনো টিকে আছে শুধু মানুষের ভালোবাসার কারণে। বৈশাখ এলে সেই ভালোবাসা আরও বেড়ে যায়।
শিশুদের খেলনার পাশাপাশি কিছু কারখানায় নারী শ্রমিকেরা তৈরি করছেন মসলা রাখার পাত্র, হাঁড়ি এবং দেয়ালে ঝোলানো শোপিস। নারী শ্রমিক পূজা রানী বলেন, ‘এই সময়টাতে আমরা পুরুষদের পাশাপাশি কাজ করি। উৎসবের আগে একটু বাড়তি আয় হয়। মাটির কাজ কষ্টের, কিন্তু আমরা এটাকে ভালোবাসি।’