পিরোজপুরের নেছারাবাদে প্রাইভেট পড়ার টাকা সময়মতো দিতে না পারায় ছাত্রের মোবাইল ফোন আটকে রেখে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেছেন এক শিক্ষক। গত শনিবার ওই শিক্ষক নিজ বাসায় কোচিং সেন্টারে বসে তাকে গালাগাল করেন। এ সময় এক শিক্ষার্থী ওই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে। গতকাল সোমবার রাতে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনা জানাজানি হয়।
ওই শিক্ষক উপজেলার মধ্য করফা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি ওই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং করান। সেখানে স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বেশ কিছু শিক্ষার্থী তাঁর কাছে প্রাইভেট পড়ে। প্রাইভেট পড়ার টাকা দিতে না পারা ওই শিক্ষার্থী গুয়ারেখা ইউনিয়নের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা অতি দরিদ্র কৃষক।
এ বিষয়ে শিক্ষক আহাম্মাদুল কবির বলেন, ‘তার কাছে দুই মাসের প্রাইভেটের এক হাজার টাকা পাই। অসংখ্যবার টাকা চেয়েও পাচ্ছি না। তাই রাগের বশে গালাগাল করেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভাই, ভালো ব্যবহার করে টাকা চাইলে ব্যাচের কেউ সঠিক সময়ে টাকা দিতে চায় না। তাই বাধ্য হয়ে তার মোবাইল ফোন আটকে রেখে গালাগাল করেছি।’
ওই শিক্ষার্থী বলে, ‘স্যারের কাছে মাসিক পাঁচ শ টাকার বিনিময়ে প্রাইভেট পড়ি। আমাদের আর্থিক সমস্যা আছে। কয়েক মাস ঠিক সময়ে টাকা দিয়েছি। তাই লেখাপড়ার ফাঁকে আমি গ্রামে কাজ করে নিজের খরচ জোগাই। বর্তমানে কাজ নেই। তাই স্যারকে ঠিকমতো টাকা দিতে পারছি না। স্যারকে আমার সমস্যার কথা বলেছি। স্যার তারপরও সেদিন সবার সামনে আমাকে বকেছে।’
সরকারি স্বরূপকাঠি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘প্রাইভেট পড়ার টাকার জন্য একজন শিক্ষক গালাগাল করতে পারেন না। এটা শিক্ষকজাতির জন্য লজ্জাজনক।’
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার মিস্ত্রী বলেন, ‘ভিডিওটি আমি দেখেছি। প্রাইভেটের পাওনা টাকা আদায়ে একজন ছাত্রকে এভাবে গালাগাল করা মোটেও উচিত হয়নি ওই শিক্ষকের। তাঁর ব্যবহার আমাদের গোটা শিক্ষকজাতির জন্য অপমানের বলে আমি মনে করি।’
এ ব্যাপারে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে খবর নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।